নাক ডাকার সমস্যা থেকেই বাড়তে পারে মৃত্যুর ঝুঁকি। ছবি: শাটারস্টক।
রাতে সময় মতো ঘুমোতে যাচ্ছেন। কিন্তু চোখে নেই ঘুম। এলেও ঘুমের মধ্যে অস্বস্তি হচ্ছে। রাতে ঘুম নেই, আর দিনের বেলায় রয়ে যাচ্ছে ঘুম ঘুম ভাব, ক্লান্তি। এরই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নাক ডাকার সমস্যা। নাক ডাকার সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। তবে অনেকেই তেমন গুরুত্ব দেন না। তবে অত্যধিক নাক ডাকার সমস্যা শুরু হলে কিন্তু সতর্ক হতে হবে। এটি হতে পারে স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ। এমসের প্রাক্তন ডিরেক্টর চিকিৎসক রণদীপ গুলেরিয়া সম্প্রতি বলেছেন, ভারতে স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা দিন দিন বাড়ছে।
কেন হয় এই সমস্যা?
ঘুমের মধ্যে শ্বাস নিতে না পারার সমস্যাই হল স্লিপ অ্যাপনিয়া। ওজন বেশি হলে ঘুমের সময়ে শ্বাসনালির উপর বেশি চাপ পড়ে ও শ্বাসপ্রক্রিয়া বাধা পায়। এতে মস্তিষ্ক ও শরীরের কোষগুলিতে অক্সিজেন সরবরাহ হঠাৎই অনেকটা কমে যায়। ফলে স্লিপ অ্যাপনিয়ার প্রভাবে আকস্মিক শ্বাসপ্রক্রিয়া ব্যাহত হয়ে মৃত্যু হতে পারে। মদ্যপান ও ধূমপানের মতো অভ্যাসের কারণেও এই অসুখের আশঙ্কা বাড়ায়। আবার অনেকেই ঘুম ভাল হচ্ছে না ভেবে ঘুমের ওষুধ খান। তাতে হিতে বিপরীত হয়। এ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিসের মতো রোগ থাকলেও এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
চিকিৎসক রণদীপের মতে, ভারতে স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়লেও এই রোগ নিয়ে কিন্তু সচেতনতা বাড়েনি। রণদীপ বলেছেন, ‘‘স্লিপ অ্যাপনিয়া বড় সমস্যা, চটজলদি এই রোগের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায় না। বেশির ভাগ লোকই স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণেই নাক ডাকেন। এই রোগের কারণেই অনেকে অনিদ্রার সমস্যায় ভোগেন। এই রোগের কারণে অনেকেই দিনের বেলায় আচমকা ঘুমিয়ে পড়েন। এই রোগের কারণে গাড়ি চালাতে গিয়ে যখন-তখন দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারে।’’
স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা আছে বুঝলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। চিকিৎসার সঙ্গে ওজন নিয়ন্ত্রণে মন দিন। খাওয়ার ঠিক পরেই শুয়ে না পড়ে একটু হাঁটাহাঁটি করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো প্রয়োজনীয় যোগাসনের করুন। হজমের সমস্যা কমলে নাক ডাকার সমস্যা থেকে কিছুটা মুক্ত হওয়া যায়। শোয়ার ভঙ্গি পরিবর্তন করুন। চিত হয়ে না শুয়ে এক পাশ ফিরে শুলে শ্বাসযন্ত্রের উপর চাপ কম পড়ে। স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা থেকে রেহাই পেতে চিকিৎসকেরা কন্টিনিউয়াস পসিটিভ এয়ারওয়ে প্রেশার (সিপ্যাপ) মেশিন ব্যবহার করার পরামর্শ দেন।