সফর: গভীর রাতে নিজের লোকসভা কেন্দ্র বারাণসী ঘুরে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে এই ‘অভিযানে’ সঙ্গী ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ছবি: পিটিআই।
লোকসভা ভোটে নিজের জন্য আসন খুঁজছেন নরেন্দ্র মোদী!
সরকারের চার বছর পূর্তির দিন ওড়িশায় মোদীর জনসভার সময় থেকেই জল্পনা চলছে, সে রাজ্যের পুরী কেন্দ্র থেকে পরের লোকসভা ভোট লড়তে পারেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সে জল্পনায় জল ঢেলে খোদ অমিত শাহের দাবি, ‘‘প্রধানমন্ত্রী অন্য রাজ্যেও জনসভা করেন। তার অর্থ এই নয়, সব জায়গা থেকে ভোটে লড়বেন।’’ কিন্তু এই বক্তব্যের পরেও মোদীর আসন বদলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিজেপিরই একাংশ। বরং ঘরোয়া মহলে কয়েক জন বলছেন, বারাণসী কেন্দ্র রেখেও অন্য কোনও আসন থেকে লড়তেই পারেন প্রধানমন্ত্রী। ঠিক যেমন গত লোকসভা নির্বাচনে গুজরাতের বডোদরার পাশাপাশি বারাণসীতেও লড়েছিলেন।
কংগ্রেসের গুজরাতের নেতা শক্তিসিন গাহিল বলছেন, মোদী যখনই ভয় পান, তখনই আসন বদল করেন। গুজরাতেও প্রথমে রাজকোট থেকে লড়েছিলেন। পরে লড়েন মণিনগর থেকে। লোকসভার সময় মণিনগর থেকে একশো কিলোমিটার দূরে বডোদরায় চলে যান। তাতেও স্বস্তি না থাকায় উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকেও দাঁড়িয়ে যান। বিজেপির ওড়িশার নেতা ও কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান আবার মোদীর বিষয়টি অস্বীকার না করে বলেন, ‘‘দলের সংসদীয় বোর্ডই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে জগন্নাথ ও পুরীর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আস্থা রয়েছে।’’
প্রশ্ন হল, অন্য কোনও আসন খোঁজার প্রয়োজন হচ্ছে কেন? বারাণসীতে ফের জিতে আসা নিয়ে কি মোদী নিশ্চিত নন?
বিজেপির এক নেতা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী ওড়িশা থেকে লড়বেন কি না, তা জানা নেই। তবে গত লোকসভায় গোবলয়ের রাজ্যগুলিতে সর্বাধিক ভোট পেয়েছে বিজেপি। তুলনায় পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, অন্ধ্র ও তেলঙ্গানার মতো রাজ্যের ১০৫টি লোকসভা আসনে মাত্র ৬টি আসন পেয়েছিল। ফলে এই রাজ্যগুলিতে এ বারে বাড়তি জোর দিচ্ছে দল। প্রধানমন্ত্রী এর কোনওটায় লড়লে অন্য রাজ্যের আসন হ্রাস অনেকটা ভরাট করা যাবে।
এরই মধ্যে গত কাল রাষ্ট্রপতি মনোনীত চার রাজ্যসভার সাংসদের মধ্যে দু’জনের যোগ রয়েছে ওড়িশায়। এর পিছনে যেমন মোদীর লোকসভার রাজনৈতিক অঙ্ক দেখছেন অনেকে, তেমনই রাজ্যসভায় ডেপুটি চেয়ারম্যান ভোটের আগে নবীন পট্টনায়ককে কাছে টানার কৌশল হিসেবেও দেখা হচ্ছে। সোনাল মানসিংহ ও রঘুনাথ মহাপাত্রকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন নবীন।
তবে বিজেপির এক শীর্ষ নেতা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে বারাণসীকে গুরুত্ব দিচ্ছেন, ঘন ঘন যাচ্ছেন, প্রকল্প উদ্বোধন করছেন, তার পর কেন সে আসন ছাড়তে যাবেন? সম্প্রতি নীতীশ কুমার থেকে প্রিয়ঙ্কা গাঁধীরও বারাণসীতে ভোটে লড়ার জল্পনা ছড়িয়েছে। তবে কংগ্রেস বলছে, বিরোধীরা একজোট হলে বারাণসীতে মোদীর হার অনিবার্য। সেই আশঙ্কায় নতুন ঘাঁটি খুঁজছেন। আর পুরীতে দাঁড়ালে হিন্দুত্বের তাসও খেলতে পারবেন মোদী।