প্রতীকী ছবি।
দিন কয়েক আগেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে খবর। মা হয়েছেন প্রিয়ঙ্কা চোপড়া। তবে যে পদ্ধতিতে মা হয়েছেন তিনি, তা নিয়েই আলোচনা হয় বেশি। সারোগেসির পথ বেছে নিয়েছিলেন অভিনেত্রী। অর্থাৎ, আর এক মহিলার গর্ভে বড় হয়েছে তাঁর সন্তান।
কী এই সারোগেসি?
এ ক্ষেত্রে মা নিজে সন্তানধারণ করেন না। তাঁর হয়ে অন্য এক মহিলা ধারণ করেন সেই সন্তানকে। সন্তানধারণ যিনি করছেন, তিনি হলেন সেই শিশুর সারোগেট মা। বিশেষ করে যে সকল মহিলার শরীর সন্তানধারণের ধকল নেওয়ার জন্য প্রস্তুত নয়, তাঁরাই এই পথ বেছে নেন। কারও কারও ক্ষেত্রে অবশ্য অন্য কারণও থাকে। তবে শুনতে যত সহজ, এই পদ্ধতি ততটাও সরল নয়। রয়েছে নানা ধরনের নিয়মকানুন, চিকিৎসা সংক্রান্ত জটিলতা। আছে আইনি জটও।
এক ঝলকে জেনে নিন সারোগেসির খুঁটিনাটি
সারোগেসির নানা ধরন এবং নিয়ম রয়েছে। এ পদ্ধতি বেছে নেওয়ার আগে তা জানা জরুরি। মূলত দু’ধরনের সারোগেসি হয়। যেমন—
ট্র্যাডিশনাল সারোগেসি: এ ক্ষেত্রে বাবার শুক্রাণু প্রতিস্থাপিত হয় সারোগেট মায়ের শরীরে। কৃত্রিম পদ্ধতিতেই তা করা হয়। সারোগেট মায়ের ডিম্বাণুই ব্যবহৃত হয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ডোনারের শুক্রাণুও ব্যবহার করা হয়। তবে তা-ও প্রতিস্থাপন করা হয় কৃত্রিম পদ্ধতিতেই।
জেস্টেশনাল সারোগেসি: এ ক্ষেত্রে বাবার শুক্রাণু এবং মায়ের ডিম্বাণু ব্যবহার করা হয়। কৃত্রিম উপায়ে ফার্টিলাইজ করে তা প্রতিস্থাপন করা হয় সারোগেট মায়ের জরায়ুতে। এ ক্ষেত্রে সারোগেট মায়ের সঙ্গে সন্তানের কোনও জিনগত মিল থাকে না। এই পদ্ধতিই সবচেয়ে প্রচলিত এখন।
প্রতীকী ছবি।
ভারতে সারোগেসি সংক্রান্ত যে সব নিয়ম মনে রাখতে হবে
১) টাকার বিনিময়ে কারও সন্তানধারণ করার পদ্ধতিকে ‘বাণিজ্যিক সারোগেসি’ বলে। এটি নানা দেশেই প্রচলিত। তবে ভারতে নিষিদ্ধ।
২) এ দেশে সারোগেট মা হতে পারেন সন্তানের পিতা-মাতার খুব নিকট কোনও আত্মীয়।
৩) যেহেতু বণিজ্যিক সারোগেসি নিষিদ্ধ, তাই সন্তানের বাবা-মা সারোগেট মায়ের চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারেন মাত্র। তা ছাড়া আর কোনও টাকা-পয়সার আদানপ্রদান হবে না।
৪) সারোগেট মায়ের বয়স হতে হবে ২৫ থেকে ৩৫-এর মধ্যে।
৫) এক বারের বেশি সারোগেট সন্তান ধারণ করতে পারবেন না কেউ।
৬) কেউ যদি বাণিজ্যিক সারোগেসির পথ বেছে নেন, তবে তাঁদের পাঁচ বছর জেল এবং পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। একই কাজ এক বারের বেশি করলে ১০ বছর পর্যন্ত জেলও হতে পারে।
সারোগেসি সংক্রানন্ত নিয়ম বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম। বিদেশের সারোগেসির নিয়মের সঙ্গে এ দেশের নিয়মে পার্থক্য আছে। এই পথ বেছে নেওয়ার আগে তা ভাল ভাবে জেনে নেওয়া জরুরি, যাতে পরবর্তীকালে কোনও আইনি সমস্যায় না পড়তে হয়।