প্রতি বছর অন্তত এক বার ডায়াবিটিস পরীক্ষা করা প্রয়োজন। ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডায়াবিটিস ফেডারেশনের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, বর্তমানে গোটা বিশ্বে ডায়াবিটিস রোগীর সংখ্যা প্রায় ৫৪ কোটি। ডায়াবিটিস এমন একটি রোগ, যা অধিকাংশ সময় হানা দেয় রোগীর অজান্তেই। যখন ধরা পড়ে, তখন ক্ষতি হয়ে যায় অনেকটা। পাশাপাশি ডায়াবিটিস একা আসে না, ডেকে আনে আরও হাজার রকমের সমস্যা। দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাস এই রোগ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই যত তাড়াতাড়ি রোগ নির্ণয় করা যায়, তত সুবিধা হয় চিকিৎসায়।
এত দিন মনে করা হত, ৪৫ বছর বয়স হয়ে গেলেই উপসর্গ থাক বা না থাক, প্রতি বছর অন্তত এক বার ডায়াবিটিস পরীক্ষা করা প্রয়োজন। কিন্তু এখন আর ৪০ পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত হবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ‘আমেরিকান ডায়াবিটিস অ্যাসোসিয়েশন’ বলছে, তিন দশক আগেও শিশু ও তরুণ-তরুণীদের দেহে এই রোগ ছিল অত্যন্ত বিরল। কিন্তু গত তিন দশকে এই ছবি বদলে গিয়েছে। তাই ছোট থেকেই রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
ছোট থেকেই রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। ছবি: সংগৃহীত
কোন বয়সে রক্তে শর্করার মাত্রা কত হওয়া স্বাভাবিক?
কোন কোন লক্ষণ দেখে বুঝবেন শরীরে ডায়াবিটিস বাসা বেঁধেছে?
ঘন ঘন প্রস্রাবের অভ্যাস তৈরি হচ্ছে কি? তা হলে সাবধান হোন। রক্তে শর্করা বাড়লে তা কিডনিতে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে, শরীর থেকে অতিরিক্ত শর্করা বার করে দেওয়ার জন্যই এই চাপ। তাই ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। এমন হলে অবশ্যই রক্ত পরীক্ষা করান। হাত-পা কিংবা হাত-পায়ের কোনও আঙুল কি অবশ হয়ে পড়ছে? এমন হলে দ্রুত সতর্ক হতে হবে রক্তে শর্করা বাড়ার এটি অন্যতম লক্ষণ। রক্তে শর্করা বাড়লে তা বার করার জন্য কিডনিতে চাপ দেয় বলে যেমন ঘন ঘন প্রস্রাব হয়, তেমনই অতিরিক্ত প্রস্রাবের কারণে শরীরের জল বেরিয়ে যায়। তাই জল তেষ্টাও পায় প্রবল। এমনকি, রাতে ঘুমের মধ্যেও জিভ শুকিয়ে জল তেষ্টা পায় বার বার। শরীরে কোনও ঘা অনেক দিন ধরে না শুকোলে সতর্ক হোন। ক’দিন ধরে কি হঠাৎই চোখে কম দেখছেন? চশমা বদলানো বা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়াও এক বার ব্লাড সুগার পরীক্ষা করান। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে তার প্রভাব পড়ে দৃষ্টিশক্তির উপরও। সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন? হাঁপিয়ে যাচ্ছেন প্রায়ই? খুব অল্পেই হাঁপিয়ে ওঠা রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধির লক্ষণ। এর ফলে ডিহাইড্রেশনের শিকার হয় শরীর। ফলে দুর্বলতা বাড়ে।