Cholesterol deposits in the eyes

চোখের আশপাশে হলদেটে মাংসপিণ্ড কিসের লক্ষণ? আপনারও যদি থাকে, তা হলে সতর্ক হোন

এখনকার সময়ে রোজের খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপনে যা অনিয়ম চলছে, তাতে কমবয়সিরাও এই সমস্যায় ভুগছেন। চোখের পাতায় ব্যথাহীন মাংসপিণ্ড কি ক্ষতিকর?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:৩৫
Share:

চোখের পাতায় সাদা-হলদে দাগ ঠিক কী, জেনে নিন প্রতীকী ছবি।

চোখের পাতার উপরে-নীচে সাদা-হলদেটে মাংসপিণ্ড গজাচ্ছে? যদিও তাতে ব্যথাবেদনা নেই, তবে দেখতে মোটেও ভাল লাগছে না। সাধারণত চল্লিশের পর থেকে চোখের আশপাশে এমন হলদেটে মাংসপিণ্ড গজাতে দেখা যায় অনেকেরই। তবে এখনকার সময়ে রোজের খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপনে যা অনিয়ম চলছে, তাতে কমবয়সিরাও এই সমস্যায় ভুগছেন। চোখের আশপাসে এমন ব্যথাহীন মাংসপিণ্ডকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় ‘জ়্যানথেলাসমা’। শরীরে কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে গেলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

Advertisement

কোলেস্টেরল বাড়লে তার রেশ পড়ে ত্বকেও। জ়্যানথেলাসমা ত্বকেরই একধরনের সমস্যা। এই বিষয়ে ইন্টারনাল মেডিসিনের চিকিৎসক পুষ্পিতা মণ্ডল জানাচ্ছেন, শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল অর্থাৎ ‘লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন’ বা এলডিএলের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়তে শুরু করলে রক্তে সেগুলি জমা হতে থাকে। এগুলি সবই অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট, যা জমতে জমতে মাংসপিণ্ডের মতো আকার নেয়। সাধারণত এগুলি ক্ষতিকারক নয়, ব্যথাও হয় না। তবে যদি চোখের পাতায় এমন অসংখ্য মাংসিপণ্ড গজাতে থাকে এবং তাদের আকারও বাড়তে থাকে, তা হলে কিন্তু সতর্ক হতে হবে। এর অর্থ হল, রক্তে কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা সাঙ্ঘাতিক ভাবে বেড়ে চলেছে, যা হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের কারণ হয়ে উঠতে পারে।

চিকিৎসক জানাচ্ছেন, চোখের নীচে বা চোখের পাতায় ব্যথাহীন ফোলা অংশ দেখা দিলে দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করান। এতে চোখের কোনও সমস্যা দেখা না দিলেও শরীরে অন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক সময়ে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে রেটিনায় থাকা রক্তবাহে সমস্যা দেখা দেয়। তখন তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

Advertisement

কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। উচ্চ কোলেস্টেরল থাকলে রক্তনালিতে অক্সিজেন সরবরাহ কমে। পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অভাবে হৃদ্‌যন্ত্রে চাপ পড়ে বুকে ব্যথা হতে পারে। কোলেস্টেরল জমলে মস্তিষ্কেও রক্ত সঞ্চালন কমে। ঘাড়ে ও মাথার পিছন দিকে মাঝে মাঝে একটানা ব্যথা হয়। বাড়তি কোলেস্টেরল রক্তের স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা দেয়, যা হৃদ্‌রোগের কারণ হতে পারে। উচ্চ কোলেস্টেরল থেকে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যায়।

সমাধান কিসে?

কোলেস্টেরল থাকলে একদমই ভাজাভুজি খাওয়া যাবে না। কারণ, এই ধরনের খাবারে ক্যালোরির পরিমাণ অনেক বেশি। এতে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

উচ্চ কোলেস্টেরল থাকলে রান্নায় তেল নামমাত্র দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে সাদা তেল বা সর্ষের তেলের বদলে ব্যবহার করতে পারেন অলিভ অয়েল।

মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাস একেবারেই ছাড়তে হবে। চা-কফি বা রান্নায় চিনির মাত্রা কমান।

বাইরের খাবার, বেশি তেলমশলা দেওয়া খাবার, প্রক্রিয়াজাত মাংস, নরম পানীয়, বেশি চিনি দেওয়া পানীয় খাওয়া চলবে না।

ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে লেবু জল খাওয়া অভ্যাস করুন। লেবুতে থাকা ভিটামিন সি, ফ্ল্যাভোনয়েড যৌগ লো-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিনের মাত্রা কমাবে। সকালের জলখাবারে বেশি করে ফাইবারযুক্ত খাবার রাখতে হবে। ওট্‌স, ডালিয়ার মতো দানাশস্য, সবুজ শাকসব্জি, ও ফল বেশি করে খেতে হবে। দুধ-চায়ের বদলে লিকার টি খাওয়া অভ্যাস করুন।

নিয়মিত শরীরচর্চা করলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকবে। শরীরচর্চা বলতে কিন্তু শুধু জিম নয়, নিয়মিত হাঁটা কিংবা জগিং, সাইকেল চালানো ও সাঁতারের মতো অভ্যাসও সহায়তা করতে পারে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement