মানুষ হিসাবে আপনি কেমন, কী বলছে তিব্বতীয় জ্যোতিষ (প্রথম পর্ব)

তিব্বতীয় জ্যোতিষ আমাদের ভারতীয় জ্যোতিষের মতো ১২টি ভাগে বিভক্ত। আমরা যেমন ভূচক্রকে ১২টি ভাগে বিভক্ত করে এক একটি ভাগকে রাশি বলে থাকি এবং প্রত্যেক রাশির নাম নিদির্ষ্ট করে মেষ, বৃষ, মিথুন-সহ মীন নামে অভিহিত করে থাকি, কিন্তু তিব্বতীয় জ্যোতিষ সে ভাবে করে না।

Advertisement

অসীম সরকার

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৯ ০০:০০
Share:

তিব্বতীয় জ্যোতিষ আমাদের ভারতীয় জ্যোতিষের মতো ১২টি ভাগে বিভক্ত। আমরা যেমন ভূচক্রকে ১২টি ভাগে বিভক্ত করে এক একটি ভাগকে রাশি বলে থাকি এবং প্রত্যেক রাশির নাম নিদির্ষ্ট করে মেষ, বৃষ, মিথুন-সহ মীন নামে অভিহিত করে থাকি, কিন্তু তিব্বতীয় জ্যোতিষ সে ভাবে করে না। ওরা কোন বছরে জাতক/জাতিকার জন্ম তার উপর নির্ভর করে একটা রাশি চিহ্ন এঁকে দেয়। যেমন, ১৯৫৩ সালে জন্ম মানে ‘সাপ’ চিহ্নে জন্ম, ১৯২৫ সালে কারও জন্ম হলে তার রাশি চিহ্ন হবে ‘ষাঁড়’ বা ‘নিউ মুন’, আবার ২০১০ সালে কোনও জাতিকার জন্ম হলে তার রাশি চিহ্ন হবে ‘বাঘ’ বা ‘সুর্য’, ইত্যাদি।

Advertisement

এ বার বিভিন্ন বছরে জন্ম হওয়ার জন্য কার কী রাশিচিহ্ন হবে এবং তাদের পূর্বজন্ম কেমন ছিল ও জন্মগত প্রকৃতি কেমন হবে, তার একটা দিক নির্দেশ করার চেষ্টা করা হবে:

১) রাশিচিহ্ন খরগোশ বা সন্ন্যাসী: যাদের ১৯০৩, ১৯১৫, ১৯২৭, ১৯৩৯, ১৯৫১, ১৯৬৩, ১৯৭৫, ১৯৮৭, ১৯৯৯ এবং ২০১১ সালে জন্ম, তাদের রাশিচিহ্ন তিব্বতীয় জ্যোতিষ মতে হবে ‘খরগোশ’। খরগোশ হচ্ছে সন্ন্যাসীর প্রতীক চিহ্ন। এই চিহ্নে জন্মালে জাতক/জাতিকা জ্ঞানী, রসবোধসম্পন্ন নাগরিক ও কারও সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে না। এরা সুখী জীবনযাপন করে, চারপাশের মানুষজনের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক রেখে চলে। কেউ বিপদে পড়ে এদের কাছে সাহায্য চাইলে তা পেয়ে থাকে।

Advertisement

২) রাশিচিহ্ন বাঘ বা উজ্জ্বল সূর্য: যাদের ১৯০২, ১৯১৪, ১৯২৬, ১৯৩৮, ১৯৫০, ১৯৬২, ১৯৭৪, ১৯৮৬, ১৯৯৮ এবং ২০১০ সালে জন্ম তারা বাঘ চিহ্নের অন্তর্গত। এরা কমবেশি বৌদ্ধিক জগতের লোক হয়ে থাকে। আর সকলের চেয়ে এরা অনেক বেশি প্রাণচঞ্চল প্রকৃতির। এরা সকলেই কোনও না কোনও বিষয়ে প্রতিভাবান। এরা সকলেই প্রতিকূল পরিবেশে লড়াই চালিয়ে যায়। এরা চায় না এদের মুক্তচিন্তায় কেউ হস্তক্ষেপ করুক, কারণ এরা প্রবল ভাবে সব ধরনের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।

