প্রৌঢ়ত্ব কিংবা বার্ধক্যের মতো স্তরগুলিকে উপভোগ করার সুযোগও পান না, সেই সুযোগ পেলে তা উপভোগ করুন। ছবি: প্রতীকী
সর্ব ক্ষণ মনে হয় বয়স বেড়ে যাচ্ছে? মনের কোণে জমে থাকে ভয়, এই বুঝি প্রাণবায়ু ফুরিয়ে এল? এমন ভয় বহু মানুষের মধ্যেই কাজ করে। বিজ্ঞানের ভাষায় বিষয়টিকে বলে ‘জেরাসকোফোবিয়া’। শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ ‘থা জেরাসো’ থেকে। যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, ‘আমি বুড়ো হচ্ছি’। বার্ধক্য নিয়ে ভয় হওয়া খুব একটা বিরল নয়, তবে যদি দিনের পর দিন এই ভাবনা মনের উপর চাপ বাড়িয়ে দেয়, তবে মনোবিদের পরামর্শ নেওয়া ছাড়া গতি নেই। কিন্তু সমস্যা যদি খুব একটা গভীর না হয়, তবে সহজ কিছু পন্থা মেনে চললেই দূর হতে পারে এই ভয়।
১) ভেবে দেখুন কত মানুষ অল্প বয়সে পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। প্রৌঢ়ত্ব কিংবা বার্ধক্যের মতো স্তরগুলিকে উপভোগ করার সুযোগও পান না, সেই সুযোগ পেলে তা উপভোগ করুন।
২) বয়স বাড়লে হরমোনের ভারসাম্যে বদল আসে। আর এই বদলের ছাপ পড়ে শরীরের উপরেও। শরীরে কী ধরনের বদল আসতে পারে, তা নিয়ে চিন্তা না করে একটি পড়াশোনা করে নিন বার্ধক্যজনিত লক্ষণ নিয়ে, তা হলেই আগে থেকে বুঝতে পারবেন কী কী সমস্যা হতে পারে।
৩) অনেকেই বয়স বেড়ে গেলে পছন্দের পোশাক পরতে পারবেন না বলে মনখারাপ করেন। নিজের পছন্দ অনুযায়ী পোশাক পরুন নির্দ্বিধায়। লোকে কী বলবে, সে সব ভেবে নিজের স্বাদ বদলাবেন না।
বলিরেখা কিংবা চুল পেকে যাওয়া নিয়ে অযথা লড়াই করবেন না। ছবি: সংগৃহীত
৪) স্বাস্থ্যগত ভাবে সুস্থ থাকা কিন্তু খুবই দরকার, বয়স বাড়লে দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন সমস্যাও দুশ্চিন্তায় ফেলে দেয়। তাই পুষ্টিকর খাবার খান, সঙ্গে পর্যাপ্ত জল পান করুন। এই দু’টি জিনিস ঠিক থাকলে গ্যাস, অম্বল কিংবা ‘ডিহাইড্রেশন’-এর মতো বিভিন্ন রোগ দূরে থাকে। ফলে কথায় কথায় ওষুধ খেতে হয় না।
৫) পছন্দের মানুষদের সঙ্গে বেশি করে সময় কাটান। নাগরিক ব্যস্ততা যত বাড়ছে, বন্ধুবান্ধব কিংবা পরিজনের সঙ্গে সময় কাটানোর পরিমাণ তত কমছে। ভবিষ্যতের জন্য দুশ্চিন্তা না করে বর্তমানকে আরও সুন্দর করার চেষ্টা করুন। মানসিক চাপ কমবে।
৬) বলিরেখা কিংবা চুল পেকে যাওয়া নিয়ে অযথা লড়াই করবেন না। অনেকেই বয়সের ছাপ আটকানোর চেষ্টা করেন নিরন্তর, আর সুফল না পেলে দুশ্চিন্তায় মরেন। কুঞ্চিত ত্বক বা পাকা চুল মোটেই অসুন্দর নয়। তাই সব সময়ে যে সেই দিকগুলি দূরে রাখতে হবে, এমন কোনও মানে নেই।
৭) সব সময়ে আগামীর পরিকল্পনা করতে হবে না। পরের জন্মদিনে কী করবেন, আগামী দিনে ডায়াবিটিস হবে কি না, বেতন থেকে কতটা সঞ্চয় করবেন আর কতটা খরচ করবেন, এ সব ভাবার যে দরকার নেই, তা নয়। তবে তারও সীমা রয়েছে। জীবনে কোনও অপূর্ণ সাধ থাকলে বরং সে দিকে নজর দিন। বয়স বেড়ে গিয়েছে বলে গান শিখতে পারবেন না কিংবা হাঁটুর ব্যথা বেড়ে যাবে বলে পাহাড়ে বেড়াতে যাবেন না। কী পারবেন না, তার বদলে ভাবুন কী পারবেন। আগামীর দুশ্চিন্তা বদলে যাবে আগামীর প্রত্যাশায়।