ছবি: সংগৃহীত।
‘ডিপ্রেশনের বাংলা জানি মনখারাপ’—
এই কবিতা পড়তে গিয়েই মনে হল কথাটা। হঠাৎ একটা ধূসর বিকেল বাড়ির বারান্দায় বসে যে ধরনের মনখারাপ হয়, তাকে কি সত্যিই ডিপ্রেশন বা অবসাদ বলে দাগিয়ে দেওয়া যায়? মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা উঠলে অবসাদ এবং উদ্বেগের মতো সমস্যার প্রসঙ্গ আসবেই। মনখারাপ মানেই যেমন অবসাদ নয়। আবার, উদ্বেগ মানেই যে অবসাদ আসবে, এমন কোনও গতে বাঁধা ছকও নেই। তবে এই অসুখ ঘিরে অনেকের মনেই নানা রকম ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। উদ্বেগজনিত অসুস্থতা থেকে আসতে পারে অবসাদ। আবার অবসাদের কারণেও কিন্তু অনেকেই উদ্বিগ্নও হয়ে ওঠেন।
মনোবিদ দেবশীলা বসুর মতে, “মনখারাপ হলেই তাকে অবসাদ বলে দাগিয়ে দেওয়া যায় না। অবসাদের সঙ্গে অনেক কিছু জড়িয়ে থাকে। অনেকেরই বাঁচার ইচ্ছা কমে যায়, কাজ করতেও ইচ্ছে করে না। নাওয়া-খাওয়া-ঘুম, সব ক্ষেত্রেই নিজেক সঙ্গে লড়াই করতে হয়। নিজের পরিস্থিতি নিয়ে অপরাধ বোধ বা অসহায়তাও থাকতে পারে অবসাদগ্রস্তদের।”
উদ্বেগ ঠিক উল্টো। দেবশীলা বলেন, “না দেখা ভবিষ্যতের ভাবনা ঘিরে অস্বস্তি। এর পরে কী হতে পারে, তা ঘিরে অতিরিক্ত চিন্তা থাকে উদ্বেগের মধ্যে। তার জেরে কী কী ক্ষতি হতে পারে, সে চিন্তাও উঠে আসতে পারে। শিশুদের মধ্যে যেমন স্কুলের পরীক্ষা ঘিরে উদ্বেগ দেখা দিতে পারে, আবার সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে না পারলে কিন্তু বড়দের মধ্যেও উদ্বেগ দেখা দিতে পারে। উদ্বেগ থেকেও ভয়ের উদ্রেক হয়। কিন্তু তার উৎস নির্দিষ্ট থাকে না।”
কী ভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যেতে পারে?
১) প্রথম কাজ হল শরীরচর্চা করা। নিয়মিত শরীরচর্চা করলে মানসিক স্বাস্থ্য ভাল থাকে। প্রয়োজনে ধ্যান, ‘সাউন্ড থেরাপি’, ‘হিলিং’-এর সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
২) সৃজনশীল কাজের মধ্যে থাকলেও কিন্তু মন ভাল থাকে। উদ্বেগ বশে রাখা বা অবসাদ কাটানোর আরও একটি পন্থা হতে পারে এটি।
৩) বিশ্বাসযোগ্য মানুষের সঙ্গে কথা বললেও অনেক সময়ে মনের মেঘ কাটে। অবসাদ কেটে যেতে পারে ইচিবাচক আলাপ-আলোচনায়।
৪) পোষ্যের সঙ্গে সময় কাটালেও মন ভাল হয়ে যায় অনেকের। সুযোগ-সুবিধা থাকলে বাড়িতে পোষ্যও রাখতে পারেন।
৫) মাত্রাছাড়া উদ্বেগ কিন্তু অসুখের পর্যায়ে পড়ে। সে ক্ষেত্রে মনোবিদ বা মনোরোগ চিকিৎসকের সাহায্য নিতে হয়।