হৃদ্রোগ ঠেকাতে রোজের ডায়েটে কোন বদল আনবেন? ছবি: সংগৃহীত।
হার্ট অ্যাটাক এখন আর বয়স দেখে হয় না। কমবসয়িদের মধ্যেও এই রোগের প্রকোপ বাড়ছে। জিনগত কারণে বা জন্মগত ভাবে হার্টের রোগ থাকলে আলাদা কথা। কিন্তু তেমন কোনও কারণ ছাড়াই অতর্কিতে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঘটনা নেহাত কম নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বলছে, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসের মতো প্রাথমিক বিষয়গুলিকেই হার্টের রোগের কারণ বলে চিহ্নিত করা হয়। সম্প্রতি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে রোজের ডায়েটে প্রোটিন খাওয়ায় সামান্য বদল আনলেই হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। ৩০ বছর ধরে প্রায় ২ লক্ষ মানুষকে নিয়ে পরিচালিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে কার্ডিয়োভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমাতে চাইলে ডায়েটে প্রাণিজ প্রোটিনের বদলে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন রাখতে হবে।
আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিকাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, যাঁরা প্রাণিজ প্রোটিন নির্ভর ডায়েটের বদলে উদ্ভিজ প্রোটিন নির্ভর ডায়েট মেনে চলেন তাঁদের হৃদ্রোগের ঝুঁকি ১৯ শতাংশ আর করোনারি হার্ট জিজ়িজ়ের ঝুঁকি ২৭ শতাংশ কমে।
দেহ গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা হয়। কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা, ফ্যাট বা স্নেহপদার্থ এবং প্রোটিন। মানবদেহে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হয় মূলত মাছ, মাংস, ডিম, দুধের মতো প্রাণিজ খাবার থেকে। নিরামিষাশী মানুষরা প্রোটিন পান মূলত ডাল ও বাদামের মতো খাবার থেকে।
গবেষণার প্রধান অ্যান্ড্রিয়া গ্লেন বলেন, ‘‘আমেরিকার বাসিন্দাদের ডায়েটে উদ্ভিজ প্রোটিন ও প্রাণিজ প্রোটিনের গড় অনুপাত ১:৩। তবে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে এই অনুপাত ১:২ হলে কার্ডিয়োভাসকুলার রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে যে ডায়েটে কেবল মাংসের পরিমাণ কমালেই হবে না, রোজের ডায়েটে মাংসের বদলে কী রাখছেন সেটাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। ডায়েটে রেড মিট ও প্রক্রিয়াজাত মাংসের বদলে উদ্ভিজ প্রোটিন সমৃদ্ধ বীজজাতীয় খাবার, ডাল বেশি করে রাখতে হবে। এই উদ্ভিজ প্রোটিনের মধ্যে থাকা ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন, খনিজ এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং শরীরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।