Brain Power

স্মৃতির ভাঁড়ার মজবুত হবে রোজের কিছু অনুশীলনে, সহজ উপায় বাতলে দিলেন মনোবিদ

ছোট ছোট বিষয়, সদ্য ঘটা ঘটনাও স্মৃতির পাতা থেকে বেমালুম উধাও হয়ে যায় অনেক সময়ে। অতিরিক্ত কাজের চাপ, উদ্বেগ, এমনকি পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে মনঃসংযোগের সমস্যা দেখা দেয়। ভুলে যাওয়ার সমস্যা এখন অনেকেরই। এই সমস্যা যে রাতারাতি ঠিক হবে, তা নয়। তবে রোজের কিছু অনুশীলন সহায়ক হতে পারে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৫৫
Share:
These Brain exercises to improve memory in 30 days

স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর সহজ উপায় শিখে নিন, বিস্তারিত বললেন মনোবিদ। ফাইল চিত্র।

স্মৃতিশক্তি কী ভাবে বাড়ানো যায় তার কৌশল সকলের ক্ষেত্রে সমান নয়। স্মৃতিশক্তি কারও জোরালো, কারও বা দুর্বল। কারও ভুলে যাওয়ার সমস্যা সাময়িক, কারও আবার স্মৃতির পাতাই ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। কেউ নির্দিষ্ট কিছু ঘটনা তাঁর অবচেতনে ধরে রাখতে পারেন, আবার কারও প্রৌঢ়ত্বে পৌঁছেও শৈশবের স্মৃতি টাটকা থাকে। মস্তিষ্ক বড়ই জটিল, আর ততটাই জটিল তার কর্মক্ষমতা। তাই রাতারাতি স্মৃতি বাড়ানোর পন্থা বাতলে দেওয়া কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। তবে রোজের বেশ কিছু অনুশীলন আছে, যা রপ্ত করতে পারলে মনে রাখার ক্ষমতা ধীরে ধীরে বাড়তে পারে।

Advertisement

এই বিষয়ে মনোরোগ চিকিৎসক শর্মিলা সরকার বলেন, “মস্তিষ্কের ‘ডিজেনারেশন’ অর্থাৎ ক্ষয় শুরু হয়েছে যাঁর, তাঁর ক্ষেত্রে সাধারণ টোটকা কাজে আসবে না। সে ক্ষেত্রে পুরনো স্মৃতি মনে করানোর পদ্ধতি আলাদা। তবে যাঁরা রোজের ছোটখাটো বিষয় ভুলে যাচ্ছেন অথবা যাঁদের সাময়িক ভাবে স্মৃতির পাতা ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে,তাঁরা কিছু অভ্যাস অনুশীলন করে দেখতে পারেন।”

শর্মিলার মতে, মনে রাখার ক্ষমতা বাড়াতে কমবয়সিদের নানা রকম ব্রেন-গেম খেলতে দেওয়া হয়। যেমন ক্রসওয়ার্ড বা শব্দছক সমাধানের খেলা। বিভিন্ন পত্রিকায় শব্দছক আকছার পাওয়া যায়। এ সব সমাধানের জন্য মস্তিষ্ককে খাটতে হয়, সঙ্গে শব্দের ভাঁড়ারও বাড়ে।

Advertisement

অভিধান পড়ার অভ্যাস করাও খুবই ভাল ব্যায়াম। বাংলা হোক বা ইংরেজি, অভিধান পড়ে প্রতি দিন দশটি করে শব্দ লিখে রাখুন খাতায়। দিনের শেষে তার কতগুলি মনে রাখতে পারছেন, দেখুন। না পারলে আবার পড়ুন, তার পর লিখে ফেলুন শব্দগুলি। এতে যেমন মনে রাখার ক্ষমতা বাড়বে, তেমনই নতুন নতুন শব্দও শেখা যাবে।

রোজের ছোট ছোট বিষয় যাঁরা ভুলছেন, তাঁদের জন্য অন্য এক রকম খেলা রয়েছে। শর্মিলার কথায়, “বাড়ির লোকজনকে বলা হয়, যে কোনও পাঁচটি জিনিস সেই ব্যক্তিকে দেখিয়েই লুকিয়ে ফেলুন। কোথায় লুকোচ্ছেন, তা-ও দেখান। কিছু ক্ষণ পর তাঁকে সেই সব জিনিস খুঁজে আনতে বলুন। আপাতভাবে সহজ মনে হলেও, অনেকেই তা পারেন না। এ থেকেই বোঝা যায়, কেউ সাময়িক স্মৃতিনাশের সমস্যায় ভুগছেন কি না। বার বার নানা রকম ভাবে এই পরীক্ষা করে দেখে নিশ্চিত হওয়া যায়।”

সুদোকু বা পাজল বোর্ড সমাধান করলেও মস্তিষ্কের ধার বাড়তে পারে। পাশাপাশি নানা স্বাদের বই পড়া, কবিতা মুখস্থ করাও খুবই ভাল অভ্যাস। নিয়মিত পড়ার অভ্যাসে মস্তিষ্ক উদ্দীপিত হয়। পারলে মাঝেমাঝে জোরে পড়ুন বা পড়ার পর কারও সঙ্গে আলোচনা করুন৷ দেখুন, কতটুকু মনে থাকছে। এই বিষয়ে মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের মত, "লেখালিখি শুরু করুন৷ সে কবিতা হোক বা গদ্য৷ রোজনামচা হোক বা প্রবন্ধ৷ নতুন প্লট ও শব্দের খোঁজে মস্তিষ্কের ব্যায়াম হবে৷ বন্ধুরা মিলে মেমরি গেম খেলতে পারলে তো কথাই নেই৷"

ডিমেনশিয়ার রোগীদের ক্ষেত্রে প্রায়ই ‘লুসিড ইন্টারভ্যাল সিম্পটম’ দেখা যায়। এক-এক সময়ে তাঁরা পরিবার, কাছের মানুষ, বাড়িঘর, কিছুই মনে করতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে তাঁদের পুরনো অ্যালবামের ছবি দেখিয়ে বা পুরনো ঘটনা বার বার বলে স্মৃতি ফেরানোর চেষ্টা করা হয়। এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা নাম মনে করতে পারেন না অথবা কারও মুখ বা চেহারা মনে রাখতে পারেন না। তাঁদের ক্ষেত্রেও পুরনো অ্যালবাম দেখে সেই ব্যক্তিকে চেনা বা তাঁর নাম মনে করতে বলা হয়। রোজ এই অভ্যাস করতে পরামর্শ দেওয়া হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement