যশ-নুসরত।
কেমন সাজলে শুধু সুন্দর নয়, সময়ের সঙ্গে মানানসই দেখাবে নিজেকে— পোশাক নির্বাচনের সময়ে সেটাই মেনে চলেন জনপ্রিয় তারকাদম্পতি নুসরত জাহান ও যশ দাশগুপ্ত।
শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে যশ-নুসরত প্রযোজিত প্রথম ছবি ‘সেন্টিমেন্টাল’। তারই প্রচারের ফাঁকে শুটিংয়ের জন্য সময় বার করেছিলেন এই জুটি। ‘সেন্টিমেন্টাল’-এ একজন পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় রয়েছেন যশ। ‘‘অনেক ধরনের চরিত্রে যশকে দেখা গেলেও পুলিশ অফিসারের লুকে সবচেয়ে হ্যান্ডসাম লেগেছে ওকে। যদিও একথা মানে না ও। ওর আজও ‘গ্যাংস্টার’-এর লুকই পছন্দ। কিন্তু ওই সময়কার যশের চেয়ে এখন ও অনেক পরিণত,’’ উষ্ণ কফিতে গলা ভিজিয়ে বললেন নুসরত।
এই ছবি করতে গিয়ে প্রায় পাঁচ-ছয় কিলো ওজন বাড়িয়েছেন অভিনেত্রী। তবে বাংলা বাণিজ্যিক ছবিতে একটু ভারী চেহারার নায়িকাই পছন্দ করেন দর্শক। তাই পোশাক নির্বাচনের ব্যাপারে আরও সতর্ক তিনি। নায়িকা জানালেন, তিনি আর যশ ফ্যাশনের জোয়ারে গা ভাসানোর পক্ষপাতী নন। “যা অন্যদের চোখে দারুণ আর্কষক কিন্তু পরলে অস্বস্তি বোধ হয়, সেই পোশাক দূরে সরিয়ে রাখি। পোশাকটি পরে যেন আত্মবিশ্বাসী লাগে নিজেকে। অন্যদেরও বলব স্মল, মিডিয়াম, প্লাস সাইজ় যা-ই হোক, চেহারা অনুযায়ী পোশাক নির্বাচন করুন। পোশাকের ভিড়ে নিজের ব্যক্তিত্ব, স্মার্টনেস যেন হারিয়ে না যায়।”
‘সেন্টিমেন্টাল’-এর গানে চিরাচরিত পোশাকের ট্রেন্ড ধরে এগোননি তাঁরা। যশ বললেন, ‘‘রোম্যান্টিক গানে নায়ক-নায়িকাকে উজ্জ্বল সাজপোশাক পরানোর চল ভেঙেছি আমরা। ছবির ‘আর কেউ নেই আমার পাশে’’ রোম্যান্টিক গানে নুসরতের সাজ সাদামাঠা। উল্টো দিকে আমি গ্লিটারি শার্ট, সাতটা রঙের এমব্রয়ডারি করা উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরেছি। আবার ‘কী একখান গান বানাইসে’-তে পোশাকে সম্পূর্ণ ভিন্ন রং বাছা হয়েছে,’’ বলেই স্ত্রীর হাতে বানানো চায়ে চুমুক দিলেন নায়ক। শুটিংয়ে বা বাড়িতে একে অপরের জন্য চা-কফিটা নিজেরাই বানান তাঁরা।
শহর জুড়ে এখন শীতের মরসুম। শীত ভীষণ প্রিয় তারকা দম্পতির কাছে। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘৮ জানুয়ারি আমার জন্মদিন। ফলে শীতকে ঘিরে আলাদা ভাল লাগা আছেই। আবহাওয়া এতটাই ভাল থাকে যে, ক্লান্ত না হয়ে কাজে বেশি এনার্জি পাই।’’ শীতের সাজে সাসটেনেবল পোশাকের উপরে জোর দিয়েছেন এই তারকাদম্পতি। নুসরত বললেন, ‘‘প্রতি বছর কয়েকটা হুডি জ্যাকেট কিনে দু’জনে শেয়ার করি। এজন্যই ইনস্টাগ্রামে একই পোশাকে যশ ও আমাকে আলাদা ছবি পোস্ট করতে দেখবেন।’’ সঙ্গে জুড়লেন যশ, ‘‘ব্লেজ়ার পরতে ভীষণ ভালবাসি। এই সময়টায় নানা ধরনের ব্লেজ়ার পরা যায়, বাছার জন্য সচেতন হতে হয় না। সেটা শীতপ্রেমের একটা কারণ।’’
শুটিংয়ের জন্য রাখা হরেক পোশাকের মধ্যেও ডিজ়াইনার দীপক অ্যান্ড মধুর ভেলভেট ব্লেজ়ার বাছলেন অভিনেতা। আর নুসরত ডিজ়াইনার শিপ্রা কারনানির প্লিটেড ক্রপড টপ ও প্যান্টস। তাঁর স্নিগ্ধ রূপের সঙ্গে তাল মিলিয়েছে হালকা লিপস্টিক ও এলো চুলের চাঞ্চল্য। যশ বললেন, ‘‘হালকা সাজলেই নুসরতকে ভাল লাগে। ‘ক্রিসক্রস’, ‘জুলফিকার’ দুটো ছবিতেই নুসরতের লুক এখনও চোখে লেগে রয়েছে।’’ স্বামীর প্রশংসা মনে ধরেছে গিন্নির। কোমল সুদের অফ শোল্ডার সিকুইনের শর্ট ড্রেস পরলেন তিনি। নুসরতের কথায়, ‘‘শীতের পার্টি ইনডোর হলে ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখা হয়। বাইরে ওই ড্রেসের উপরে জ্যাকেট চাপালেই হল। ককটেল পার্টিতে অবশ্য শাড়িই পছন্দ। যশও আমাকে এই লুকে দেখতে ভালবাসে।’’ যশের পরনে রাতুল সুদের সিকুইনের কাজ করা অ্যাসিমেট্রিক্যাল ইন্দো-ওয়েস্টার্ন কোট।
জানা গেল, যশের সাদা শার্টের কালেকশন হার মানাবে যে কোনও ফ্যাশনিস্তাকে। কারণ, ৩৬৫দিনই তাঁর পছন্দের রং সাদা। ডিজ়াইনার সাগর নিহালনির সাদা-কালো ব্লেজ়ার বাছলেন যশ। নুসরতের পরনে ডিজ়াইনার দীপিকা আগরওয়ালের গোল্ডেন কাট আউট ড্রেস। সঙ্গে গোল্ডেন বুটস শীত সাজের অনুষঙ্গ। শহর জুড়ে যখন তাপমাত্রা কমছে, তখন ফ্যাশনশুটের উষ্ণতার পারদ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিলেন এই তারকাজুটি।