প্রতীকী ছবি।
উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারায় বড় ধরনের জঙ্গি দমন অভিযানে নামল সেনা। সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ৫ জঙ্গি-সহ ১০ জন নিহত হয়েছেন।
সেনা জানিয়েছে, গতকাল চেক ফতেখান জঙ্গলে কিছু সন্দেহজনক ব্যক্তির ঘোরাফেরার খবর পায় পুলিশ। সেখানে গিয়ে পুলিশ ও সেনা দেখতে পায়, জঙ্গলে কয়েক জন প্রার্থনা করছে। দু’জন অস্ত্র হাতে পাহারা দিচ্ছে। জওয়ানেরা তাদের চ্যালেঞ্জ করতেই গুলির লড়াই শুরু হয়। গতকাল রাতভর থেমে থেমে গুলির লড়াই চলে।
আজ সকাল থেকে তীব্র লড়াই শুরু হয়। পাঁচ জঙ্গির পাশাপাশি পাঁচ জওয়ানও নিহত হন। সেনা জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন টেরিটোরিয়াল আর্মির ১৬০ নম্বর ব্যাটেলিয়নের মহম্মদ আশরফ রাঠের, রণজিৎ সিংহ ও মহম্মদ থুসু। বাকি দু’জন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশনস গ্রুপের কর্মী। তাঁদের নাম মহম্মদ ইউসুফ চেচে ও দীপক পণ্ডিত। সিআরপিএফ ও সেনার দু’জন জওয়ান আহত হয়েছেন। অভিযান দ্রুত শেষ করার জন্য ডাক পড়েছে প্যারা কম্যান্ডোদেরও।
জঙ্গিদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তবে গোয়েন্দাদের ধারণা, ওই জঙ্গিরা লস্কর ই তইবার সদস্য। কুপওয়ারার চেক ফতেখান জঙ্গল কুপওয়ারা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে। নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে ওই এলাকার দূরত্ব বেশি নয়। গোয়েন্দাদের মতে, ওই জঙ্গিরা নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে এসে জঙ্গলে লুকিয়েছিল।
পরে তারা কুপওয়ারার লোলাব বা ভিলগাম এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করত। এই ঘটনা যে নিয়ন্ত্রণরেখায় সেনার টহলের ফাঁক ধরিয়ে দিয়েছে তা মেনে নিচ্ছেন সেনা কর্তারাই। কারণ, শামসাবারি পর্বতশ্রেণির দু’টি গিরিশিরা পেরিয়ে সেনার নজর এড়িয়ে কাশ্মীরে ঢুকে পড়েছে এই জঙ্গিরা।
গ্রীষ্মের মুখে পাকিস্তান কাশ্মীরে বড় ধরনের অনুপ্রবেশ ঘটানোর চেষ্টা করছে বলে আগেই সতর্ক করেছেন গোয়েন্দারা। সে জন্যই নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর নানা এলাকায় প্রবল হামলা চালাচ্ছে পাক বাহিনী। গতকাল রাত থেকেই পুঞ্চ জেলার বালাকোট সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখার ও-পার থেকে হামলা চালাচ্ছে পাকিস্তান। জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনাও। গত ১৮ মার্চেও এই এলাকায় পাক সেনার ছোড়া মর্টারে এক পরিবারের পাঁচ সদস্যের মৃত্যু হয়।
২০১৬ সালে কুপওয়ারার ওই এলাকাতেই জঙ্গি দমন অভিযান চালিয়েছিল সেনা। তাতে এক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ও এক কর্নেল-সহ সাত জন সেনা নিহত হন। নিহত হয় সাত জঙ্গিও। নিহত কর্নেলের স্ত্রী সম্প্রতি সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছেন।