Late night sleep side effects

রোজ বেশি রাতে ঘুমোতে যান? নৈশাহার কেমন হলে শরীরে কোনও সমস্যা হবে না?

রাত যদি জাগতেই হয়, তা হলে খাওয়াদাওয়ার দিকেও নজর দিতে হবে। কী কী খেলে রাত জাগার ধকল কমবে, শরীরও পুষ্টি পাবে, জেনে নিন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:০০
Share:

রাত জাগলে কেমন ডায়েট, পরামর্শে পুষ্টিবিদ। প্রতীকী ছবি।

মাঝেমধ্যে রাত জাগতে হলে তেমন সমস্যা হয় না। একটু ঘুম ঘুম ভাব থাকে, মেজাজ খারাপ লাগে, খিদে কম হয়— এই পর্যন্তই। কিন্তু, যদি দিনের পর দিন রাত জাগার অভ্যাস তৈরি হয় এবং প্রায় মধ্যরাত পার করেই ঘুমোতে যান, তা হলে কিন্তু নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দেবে। তার উপর রাত জাগার অনুপান হিসেবে এটা–সেটা খেলে তো কথাই নেই। কাউকে পেশার কারণে রাত জাগতে হয়, কেউ আবার টিভি, ল্যাপটপ নিয়েই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে বেশি রাত করে ঘুমোতে যান। সব ক্ষেত্রেই কিন্তু নির্দিষ্ট রুটিন না মানলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে খুব তাড়াতাড়ি। তাই রাত যদি জাগতেই হয়, তা হলে খাওয়াদাওয়ার দিকেও নজর দিতে হবে।

Advertisement

এই বিষয়ে পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর মত, “রাত জেগে খেলা দেখা বা ওয়েব সিরিজ় দেখার অভ্যাস থাকলে তা একদিনে বন্ধ করা যাবে না। আবার রাতের শিফ্‌টে কাজ করতে হলে সেই নিয়মও বদলানো যাবে না। সে ক্ষেত্রে রোজের বাকি রুটিনগুলিতে সামান্য বদল আনতে হবে। না হলেই ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপের মতো অসুখ বাসা বাঁধবে।” শম্পা আরও পরামর্শ দিলেন, “অফিসে যদি নাইট শিফ্‌টে কাজ করতে হয়, তা হলে একটানা নেওয়ার চেষ্টা করুন। দু’দিন নাইট, তার পরের ক’দিন সকাল, এমন শিফ্‌ট হলে তা শরীর মানিয়ে নিতে পারবে না। তার চেয়ে একটানা কিছু দিন রাতে কাজ করে, মাঝে ছুটি বা অফ ডে নিয়ে নিন। তার পর আবার অন্য শিফ্‌টে ফিরুন। তা হলে সামঞ্জস্য বজায় থাকবে।”

রাত জাগলে খাওয়াদাওয়ায় নজর দেওয়া খুব জরুরি। পুষ্টিবিদের কথায়, রাত ১টায় যদি ঘুমোতে যান রোজ, তা হলে রাতের খাওয়া ৯টার মধ্যেই সেরে নিতে হবে। যাঁরা ১২টায় ঘুমোতে যান, তাঁদেরও কিন্তু ১০টার পর খেলে চলবে না। সে ক্ষেত্রে ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে রাতের খাওয়া সেরে ফেললে ভাল। আরও বেশি রাত জাগতে হলে মদ ও ভাজাভুজি মোটেই চলবে না। ধূমপান যতটা সম্ভব কমাতে হবে। না হলেই অম্বল, বদহজম বাড়তে পারে। ওজন তো বাড়বেই। তলে তলে হার্টের সমস্যাও মাথাচাড়া দেবে।

Advertisement

সে বিপদ এড়াতে কম তেলে ঘরে রান্না করা খাবার খান। পেট একটু খালি রেখেই খেতে হবে। সবচেয়ে ভাল হয় রুটি, ডাল আর সব্জি খেলে। রুটি সহ্য না হলে ওট্‌সের পরিজ খান, ডালিয়ার খিচুড়িও খেতে পারেন। ভাত খাওয়ার অভ্যাস থাকলে এক কাপ খাওয়া যেতেই পারে। সঙ্গে স্যালাড রাখতেই হবে। আর ফাইবারের জন্য খেতে হবে মরসুমি বিভিন্ন সব্জি। তা ছাড়া দরকার যে কোনও এক রকম প্রোটিন। প্রাপ্তবয়স্কদের রোজ ১০০-১৫০ গ্রাম প্রোটিন খেতেই হবে। রাতে অন্তত এক পিস মাছ, ডিম অথবা চিকেন খেতে পারেন। নিরামিষ খেতে হলে সয়াবিন খান।

রাতে খিদে পেলে ভারী খাবার বা ভাজাভুজি একদম চলবে না। ফল খেতে পারেন। শম্পা বলছেন, “অনেকেই ভাবেন, রাতে ফল খাওয়া যায় না। এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। রাত ১টার সময়ে খিদে পেলেও একটা আপেল খেতে পারেন। তবে অম্বলের সমস্যা থাকলে সাইট্রাস জাতীয় ফল, অর্থাৎ টক স্বাদের ফল খাওয়া চলবে না।” আপেল, ন্যাসপাতি, বেদানার মতো ফল রাতেও খাওয়া যায়। তবে আনারস, আঙুর বা লেবু না খাওয়াই ভাল। ফল পছন্দ না হলে বিভিন্ন রকম বাদাম খেতে পারেন। চার-পাঁচটি কাঠবাদাম, ২-৩টি আখরোট হাতের কাছে রেখে দিন। ক্লান্তি কমাতে ও পুষ্টি জোগাতে এগুলির ভূমিকা বিরাট।

রাত জাগলে মুখরোচক কিছু খাওয়ার সাধ জাগে। সে ক্ষেত্রে শসা-পেঁয়াজ দিয়ে রায়তা খেতে পারেন। উপরে হালকা করে গোলমরিচ, মশলা ছড়িয়ে দিন। পনির দিয়ে স্যালাড বানিয়ে রাখুন। রাত জেগে কাজের সময়ে খিদে পেলে খাবেন। ঘুম ছাড়াতে ঘন ঘন চা বা কফিতে চুমুক দিলে পেটের গোলমাল বাড়বে। তার বদলে গ্রিন টি বা যে কোনও ভেষজ চা খেতে পারেন। তবে রাতে যেটুকু ঘুমের ঘাটতি হচ্ছে, তা পরবর্তী সময়ে পুষিয়ে নিতেই হবে। সে ক্ষেত্রে দিনে অন্তত ৬-৭ ঘণ্টা টানা ঘুম জরুরি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement