এই অতিমারি পরিস্থিতিতে টেলিভিশনের সঙ্গে সময় যেন আরও বেশি সময় কাটছে সবার
টেলিভিশনহীন জীবন আজকের দিনে কল্পনা করাই দুরূহ। দেশ-বিদেশের খবর, চলচ্চিত্র, সিরিজ কিংবা সিরিয়াল দেখার জন্য সমস্ত বয়সের মানুষই টিভির সামনে ব্যয় করেন অনেকখানি সময়। বাচ্চারা ভালবাসে অ্যানিমেশন দেখতে, আবার বয়স্ক মানুষেরা সময় কাটান সিরিয়াল দেখে বা দেশ-বিদেশের খবর শুনে। তা ছাড়া এই অতিমারি পরিস্থিতিতে টেলিভিশনের সঙ্গে সময় যেন আরও বেশি সময় কাটছে সবার। অথচ বিশেষজ্ঞরা কিন্তু টেলিভিশন সম্পর্কে দিচ্ছেন নানান সতর্কবার্তা।
এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, অবসর সময়ে টিভি দেখার অভ্যাস মানুষের হৃদরোগ এবং মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। বিবিধ সমীক্ষায় জানা যায়, যাঁরা টেলিভিশন দেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়েছেন তাঁদের হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকে তাড়াতাড়ি মারা যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে গত কয়েক বছরে। যাঁরা দু'ঘণ্টার কম টিভি দেখেন, তাঁদের তুলনায় যাঁরা দিনে চার ঘণ্টার বেশি সময় টিভির সামনের সামনে বসে থাকেন তাঁদের হৃদরোগ এবং ধমনী সংক্রান্ত রোগের কারণে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ৮০ শতাংশ বেশি। এমনকি যদি কারও শারীরিক কোনও অসুস্থতা না থাকে, তবুও দীর্ঘ সময় ধরে টেলিভিশনের সামনে বসে থাকা তাঁদের রক্তে শর্করা এবং রক্তে ভাসমান চর্বির উপর অস্বাস্থ্যকর প্রভাব ফেলে। ফলে হৃদয় দুর্বল হয়ে পড়ে ক্রমশ।
অবসর সময়ে টিভি দেখার অভ্যাস মানুষের হৃদরোগ এবং মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে
গবেষকরা প্রাপ্তবয়স্কদের কয়েক বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন যে, টেলিভিশন দেখার অভ্যাস তাঁদের স্বাস্থ্যের উপরে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে। বিশ্বের তাবড় চিকিৎসকদের মতেও টেলিভিশনের সামনে প্রতিদিন কাটানো প্রতিটি ঘন্টা মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি ১১ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। স্পষ্ট জানা গেছে যে, টিভি দেখার অভ্যাস মানুষের ক্যানসারে মৃত্যুর ঝুঁকি ৯ শতাংশ এবং হৃদরোগজনিত মৃত্যুর ঝুঁকি ১৮ শতাংশ বাড়িয়েছে। এছাড়াও বহু ক্ষণ বসে বসে টিভি দেখার ফলে মেদ বৃদ্ধি পায়, বাড়ে অবসাদও। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে নেতিবাচক মানসিক প্রভাবকেও এড়িয়ে যাওয়া যায় না।