চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এই টাইপ ৩সি বাকি ডায়াবিটিসের ধরনগুলির চেয়ে বেশি ক্ষতিকর। ছবি: সংগৃহীত
এ দেশে ডায়াবিটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। বেশির ভাগই টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবিটিসের শিকার। ডায়াবিটিসের এই দু’টি ভাগ সম্পর্কেই সকলে অবগত। অনেকেই জানেন না ডায়াবিটিসের আরও একটি ভাগ রয়েছে। সেটি হল় ডায়াবিটিস টাইপ ৩সি। এই ধরনের ডায়াবিটিস সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এই টাইপ ৩সি বাকি ডায়াবিটিসের ধরনগুলির চেয়ে বেশি ক্ষতিকর।
টাইপ ৩সি ডায়াবিটিস কী?
দীর্ঘ ‘প্যানক্রিয়াটাইটিস’ টাইপ ৩সি ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ দায়ী। দীর্ঘ দিন অগ্ন্যাশয়ে তৈরি হওয়া ক্ষত এই ধরনের ডায়াবিটিসের জন্ম দেয়। টাইপ ৩সি ডায়াবিটিস হয় যখন অগ্ন্যাশয় শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ কমে যায় এই ডায়াবিটিসে। অথচ ইনসুলিন শরীরের একটি অত্যন্ত উপকারী উপাদান। ইনসুলিন রক্তে উপস্থিত গ্লুকোজকে শরীরের প্রতিটি কোষে পাঠাতে এবং শরীরের ভিতর থেকে শক্তি জোগাতে প্রয়োজন হয়। টাইপ ৩সি ডায়াবিটিস থাকলে অগ্ন্যাশয় খাদ্য হজম করার জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম তৈরি করতে সক্ষম।
ছবি: সংগৃহীত
আর কী কী কারণে হতে পারে টাইপ ৩সি ডায়াবিটিস?
এই ধরনের ডায়াবিটিস হওয়ার বড় কারণ হল অগ্ন্যাশয়ের রোগ। এ ছাড়াও শরীরের অতিরিক্ত ওজন, উচ্চ রক্তচাপের রোগীদেরও এই ডায়াবিটিস হতে পারে।
টাইপ ৩সি ডায়াবিটিসের লক্ষণগুলি কী কী?
১) হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া এই রোগের অন্যতম লক্ষণ। কোনও রকম চেষ্টা ছাড়াই যদি ওজন কমতে থাকে, তা হলে কিন্তু চিকিৎসকরে কাছে যাওয়া প্রয়োজন। ওজন কমে যাওয়া টাইপ ৩সি ডায়াবিটিসের লক্ষণ।
২) বেশ কিছু দিন ধরে কোনও কারণ ছাড়াই কি পেট ব্যথা করছে? বা মাঝেমাঝে পেট খারাপ হচ্ছে? এই ঘন ঘন পেট খারাপের নেপথ্যে থাকতে পারে টাইপ ৩সি ডায়াবিটিস।
৩) আপনি যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্লান্ত বোধ করেন তা হলে ফেলে রাখবেন না। যদি দীর্ঘ দিন ধরে এমন চলতে থাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
খেয়াল রাখুন এই লক্ষণগুলির দিকে। যদি এমন কিছু পরিবর্তন নিজের মধ্য চোখে পড়ে অতি অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যান। যদি টাইপ ৩সি ডায়াবিটিস হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে রোজের জীবনে কিছু বদল আনতে হবে।
১) ফল, শাকসব্জি বেশি করে খেতে হবে। খাওয়াদাওয়ায় বাড়তি নজর দিন। বাইরের খাবার, মিষ্টি একদম খাবেন না। প্রচুর জল খেতে হবে।
২) যদি ধূমপানের অভ্যাস থেকে থাকে, সে ক্ষেত্রে ওই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসুন।
৩) রোজ হাঁটাচলা, শরীরচর্চা করুন। ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে শরীরচর্চার বিকল্প নেই। সেটা ভুলে গেলে চলবে না।