অনামিকা সংস্কৃত শব্দ। এর অর্থ নামহীন। সাহেবরা যদিও এর একটা জুতসই নাম দিয়েছে— ‘রিং ফিঙ্গার’।
অনামিকাকে সারা বিশ্বে রবির আঙুল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। রবি মানে ঔজ্জ্বল্য, দীপ্তি, অর্থ, সৃজনশীলতা, সাফল্য, প্রতিষ্ঠা, উঁচু পদে অধিষ্ঠান, শিক্ষা ও দীক্ষা দানের অধিকারী, সব রকম শিল্প ও শিল্পী প্রতিভা। এখানে সাফল্য মানে জাগতিক ও আধ্যাত্মিক দুই-ই বোঝায়। রবির আঙুল সুগঠিত না হওয়া মানে, তার আত্মা বিবর্তনের মাধ্যমে পরিণত হয়নি।
এই আঙুল যার পুষ্ঠ, যদি কেউ তার নিকটে যায় সে অনুভব করে যে এমন মানুষের সংস্পর্শে এসে সে নিজেকে ধন্য মনে করে। সুগঠিত, পুষ্ট অনামিকার জাতক অনেকের আশ্রয়দাতা হয়ে থাকে।
অনামিকাকে হিউমার বা রসবোধের আঙুল বলা হয়ে থাকে। যোগ শাস্ত্রে বলা হয়, যাদের যত বেশি রসবোধ আছে, তারা তত বিবর্তনের দিক থেকে অভিজ্ঞ।
আরও পড়ুন: জাতক/জাতিকা কখন ছোট শরীরের অধিকারী হয়
অনামিকা যদি তর্জনীর চেয়ে দৈর্ঘে ছোট হয়, জাতক সব অবস্থায় সন্তুষ্ট থাকে। এরা অনেক আত্মবিশ্বাসী হয়। এরা নিজের স্বার্থ খুব ভাল বোঝে ও প্রচণ্ড আত্মকেন্দ্রিক। এদের প্রবল অহং ভাব থাকে। এরা সম্পর্কের ব্যাপারে কখনও এগিয়ে আসে না। এরা আর্থিক দিক থেকে ভাল রকম প্রতিষ্ঠিত হয়।
অনামিকা যদি খুব ছোট হয়, যেখানে মধ্যমার প্রথম পর্বের (নখের পর্ব) চেয়ে নীচে থাকে, তাদের মধ্যে কোনও রসবোধ কাজ করে না। এরা পারিবারিক ব্যাপারে বেশ উদাসিন হয়ে থাকে, কোনও দায়িত্ব নিতে অপারগ হয়। তবে এরা ধনী হয়ে থাকে। এরা নিজেকে সে ভাবে প্রকাশ করতে পারে না।
অনামিকা ও তর্জনী দুটোই যদি সমান মাপের হলে, জাতক শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানূষ হয়ে থাকে। ঘরোয়া সামাজিক সম্পর্কে সবার সঙ্গে মিলেমিশে বাস করতে আগ্রহী হয়ে থাকে। কারও সঙ্গে বিশেষ বিবাদে যায় না। এরা সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক বেশি আন্তরিক ও বিশ্বস্ত। এরা সঙ্গীর প্রতি খুব যত্নশীল।
অনামিকা যদি তর্জনীর চেয়ে দৈর্ঘে বড় হয়, যেটা অনেকেরই হয়ে থাকে, তা হলে এরা কিছুটা ক্রিয়েটিভ এবং শৈল্পিক মনের হয়ে থাকে।
তবে এরা ক্রিয়েটিভ হলেও সে ভাবে স্বীকৃতি পায় না। এরা নিজের যোগ্যতা ও গুণ সম্বন্ধে বিশেষ উদাসিন থাকে। জগতের অনেক বিস্ময়কর সৃজনশীল আবিষ্কার এরা করেছেন কোনও মূল্য না নিয়ে। এদের যে জিনিসটার অভাব, সেটা হচ্ছে আত্মবিশ্বাস এবং নেতৃত্ব দেওয়ার মানসিকতা। ফলে এরা নিজেকে পিছিয়ে রাখে। এরা এদের সৃজনশীলতাকে অর্থমূল্যে বিচার করে না।
অনামিকার মাথাটা যদি মধ্যমার দিকে সামান্য বেঁকে থাকে, তবে জাতক নিজেদের সৃষ্টিশীলতাকে নিজেরাই সে ভাবে গুরুত্ব দেয় না।
আঙুলের নখের দিকটা ‘স্প্যাচুলার’ মতো যদি দেখতে হয়ে থাকে, তা হলে তারা নামকরা সুরকার হয়ে থাকে।
অনামিকা যদি দৈর্ঘে মধ্যমার কাছাকাছি হয়, তা হলে এরা জীবনে সব ব্যাপারে ঝুঁকি নিয়ে ফেলে। এরা জীবনটাকে জুয়ার মতো বাজি রাখে।
অনেকে আছেন যাদের অনামিকা শনি বা মধ্যমার দিকে ঝুঁকে থাকে। এরা ভাল দার্শনিক বা পদার্থবিদ হয়ে থাকে। এরা নিজেদের আবেগ বশে রাখে।