— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলির তালিকায় থাকা প্রথম ২০ শহরের মধ্যে ১১টিই ভারতের! ‘আইকিউ এয়ার’ নামে সুইডেনের এক সংস্থার ২০২৪ সালের বাতাসের গুণমান সংক্রান্ত রিপোর্টে উঠে এল এমনই তথ্য।
তালিকার শীর্ষে রয়েছে অসম-মেঘালয় সীমানার বিরনিহাট (বাতাসের গুণমান সূচক বা একিউআই ১২৮.২)। একটুর জন্য রাজধানী দিল্লিকে টক্কর দিয়ে প্রথম স্থান দখল করে নিয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের এই শহর। প্রথম ২০-তে থাকা ভারতের বাকি ১০টি শহর হল যথাক্রমে দিল্লি, মুল্লানপুর, ফরিদাবাদ, লোনি, নয়াদিল্লি, গুরুগ্রাম, গঙ্গানগর, গ্রেটার নয়ডা, ভিওয়াদি এবং মুজফ্ফরনগর। কলকাতার স্থান ১৮৩ নম্বরে! সেখানে বার্ষিক গড় একিউআই ৪৫.৬।
সুইস সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানী শহর দিল্লি। অন্য দিকে, ২০২৪ সালে বিশ্বের পঞ্চম সর্বাধিক দূষিত দেশ হিসাবে জায়গা করে নিয়েছে ভারত, যা ২০২৩ সালে তৃতীয় স্থানে ছিল। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ভারতে পিএম ২.৫-র গড় ঘনত্ব প্রতি ঘনমিটারে ৫০.৬ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র বাতাসের গুণমান সংক্রান্ত নির্দেশিকা অনুযায়ী স্বাভাবিকের তুলনায় বহু গুণ বেশি। হু-র বায়ুদূষণের মাপকাঠি অনুযায়ী ভারতের প্রায় কোনও শহরের বাতাসের গুণমানই স্বস্তিদায়ক নয়। তবে রিপোর্ট বলছে, ২০২৩ সালের তুলনায় ভারতের বাতাসে ভাসমান দূষণ সৃষ্টিকারী কণার পরিমাণ আগের চেয়ে সাত শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তার পরেও দূষণের চিত্রটা বিশেষ বদলায়নি। ধারাবাহিক ভাবে দূষণের উচ্চমাত্রা বজায় রেখেছে দিল্লি, সেখানে পিএম ২.৫-র বার্ষিক গড় ঘনত্ব প্রতি ঘনমিটারে ৯১.৬ মাইক্রোগ্রাম।
ভারতের ৩৫ শতাংশ শহরেই পিএম ২.৫-র বার্ষিক গড় ঘনত্ব হু-র নির্ধারিত নিরাপদ সীমার থেকে ১০ গুণ বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। এর মধ্যে সব চেয়ে খারাপ অবস্থা উত্তর ভারতের। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ছাড়াও আরও ছয় শহর রয়েছে সুইস সংস্থার তালিকায়। এগুলি হল যথাক্রমে, দুর্গাপুর, আসানসোল, ব্যারাকপুর, হাওড়া, শিলিগু়ড়ি এবং হলদিয়া।
উল্লেখ্য, হু-র বায়ুর গুণমানের মাপকাঠি অনুযায়ী প্রতি ঘনমিটার বাতাসে দূষণের মাত্রা থাকা উচিত ৫ মাইক্রোগ্রাম। পিএম ২.৫ হল ২.৫ মাইক্রনের চেয়ে ছোট ক্ষুদ্র বায়ুদূষণকারী কণা, যা ফুসফুস মারফত রক্তজালকেও প্রবেশ করতে পারে। এর ফলে শ্বাসকষ্ট, হৃদ্রোগ এমনকি ক্যানসারও হতে পারে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। পিএম ২.৫-র উৎসগুলির মধ্যে রয়েছে যানবাহন বা শিল্পাঞ্চল থেকে নির্গত দূষিত ধোঁয়া, নির্মাণকাজ, কাঠ কিংবা ফসলের গোড়া পোড়ানো।