—প্রতীকী ছবি
মায়ের আঁচল ছেড়ে বেরনোর বয়স হয়নি, তার আগেই মা হতে হল ১০ বছরের সেই ধর্ষিতা বালিকাকে!
বৃহস্পতিবার চণ্ডীগড়ের এক সরকারি হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দিল চণ্ডীগড়ের সেই বালিকা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। ওই নাবালিকার চিকিত্সার জন্য হাসপাতালে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। সেই বোর্ডের চেয়ারপার্সন দাসারি হরিশ জানিয়েছেন, সিজার ডেলিভারি হয়েছে মেয়েটির। সদ্যোজাতর ওজন একটু কম, ২.২ কেজি। এই মুহূর্তে আইসিইউ-র নিও-নেটাল কেয়ারে রাখা হয়েছে বাচ্চাটিকে। তার মাকে রাখা হয়েছে অন্য ঘরে।
আরও পড়ুন: ফিরিয়ে দিল হাসপাতাল, রিকশাতেই সন্তানের জন্ম দিলেন মা
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হরিশ বলেন, ‘‘সদ্যোজাতের ওজন কিছুটা কম হলেও আশা করছি, খুব শীঘ্রই সে সুস্থ হয়ে উঠবে। সদ্যোজাত এবং ওই নাবালিকার চিকিত্সার সমস্ত খরচ বহন করছে রাজ্য সরকার। ওই বালিকার বাবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে সদ্যোজাতকে নতুন একটি পরিবার দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। আমরা সেই চেষ্টাও করছি।’’
তবে, সে যে সন্তানের জন্ম দেবে তা নিয়ে কিছুই জানানো হয়নি ওই নাবালিকাকে। তাকে বলা হয়েছিল, গলব্লাডারে পাথর হয়েছে। সেটাই অস্ত্রোপচার করা হবে। এর পরেই তার সিজার করা হয়।
ওই বালিকার গর্ভপাতের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টও
সাত মাস ধরে তার কাকা লাগাতার ধর্ষণ করে ওই নাবালিকাকে। পরে গর্ভবতী হয়ে পড়ে সে। বালিকাটি যে গর্ভবতী, তা জানা যায় অনেক পরে। তার বাবা-মা চণ্ডীগড়ের জেলা আদালতে গর্ভপাতের আবেদন করে বলেন, মেয়ের শরীর এখনও সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য তৈরি নয়। কিন্তু, আদালত সে খারিজ করে দেয়। ভ্রূণের বয়স তখন ছিল ২৬ সপ্তাহ। এ দেশের আইন অনুযায়ী, গর্ভধারণের ২০ সপ্তাহের পরে গর্ভপাত নিষিদ্ধ।
আরও পড়ুন: প্রথম ডাউন সিনড্রোম মুক্ত দেশ হওয়ার পথে আইসল্যান্ড
এর পরে শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা করেন অলখ শ্রীবাস্তব নামে এক আইনজীবী। মেয়েটির শারীরিক পরীক্ষার জন্য চণ্ডীগড়ের ওই হাসপাতালকে নির্দেশ দেয় আদালত। মেয়ের গর্ভপাতের অনুমতি চেয়েছিলেন বাবা-মা। কিন্তু তত দিনে ৩২ সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে। ফলে সুপ্রিম কোর্টও সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। দেশের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর এবং বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ রায় দেয়, এই অবস্থায় গর্ভপাত ওই বালিকা ও তার গর্ভস্থ ভ্রূণ— দু’জনের পক্ষেই বিপজ্জনক। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাকে পরীক্ষার পরে চণ্ডীগড়ের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ-এর চিকিৎসকরা এমনই রিপোর্ট পেশ করেছিল।