‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’ বলছে, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ছবি: শাটরস্টক
পরিসংখ্যানগত ভাবে প্রতি বছর দুনিয়া জুড়ে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ প্রাণ হারান হৃদ্যন্ত্রের সমস্যায়। ভারতে প্রতি বছর আকস্মিক হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭ লক্ষের কাছাকাছি। যে কোনও সময় এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন যে কেউ। কিন্তু পরিসংখ্যানগত ভাবে, বছরের একটি বিশেষ সময়ে অনেকটাই বেড়ে যায় এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা। ‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’ বলছে, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আর বছরের শেষ সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ এই রোগে মারা যান বড়দিনে।
‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর দাবি, শীতে অন্তত ১০ শতাংশ বেড়ে যায় প্রাণঘাতী হৃদ্রোগের আশঙ্কা। কিন্তু কেন এমন হয়? চিকিৎসকেরা বলছেন, তাপমাত্রায় হেরফের হলে, তা প্রভাব ফেলে হৃদ্যন্ত্রের উপরেও। শীতে আমাদের শরীরের রক্তনালি সঙ্কুচিত হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘ভ্যাসোকনস্ট্রিকশন’। এমনটা হলে শরীরে রক্তচাপ বেড়ে যায়। তাই সারা শরীরে রক্ত সরবরাহ করতে আমাদের হৃদ্যন্ত্রকে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। ডিসেম্বরের শেষ দিকেই সাধারণত সবচেয়ে বেশি ঠান্ডা পড়ে উত্তর গোলার্ধে। বাইরের তাপমাত্রা অনেকটা কমলে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে অসুবিধা হয়। অতিরিক্ত ঠান্ডায় ‘হাইপোথার্মিয়া’ দেখা দিতে পারে। শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রার আকস্মিক পতনকে ‘হাইপোথার্মিয়া’ বলে। দেহের কোনও অঙ্গ শীতল হয়ে গেলে সেই অঙ্গে গরম রক্ত বেশি পরিমাণে পাঠায় হৃদ্যন্ত্র। সারা দেহই যদি ঠান্ডা হয়ে যায়, তবে অতিরিক্ত চাপ পড়ে হৃদ্যন্ত্রের উপরে।
সারা দেহই যদি ঠান্ডা হয়ে যায়, তবে অতিরিক্ত চাপ পড়ে হৃদ্যন্ত্রের উপরে। —ফাইল চিত্র
যাঁদের এমনিতেই কোনও রকম হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের শরীর এই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হিমসিম খায়। তার উপর শীতে শরীরের অক্সিজেনের প্রয়োজন বেড়়ে যায়। রক্তনালি সরু থাকায় অক্সিজেনের ঘাটতি হয়। তাই হৃদ্যন্ত্রে কম পরিমাণে অক্সিজেন পৌঁছয়। এতেও হৃদ্রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।