অ্যারোমাথেরাপিতে কী কী উপকার মেলে? —ফাইল চিত্র
সামগ্রিক স্বাস্থ্যোন্নতির জন্য অনেকেই অনেক রকম পদ্ধতিতে ভরসা রাখেন। তেমনই একটি পদ্ধতি হল অ্যারোমাথেরাপি। এই পদ্ধতিতে স্বাস্থ্য ভাল রাখতে বিভিন্ন উদ্ভিদের নির্যাস এবং সুগন্ধি ব্যবহার করা হয়। ব্যবহার করা হয় নানা ধরনের অপরিহার্য তেলও। এই তেল ব্যবহার করা হয় বলে একে কেউ কেউ ‘এসেনশিয়াল অয়েল থেরাপি’-ও বলেন। অ্যারোমাথেরাপির বহু ব্যবহারকারীর মতে, প্রাচীন আয়ুর্বেদ এবং আধুনিক বিজ্ঞানের মিশেল হল এই পদ্ধতি। ভারত ছাড়াও চিন ও মিশরে এই পদ্ধতিতে চিকিৎসার উদাহরণ পাওয়া যায়। তবে এখনও প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি হিসাবে একে স্বীকার করেন না অনেকেই।
কী ভাবে করা হয় অ্যারোমাথেরাপি?
অ্যারোমাথেরাপিতে মূলত গন্ধশোঁকা ও ত্বকের শোষণ ক্ষমতাকে কাজে লাগানো হয়। কখনও কখনও বিভিন্ন ধরনের সুগন্ধি ছড়ানোর যন্ত্র, ইনহেলারের মাধ্যমে নাকে বিশেষ গন্ধ পৌঁছে দেওয়া হয়। কখনও স্নান করার বিশেষ ধরনের নুন, সাবান ও তেল ব্যবহার করে ত্বকে মাখানো হয় বিভিন্ন উপাদান। কিছু ক্ষেত্রে মালিশ করা বা ভাপ দেওয়ার মতো পদ্ধতিও ব্যবহৃত হয়। বিশেষ ধরনের কাদামাটি দ্বারা তৈরি মুখোশও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
কী কী উপকার মিলতে পারে?
যাঁরা এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা করেন তাঁদের দাবি, সঠিক ভাবে প্রয়োগ করা হলে অ্যারোমাথেরাপি হরেক রকমের সমস্যায় কাজে লাগতে পারে। শুধু শারীরিক সমস্যা নয়, এই পদ্ধতিতে মানসিক স্বাস্থ্যও ভাল থাকে বলে দাবি তাঁদের। কোন কোন সমস্যার সমাধান মিলতে পারে বলে দাবি করা হয় এই পদ্ধতিতে?
১। ব্যথা বেদনার সমস্যা কমাতে পারে এই পদ্ধতি।
২। অনিদ্রার সমস্যা উদ্বেগ ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে কাজে।
৩। অ্যারোমাথেরাপির তেলে কমতে পারে অস্থিসন্ধির ব্যথা।
৪। মাইগ্রেন ও মাথা যন্ত্রণা কমাতে পারে সুগন্ধি।
৫। কেমোথেরাপির ফলে তৈরি হওয়া নানা রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাতে কাজে আসতে পারে।
৬। প্রসব বেদনার সময়ে আরাম দিতে পারে অ্যারোমাথেরাপি।
৭। পৌষ্টিকতন্ত্রের সমস্যা কমাতে পারে।
৮। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মজবুত করতে কাজে আসে।
৯। হাঁপানি রোগীদের কষ্ট লাঘব করতে কাজে আসতে পারে অ্যারোমাথেরাপি।
১০। লিঙ্গ শিথিলতার মতো সমস্যা কমাতে কাজে আসে অ্যারোমাথেরাপি।
অ্যারোমাথেরাপিকে এখনই মূল ধারার চিকিৎসা বলে না ধরে আনুষঙ্গিক চিকিৎসা পদ্ধতি হিসাবে গণ্য করাই শ্রেয়। —ফাইল চিত্র
তবে অধিকাংশ চিকিৎসকের মতে, এই বিষয়ে এখনও বিস্তারিত গবেষণার অভাব আছে। তাই অ্যারোমাথেরাপিকে এখনই মূল ধারার চিকিৎসা বলে না ধরে আনুষঙ্গিক চিকিৎসা পদ্ধতি হিসাবে গণ্য করাই শ্রেয়। বিশেষত, অসুস্থ রোগীর উপর এই ধরনের যে কোনও পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হলে, সরকারি শংসাপত্র প্রাপ্ত বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া চাই-ই চাই। তা ছাড়া কোনও রোগ দেখা দিলে যাবতীয় প্রচলিত পদ্ধতি একেবারে উপেক্ষা করে পুরোপুরি এই পদ্ধতি ব্যবহার করাও বিচক্ষণতার পরিচয় নয় বলেও মত অনেকের।