ডায়াবিটিস, থাইরয়েড, ওবেসিটি, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল-ট্রাইগ্লিসারাইডের অসুখ। এই সব কারণেই হৃদ্যন্ত্রের আশপাশে জমছে মেদ। ছবি: শাটারস্টক
বছর তিরিশের নীলাঞ্জন। বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত। এক মাসের মধ্যেই হঠাৎই অফিসে ঢুকে বুকে ব্যথা। হাসপাতালে নিয়ে গেলে বোঝা গেল হার্ট অ্যাটাক। কলেজে পড়াচ্ছিলেন লাবণী। হঠাৎই তীব্র চাপ বুকে। কোনও রকমে কাছের নার্সিং হোমে নিয়ে যাওয়া হলে জানা গেল, মধ্য তিরিশেই তাঁর মাইল্ড অ্যাটাক হয়েছে।
কাজের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চাপ, মানসিক টানাপড়েন তার সঙ্গে খিদে পেলেই ফাস্ট ফুডে পেট ভরানো। মাঝেমধ্যেই উঠে সিগারেটে টান। দিনের পর দিন এই অভ্যাসে অভ্যস্ত হতে হতে তাঁদের শরীরে ঢুকে পড়ছে অল্পস্বল্প ডায়াবিটিস, থাইরয়েড, ওবেসিটি, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল-ট্রাইগ্লিসারাইডের অসুখ। এই সব কারণেই হৃদ্যন্ত্রের আশপাশে জমছে মেদ। শরীরে বাসা বাঁধছে ফ্যাটি হার্টের মতো রোগ।
ফ্যাটি হার্ট কী?
ফ্যাটি লিভার নিয়ে এখন আমরা কমবেশি সচেতন। বিশেষ করে যাঁদের নিয়মিত মদ্যপানের অভ্যাস রয়েছে, তাঁদের অনেকেই ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু ফ্যাটি হার্ট সম্পর্কে সচেতনতা এখনও ততটা নেই। এ ক্ষেত্রে হৃদ্যন্ত্রের চারপাশে মেদের একটি আস্তরণ পড়তে শুরু করে। এই আস্তরণটি একটু মোটা হয়ে গেলে শরীরের ভিতর প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। আর তার জেরে নানা ধরনের শারীরিক অস্বস্তি লেগে থাকে। ফ্যাটি হার্ট থাকলে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাট্যাকের আশঙ্কা বাড়ে। হৃদ্যন্ত্রের অন্যান্য রোগও হতে পারে এর ফলে।
নিয়মিত কি প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খাবার খাচ্ছেন? সে কারণেই হৃদ্যন্ত্রের চারপাশে মেদ জমছে না তো? ছবি: শাটারস্টক।
কী ভাবে এড়ানো যায় এই অসুখ?
খাওয়াদাওয়া এবং শরীরচর্চা— এই দু’দিকে বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি। নিয়মিত কতটা ক্যালোরি ঝরাচ্ছেন, তা খেয়াল করুন। এই অসুখটি প্রধানত জীবনযাপনের ধরনের উপর নির্ভর করে। যদি একদমই ব্যায়াম করার অভ্যাস না থাকে, তা হলে ফ্যাটি হার্টের আশঙ্কা বাড়ে। এর পর ভাবতে হবে খাওয়াদাওয়া নিয়ে। শরীরচর্চা করে যত ক্যালোরি ঝরাচ্ছেন, তার চেয়ে বেশি কি অর্জন করছেন খাবার থেকে? নিয়মিত কি প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খাবার খাচ্ছেন? সে কারণেই কিন্তু হৃদ্যন্ত্রের চারপাশে মেদ জমছে।
কী ভাবে বুঝবেন ফ্যাটি হার্টের সমস্যা আছে?
ফ্যাটি হার্টের সমস্যার তেমন কোনও উপসর্গ হয় না। কিন্তু হৃদ্যন্ত্র সংক্রান্ত অন্যান্য সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে ফ্যাটি হার্টের আশঙ্কা। তবে ফ্যাটি হার্টের সমস্যা থাকলে তা ধরা পড়ে সিটি স্ক্যানে। কিন্তু সাধারণত ফ্যাটি হার্ট আছে কি না, তা দেখার জন্য সিটি স্ক্যান করা হয় না। অন্যান্য সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকরা বলেন, সিটি স্ক্যান করতে। তখন ধরা পড়তে পারে ফ্যাটি হার্টের সমস্যা।