শরীরচর্চা করেও ওজন কমছে না। কোন ভুলে অধরা কাঙ্খিত ফল। সংগৃহীত।
চেষ্টা করেই চলেছেন। তেল-মশলাদার খাবার আগেই ভুলেছেন। নিয়মিত শরীরচর্চাও করছেন। কিন্তু কিছুতেই ওজন বশে আসছে না?
কেন? সেটাই ভাবছেন তো! জানেন কি পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব আপনার চেষ্টায় জল ঢালতে পারে। শুধু ঘুম নয়, নেপথ্যে থাকতে পারে আরও অনেক কারণ।
ওজন না কমা ও ঘুমের সম্পর্ক
পরিশ্রমের পর সঠিক মাত্রায় ঘুম যদি না হয়, শারীরবৃত্তীয় কাজকর্মে সমন্বয়ের অভাব দেখা দিতে পারে। ঘুম মানে দীর্ঘ বিশ্রাম। শুধু শরীর নয়, মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও একজনের ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমের দরকার।বিভিন্ন হরমোনের বিভিন্ন ভূমিকা থাকে শরীর-স্বাস্থ্যে। ঠিকমতো ঘুম না হলে হরমোনের ভারসাম্যে তার প্রভাব পড়বে। মস্তিষ্কও ক্লান্ত হয়ে পড়ে। হজম থেকে পেট ফোলার সমস্যা হতে পারে। এমনকি বিপাকহারের গতিও এতে কমতে পারে। যার ফলাফল, শরীরচর্চা করেও ওজন কমায় সমস্যা হতে পারে।
ভুল কোথায়?
মোবাইলের নীল আলো
অথচ ঘুম নিয়ে বেশিরভাগ মানুষই সতর্ক নন। বিশেষত নির্দিষ্ট ঘুমে ইদানীং ভাগ বসাচ্ছে মোবাইল। দিন শেষে বেশিরভাগ মানুষই মোবাইলে চোখ রাখেন। সামাজিক মাধ্যম দেখে নেওয়া, পছন্দের সিরিয়ালে চোখ রাখা, কিংবা ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কিছু দেখা। চিকিৎসকেরা বলছেন ঘুমের সঙ্গেও হরমোনের যোগ থাকে। প্রতিদিন কখন ঘুমাবেন, কখন উঠবেন, এই পুরো প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হতে পারে মোবাইলের জন্য। কারণ, মোবাইল থেকে বিকিরিত হয় ‘নীল আলো’। তার জেরেই মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়। যার ফলে ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ঘুমনোর এক ঘণ্টা আগে মোবাইল দেখা বন্ধ করা দরকার।
ঘুম আনতে কী করবেন
চা, কফি, সিগারেট ঘুমতে যাওয়ার আগে খাওয়া যাবে না।
মৃদু আলোর পাশাপাশি মৃদু কোনও সুর ঘুম আনতে সাহায্য করে।
রাতে পেটপুরে হাবিজাবি খাওয়া যাবে না।
সকালের সূর্যরশ্মি
দেহেরও নিজস্ব ঘড়ি আছে, ছন্দ আছে। সকালের রোদ শরীরকে ধীরে ধীরে উজ্জীবিত করে। সেই ঘড়িকে জাগার নির্দেশ দেয়। বেলা যত গড়ায়, সূর্য মধ্য গগনে যায়, শরীরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। সকালে উঠে শরীরচর্চা স্বাস্থ্যের জন্য যতটা ভালো, ততটাই রাতে ঘুমের জন্যও। দেরিতে ওঠার অভ্যাস, সঠিক সময়ে শরীরচর্চা না করা কিন্তু ওজন কমানোর পথে বাধা হতে পারে।
শরীরচর্চা কি নিয়ম মেনে?
ওজন কমানোর জন্য শরীরচর্চা করতে গেলে তার জন্যও নির্দিষ্ট সময়, একাগ্রতা প্রয়োজন। প্রতি দিনই জিমে যাচ্ছেন, কসরতও করছেন, কিন্তু কোন ব্যায়াম কতক্ষণ করতে হবে, কী ভাবে, সেটা জানাও গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন ব্যায়াম করে বাকি দিনগুলি বাদ রাখছেন। এতেও কিন্তু কাঙ্খিত ফল লাভে অসুবিধা হতে পারে। ওজন কমানোর জন্য শরীরচর্চা নিয়মিত করতে হবে।
খাবারে ভারসাম্যের অভাব
ব্যায়াম করছেন, নিয়ম মেনে স্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছেন। কিন্তু সারা দিনে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাটের সমতা থাকছে তো। সকালে স্বাস্থ্যকর খাবারই খেলেন, কিন্তু প্রোটিনের ঘাটতি রয়ে গেল। তা হলে হবে না। আবার বেশি প্রোটিন খেয়ে ফেললেন, বাদ গেল ভাল ফ্যাট, তাহলেও ওজন কমার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।
খাবার বাদ দেওয়ার প্রবণতা
শুধু স্বাস্থ্যকর খাবার খেলেই হবে না, তা খেতে হবে ঘড়ি ধরেও। সময় হল না বলে দুপুরের খাওয়া বাদ দিলেন, রাতে একটু বেশি খেয়ে নিলেন, এমনটা অনেকেই করেন। বুঝতেই পারেন না, শরীরচর্চার পর ওজন না কমার কারণ হতে পারে কোনও একটা সময় না খাওয়াও।