ঋতুবন্ধ হয়ে গেলে শরীর নিয়ে একটু বেশি সতর্ক থাকুন। ছবি: সংগৃহীত
৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সের মাঝে অধিকাংশের ঋতুবন্ধের সময় আসে। এর পর আর সেই নারীর মাসিক ঋতুস্রাব হয় না। কার কোন বয়সে ঋতুবন্ধ হবে, তা বংশগত ধারার উপর খানিকটা নির্ভর করে। যে সকল মহিলার হরমোনজনিত সমস্যা আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে তুলনায় তাড়াতাড়ি ঋতুবন্ধ হওয়ার সময় আসে।
ঋতুবন্ধের পর থেকে মেয়েদের শরীরে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। বয়সের কারণেও নানা রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। পঞ্চাশের পর থেকে জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনলে অনেক অসুখ এড়ানো সম্ভব। ঋতুবন্ধ হয়ে গেলে শরীর নিয়ে একটু বেশি সতর্ক থাকুন। ঋতুবন্ধের পর চিকিত্সকের কাছে যেতেই হবে। নইলে কিন্তু নানা অসুবিধায় জেরবার হতে পারেন।
ঠিক কী কী ধরনের অসুবিধা হতে পারে?
১) ঋতুবন্ধের পর অনেকের ‘ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স’ হয়। ফলে তাঁরা প্রস্রাব আটকে রাখতে পারেন না। নিয়মিত কিছু শরীরচর্চা করলেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
২) এই সময়ের পর মেয়েদের জরায়ু, ডিম্বাশয়, স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।
৩) উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস এবং হার্টের নানা সমস্যা এড়াতে এই সময়ে জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনতে বলা হয়।
৪) ঋতুবন্ধের পর অনেকে অস্টিওপোরোসিস রোগে আক্রান্ত হন। এ ক্ষেত্রে শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি হয়। ফলে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে।
৫) যোনিতে অনেকের ব্যথা শুরু হয়। যোনি শুষ্ক হয়ে যায়, চুলকানি শুরু হয়। এ ছাড়া মূত্রনালিতে সংক্রমণের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
প্রতীকী ছবি
ঋতুবন্ধের পর কোন কোন শারীরিক পরীক্ষা করানো দরকার?
১) ঋতুবন্ধের পর ক্যানসার স্ক্রিনিং করানো দরকার। ঠিক কোন ধরনের স্ক্রিনিং আপনার জন্য জরুরি, তা স্ত্রীরোগ চিকিৎসকই বলতে পারবেন।
২) পেলভিক পরীক্ষা করানোও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। মহিলাদের যোনি, জরায়ু, ফ্যালোপিয়ান টিউব বা ডিম্বাশয় কোনও রকম সংক্রমণ থাকলে, তা নির্ণয় করা সম্ভব এই পরীক্ষার মাধ্যমে।
৩) ঋতুবন্ধের বহু বছর পর আবার রক্তপাত শুরু হলে ব্যাপরটা এড়িয়ে যাবেন না। এটি জরায়ুতে ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। ঋতুবন্ধের পর প্যাপ স্মিয়ার পরীক্ষা করানো দরকার।
বাস্তবে ঋতুবন্ধ কোনও সমস্যা নয়। কিন্তু এর জন্য পরে নানা অসুবিধা হতে পারে। তাই ঋতুবন্ধের পর চিকিত্সকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। ঋতুবন্ধের পর সমস্যাগুলি কী ভাবে মোকাবিলা করবেন, তা জানা দরকার। হতাশায় ভুগবেন না। চিকিত্সকের পরামর্শ নিলে পাবেন সুস্থ জীবন।