— প্রতীকী চিত্র।
রোজ একঘেয়ে খাবার খেতে ভাল না লাগলে, বাড়িতে হঠাৎ অতিথি এলে কিংবা স্বাদবদল করতে সমাধান একটিই— ‘ফাস্ট ফুড’। পাড়ার মোড়ে জ্বলজ্বল করতে থাকা এই বিপণিগুলিতে যে ধরনের খাবার পাওয়া যায়, সেগুলিতে ক্যালোরির মাত্রাও বেশি এবং স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভাল নয়। তা সত্ত্বেও শুধুমাত্র স্বাদের কারণে এই সব খাবার খেয়ে ফেলার প্রবণতা দেখা যায় অনেকের মধ্যে। আগেও এই ধরনের ফাস্ট ফুড খাওয়ার চল ছিল। তবে একটি সমীক্ষা বলছে, আমেরিকায় ২০১৩ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে তার হার বেড়েছে প্রায় ৩৭ শতাংশ। ভারতের পরিসংখ্যানটি নেহাত কম নয়। অনেকেই জানেন, এ ধরনের খাবার খেতে ভাল লাগছে বলেই একটানা খেয়ে ফেলা যায় না। শরীর খারাপ হয়। পেটেরও গন্ডগোল হতে পারে। কিন্তু এই খাবারগুলি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে কেমন প্রভাব ফেলে, তা জানা আছে কি?
হার্টের সমস্যা
এই ধরনের খাবারে যে পরিমাণ তেল ব্যবহার করা হয়, তা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। দিনের পর দিন এই চর্বিজাতীয় পদার্থগুলি ধমনীর দেওয়ালে জমতে থাকে। ফলে হার্টে রক্ত জোগানের গতি শ্লথ হয়ে যেতে পারে। ফলে হৃদ্যন্ত্র বিকল হয়ে যেতেই পারে।
রক্তে শর্করায়
বেশির ভাগ ফাস্ট ফুডে কার্বোহাইড্রেট অনেক বেশি। ফাইবার নেই বললেই চলে। পরিপাকের সময়ে এই সব খাবার থেকেই রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। ডায়াবিটিস তো বটেই, সেখান থেকে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও বিকল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
শ্বাসযন্ত্র
বেশি ফাস্ট ফুড খেলে স্থূলতার সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকেরা বলছেন, দেহের ওজন অতিরিক্ত হলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়তে পারে। দেহের এই অতিরিক্ত মেদ ফুসফুসের উপর চাপ সৃষ্টি করে। ফলে সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা, সামান্য চলা-ফেরা করতে গিয়ে হাঁপিয়ে পড়েন অনেকে।
প্রজননতন্ত্র
মুখরোচক এই জাতীয় খাবার কিন্তু প্রজননে সমস্যা তৈরি করতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ফাস্ট ফুডে থাকা এক ধরনের রাসায়নিক প্রজনেন অংশগ্রহণকারী হরমোনের কার্যকারিতা কমিয়ে আনে। ফলে সন্তানধারণে সমস্যা দেখা দিতে পারে। গর্ভে ভ্রূণের বেড়ে ওঠায় অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় এই রাসায়নিক।
মানসিক স্বাস্থ্য
শুধু শরীরের নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের উপরেও প্রভাব ফেলে ফাস্ট ফুড। ২০২০ সালে চিনে হওয়া একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং নরম পানীয়ে থাকা বিভিন্ন যৌগ অবসাদ বাড়িয়ে তোলে। এ ছাড়াও নানা ধরনের মানসিক সমস্যার নেপথ্যে রয়েছে এই জাতীয় খাবার।