পুজোর ছুটি কাটিয়ে ফিরে শরীর ও মন ক্লান্ত? কী করবেন? ছবি: ফ্রিপিক।
পুজোর চার-পাঁচ দিন হই-হুল্লোড়ে কাটিয়ে আর এখন কাজে ফেরার উৎসাহ নেই অনেকেরই। উৎসব-পরবর্তী ক্লান্তি শরীর ও মনে জাঁকিয়ে বসেছে। মন কিছুতেই যেন আর গতে বাঁধা কাজে ফিরতে চাইছে না। গত কয়েক দিনে খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম, রাস্তাঘাটে চরকি পাক মারার পরে শরীরও ক্লান্ত। তাই কী কী করলে কর্মক্ষেত্রে উৎসাহ ও উদ্যম দুই-ই ফিরে পাবেন, জেনে নিন।
ঘুমোনো ও ঘুম থেকে ওঠা
মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের মতে, সবচেয়ে আগে ঘুমোতে যাওয়া ও সকালে ঘুম থেকে ওঠার রুটিনে বদল আনতে হবে। ছুটির দিনগুলিতে যথেষ্টই অনিয়ম হয়েছে। তাই স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করতে হবে। সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা ও রাতে তাড়াতাড়ি শুতে যাওয়ার অভ্যাস সর্বাগ্রে করতে হবে। এই দুই অভ্যাস মেনে চললে শরীরের ঘড়ি বা ‘বায়োলজিক্যাল ক্লক’ আবার আগের মতোই চলতে শুরু করবে।
শরীরচর্চা
গত কয়েক দিনের অনভ্যাসের পরে হঠাৎ করে ভারী ব্যায়াম করতে গেলে হিতে বিপরীত হবে। তাই হালকা ব্যায়াম দিয়ে শুরু করুন। সকালে উঠে হালকা যোগাসন ভাল। শ্বাসের কিছু ব্যায়াম ও কপালভাতি করতে পারেন। তার পরে খোলা হাওয়ায় হাঁটাহাঁটি বা স্পট জগিং করা যায়। এতে শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরবে, ক্লান্তি ভাব কাটবে। দৌড়নো, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো নিয়ম করে করলে শরীর ও মনের ক্লান্তি কেটে যাবে। শরীর ধীরে ধীরে ধাতস্থ হলে তার পর ভারী ব্যায়ামে ফিরে যান।
নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া
পুজোয় খাওয়াদাওয়ায় ষথেষ্ট অনিয়ম হয়েছে। তাই আগে শরীর ‘ডিটক্স’ করতে হবে বা দূষিত পদার্থ বার করতে হবে। পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলছেন, “সকালে ঘুম থেকে উঠে সবচেয়ে আগে জরুরি ডিটক্স পানীয়। ছোট ছোট করে ফল কেটে তা সারা রাত জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে খাওয়া যেতে পারে। অথবা মৌরি-মেথি ভেজানো জল, ত্রিফলা চূর্ণের জল বা হালকা গরম জলে লেবুর রস মিশিয়েও খেতে পারেন। সবই ডিটক্স পানীয়।” সারা দিনের খাবারে প্রোটিন বেশি রাখবেন না। যে কোনও দু'টি পদ খেতে হবে। মাছ হলে হালকা করে সব্জি দিয়ে ঝোল আর ভাত অথবা চিকেনের ঝোল আর ভাত। সঙ্গে স্যালাড আর টক দই রাখুন। দু'টি মিলের মাঝে ফল খান। রাতের খাওয়া সাড়ে ৮টার মধ্যে সেরে নিতে হবে। এই ভাবে শুরু করলে হজমের প্রক্রিয়া আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
পর্যাপ্ত জল
শরীর আর্দ্র রাখতে জল খেতেই হবে। দিনের আড়াই থেকে তিন লিটার জল খাওয়া আবশ্যক। এতে চাঙ্গা হবে শরীর।
মন ভাল রাখতে
মোবাইল, ল্যাপটপ বা বেশি টিভি দেখা বন্ধ করতে হবে। নেটমাধ্যমে বেশি থাকলেও উৎসবের মেজাজ থেকে বেরোতে পারবেন না। মোবাইল না ঘেঁটে বরং একটু বাইরে থেকে হেঁটে আসুন। কাছাকাছি পার্ক থাকলে সেখানে কিছুটা সময় কাটান। গাছপালার যত্ন নিন। নতুন গাছ কিনে এনে ঘর সাজাতে পারেন। এতে মানসিক ক্লান্তি দূর হবে।