৩) রাশিচিহ্ন তিব্বতীয় ষাঁড় বা অমাবস্যার চন্দ্র: যাদের ১৯০১, ১৯১৩, ১৯২৫, ১৯৩৭, ১৯৪৯, ১৯৬১, ১৯৭৩, ১৯৮৫, ১৯৭৭ এবং ২০০৯ সালে জন্ম তারা সকলেই ষাঁড় রাশিচিহ্নে জন্মেছেন। তিব্বতীয় মতে, ষাঁড়কে অমাবস্যার চন্দ্রের প্রতীকে বোঝানো হয়ে থাকে। প্রকৃতিগত ভাবে এই সময়ে জন্ম নিলে জাতক/জাতিকারা কমবেশি সকলেই রোম্যান্টিক ভাবের হয়ে থাকে। এরা আবেগপ্রবণ মানসিকতার হয় আর সকলেই ফ্যান্টাসি বা স্বপ্নজগতের লোক বা স্বপ্নবিলাসী হয়ে থাকে। প্রেমে পড়লে এরা ভীষণ ঈর্ষাকাতর হয়ে পড়ে। এরা ভীষণ স্পর্শকাতর স্বভাবের। এদেরকে তিব্বতীয় ভাষায় ‘রাতের প্যাঁচা’ বলা হয় কেননা এরা দিনের দ্বিতীয় অর্ধে নিজেদের সক্রিয় করে তোলে।

৪) রাশিচিহ্ন কালো ষাঁড় বা ইদুর যাদের: যারা ১৯০০, ১৯১২, ১৯২৪, ১৯৩৬, ১৯৪৮, ১৯৬০, ১৯৭২, ১৯৮৪, ১৯৯৬ এবং ২০০৮ সালে জন্মেছে তাদের সকলের তিব্বতীয় জ্যোতিষমতে রাশিচিহ্ন হবে কালো ষাঁড়। এদের কারও কারও জন্মগত প্রবণতা হচ্ছে অন্ধকার জগতের আহ্বানে সাড়া দেওয়া। যে নিদির্ষ্ট পথে সকলেই চলে এরা সে পথে যেতে চায় না। এরা দেহ-প্রাণ-মনের দিক থেকে শক্তিশালী হয়ে থাকে তাই সব ব্যাপারে কর্তৃত্ব করতে চায়। এরা প্রেম, ভালবাসা,বন্ধুত্ব, পরিবার, কেরিয়ার সব কিছুর উপর নিজের মতামত চাপিয়ে দিতে চায়।

আরও পড়ুন: গৃহকর্তার বেডরুম সঠিক দিকে আছে তো?

৫) রাশিচিহ্ন শুয়োর বা বরাহ বা কপার ব্রেসলেট যাদের: ১৮৯৯, ১৯১১, ১৯২৩, ১৯৪৭, ১৯৫৯, ১৯৭০, ১৯৮৩, ১৯৯৫ এবং ২০০৭ সালে যাদের জন্ম হয়েছে,তারা সকলেই, তিব্বতীয় জ্যোতিষমতে বরাহ চিহ্নে জন্মেছেন। এদের মধ্যে অনেকেই প্রকৃতিগত ভাবে সব ধরনের সম্পর্কের প্রতি সে ভাবে আস্থাশীল নয়, তবে স্নেহ ভালবাসা কাতর ও সেই সঙ্গে প্রবল যৌনকাতর স্বভাবের হয়ে থাকে। এরা কখনও কখনও সাধুসন্তের মতো জীবন কাটিয়ে থাকে। এরা অনেকেই রহস্যজগতের প্রতি প্রবল ভাবে আকৃষ্ট হয়ে থাকে।

(৬) রাশিচিহ্ন কুকুর: যাদের ১৮৯৮, ১৯১০, ১৯২২, ১৯৩৪, ১৯৪৬, ১৯৫৮, ১৯৭০, ১৯৮২, ১৯৯৪ এবং ২০০৬ সালে জন্ম, তারা সকলেই তিব্বতীয় জ্যোতিষমতে কুকুর চিহ্নে জন্মেছে। তিব্বতীয় দর্শনে কুকুরকে বিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়ে থাকে, তাই এই চিহ্নে যারা জন্মেছে তারা সহজাত ভাবেই সৎ মানসিকতার মানুষ হয়ে থাকে। এরা আনুগত্যে বিস্বাসী তাই পরিবারের প্রতি বিশেষ আস্থাশীল হয়ে থাকে। এরা মিথ্যা কথা বলে মানুষকে বিপথে চালিত করে না। কমন সেন্সের সাহায্যে চলে থাকে। এরা জীবনে নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা চেয়ে থাকে। এরা কোনও কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত লেগে থাকে, কাজ যতই কঠিন হোক শেষ না করা অবধি তার থেকে সরে আসে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement