হোমকাণ্ডে বিস্ফোরক সিবিআই

১১ কিশোরীকে খুন করে পুঁতে দেওয়ার অভিযোগ

টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেস (টিস)-এর তরফে রাজ্যের জুভেনাইল হোমগুলিতে গত বছর বিশেষ অডিট করা হয়। সেই অডিট রিপোর্টেই বেসরকারি সংস্থা পরিচালিত মুজফ্ফরপুরের এই হোমে আবাসিকদের উপরে যৌন নির্যাতনের বিষয়টি সামনে আসে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুজফ্ফরপুর শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৯ ০২:৫১
Share:

ফাইল চিত্র।

মুজফ্‌ফরপুর হোম কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে বিস্ফোরক তথ্য জানাল সিবিআই। শুক্রবার এক হলফনামায় সিবিআই জানিয়েছে, ওই মামলায় প্রধান অভিযুক্ত ব্রজেশ ঠাকুর ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অন্তত ১১টি কিশোরীকে খুন করে পুঁতে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। কাছেই একটি কবরস্থানের বিশেষ জায়গা থেকে প্রচুর হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছে বলেও জানিয়েছে সিবিআই। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান ও তদন্তে ওই ১১ কিশোরীর নামও উঠে এসেছে। এই ঘটনার জেরে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের ইস্তফা দেওয়া উচিত বলে দাবি করেছে আরজেডি। তাদের দাবি, নীতীশ ইস্তফা না দিলে রাজ্যপালের উচিত রাজ্য সরকারকে বরখাস্ত করা।

Advertisement

টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেস (টিস)-এর তরফে রাজ্যের জুভেনাইল হোমগুলিতে গত বছর বিশেষ অডিট করা হয়। সেই অডিট রিপোর্টেই বেসরকারি সংস্থা পরিচালিত মুজফ্ফরপুরের এই হোমে আবাসিকদের উপরে যৌন নির্যাতনের বিষয়টি সামনে আসে। ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮-র মধ্যে ছ’জন কিশোরী ওই হোম থেকে নিখোঁজ হয়েছে বলেও অভিযোগ।

পরে মামলাটির তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। ইতিমধ্যেই ব্রজেশ ঠাকুর-সহ মোট ২১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। শুক্রবার আদালতে সিবিআই জানায়, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরো সায়েন্সের বিশেষ দলের উপস্থিতিতে তদন্তকারী অফিসারেরা প্রত্যক্ষদর্শী ও ওই হোমে নির্যাতনের শিকার হওয়া অন্য কিশোরীদের দেওয়া বয়ান থেকে ব্রজেশ ঠাকুরের হাতে খুন হওয়া ওই ১১ কিশোরীর নাম জানতে পেরেছেন।

Advertisement

হলফনামায় সিবিআই জানিয়েছে, ‘বালিকা গৃহ’ নামে মুজফ্‌ফরপুরের ওই হোমে কম-বেশি ৩৫ জনের মতো কিশোরী ছিল। আবাসিকেরা জানিয়েছে, প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এসে ওই কিশোরীদের উপরে শারীরিক ও যৌন অত্যাচার চালাত।

সিবিআই জানায়, জেরার মুখে গুড্ডু পটেল নামে এক অভিযুক্ত কবরস্থানের একটি বিশেষ অংশ চিহ্নিত করেছে। অভিযোগ, সেখানে ব্রজেশ খুন হওয়া কিশোরীদের দেহ চাপা দেয়। পরে সেখান থেকে বেশ কিছু হাড়গোড় উদ্ধার করেছে গোয়েন্দারা।

সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ এনে সম্প্রতি আদালতে একটি আবেদন করা হয়েছিল। যেখানে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে এই মামলায় পক্ষপাত দেখানোরও অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই আবেদনের শুনানিতে শুক্রবার প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ও বিচারপতি দীপক গুপ্তের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ সিবিআইকে একটি নোটিস পাঠিয়ে চার দিনের মধ্যে বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছে। সিবিআইয়ের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল জানান, ইতিমধ্যেই ওই আবেদনের উত্তর দিয়ে দিয়েছে সিবিআই। একটি হলফনামায় তারা জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত যথেষ্ট স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত চালানো হয়েছে। সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে মূল অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টার যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা-ও এ দিন খারিজ করেছে ওই গোয়েন্দা সংস্থা। ৬ মে ওই মামলার পরবর্তী শুনানি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement