বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩০% মানুষ ফাংশনাল ডিসপেপসিয়ায় ভোগেন। ছবি: শাটারস্টক।
পেটরোগা বাঙালি কখনও ডায়েরিয়া, কখনও বা গ্যাস কিংবা অ্যাসিডিটি, মাঝেমধ্যে গা-গুলিয়ে বমি নিয়ে জেরবার। শীতে ভালমন্দ খেলে একমাত্র চিন্তা, যা খেলাম তা হজম হবে তো? চিকিৎসকদের মতে মূলত ডিসপেপসিয়ার জন্য এই সব সমস্যা হয়।
হজম সংক্রান্ত গোলমাল ও পেটের নানা সমস্যাকে একসঙ্গে ডিসপেপসিয়া বলা হয়। অনেকের ধারণা, বদহজম মানেই ডিসপেপসিয়া। কিন্তু ব্যাপারটা ঠিক তা নয়। বমি ভাব, অম্বল, পেট গুড়গুড় করা, খিদে পেলে বা অন্য সময়ে পেটব্যথা, গলা জ্বালা, কখনও কখনও পেটের মধ্যে গ্যাস হয়ে পেট ফুলে যাওয়া, আবার পর্যায়ক্রমে কোষ্ঠাকাঠিন্য ও ডায়েরিয়া হওয়া— সব একসঙ্গে হলে তাকে বলা হয় ডিসপেপসিয়া ।
‘আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ’-এর হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩০% মানুষ ফাংশনাল ডিসপেপসিয়ায় ভোগেন। চিকিৎসকদের মতে, এই ধরনের সমস্যা মেয়েদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। দুশ্চিন্তা ও অবসাদ থাকলে সমস্যা বাড়ে।
ফাংশনাল ডিসপেপসিয়ার ক্ষেত্রে আজীবন গ্যাস, অম্বল ও হজমের সহায়ক ওষুধ খেয়ে যেতে হতে পারে।
পেটের অসুখ অথবা লাগাতার গ্যাস ও অম্বল হলে নিজেরা ডাক্তারি না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। লাগাতার পেটের সমস্যা হলে, মলের সঙ্গে রক্তপাত হলে বা কালো মলত্যাগ করলে সতর্ক হতে হবে। এই সব লক্ষণের সঙ্গে অনেক সময়ে খাবার গিলতেও অসুবিধা হয়। খেয়াল রাখতে হবে। পেটে হাত দিয়ে কোনও পিণ্ড বোঝা গেলে ম্যালিগন্যান্সির আশঙ্কা করা হয়। এ ক্ষেত্রে সিটি স্ক্যান করতে হতে পারে। তবে বেশির ভাগ সমস্যাই বিনাইন, অর্থাৎ সাধারণ সমস্যা। তা ওষুধ ও ডায়েটের সাহায্যে দূর করা যায় সহজেই।
কী কী খেলে বাড়ে সমস্যা?
দুধ, শাক, গমের তৈরি খাবার যেমন রুটি, বিস্কুট ইত্যাদি খেলে অনেকের সমস্যা হয়। তেলেভাজা খাবার, মিষ্টি, কফি, রোল, চাউমিন রোজের খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। না হলে সমস্যা বাড়বে বইকি। বাড়িতে রান্না করা খাবার খেতে হবে। রান্নায় নুনের মাত্রার উপরেও রাশ টানতে হবে। বেশি নুন খেলে অম্বল বাড়ে। অনেক ক্ষণ না খেয়ে থাকলেও পেটে ব্যথা ও অ্যাসিডিটির ঝুঁকি বাড়ে।
ডিসপেপসিয়া হলে সাময়িক ভাবে ওষুধ সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব। তবে ফাংশনাল ডিসপেপসিয়ার ক্ষেত্রে আজীবন গ্যাস, অম্বল ও হজমের সহায়ক ওষুধ খেয়ে যেতে হতে পারে। পর্যাপ্ত জল পান, হালকা খাবার ও নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করতে হবে। প্রয়োজনে পুষ্টিবিদের সাহায্য নিতে হবে।