কম বয়সে হার্ট অ্যাটাকের একটি বড় কারণ হল টানা অনেক ক্ষণ বসে থাকা। ছবি: সংগৃহীত।
দীর্ঘ ক্ষণ একই জায়গায় বসে থাকতে কার-ই বা ভাল লাগে। কিন্তু অফিসে গিয়ে দ্রুত গতিতে কাজ সারতে ঠায় বসে থাকা ছাড়া উপায়ও নেই। সকালে অফিসে ঢুকে সেই যে ল্যাপটপ খুলে কাজে বসলেন, চেয়ার ছেড়ে যখন উঠে দাঁড়ালেন কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে তত ক্ষণে। অনেকেরই রোজের অভ্যাস এটি। এক ভাবে বসে থাকলে কোমরে মেদ জমা, ওজন বেড়ে যাওয়া, পেশির নমনীয়তা হারানোর মতো সমস্যা তো আছেই, তবে সাম্প্রতিকতম গবেষণা বলছে এই অভ্যাসের কারণে বাড়ছে হৃদ্রোগের ঝুঁকি। কম বয়সে হার্ট অ্যাটাকের একটি বড় কারণ হল, টানা অনেক ক্ষণ বসে থাকা।
দিনের বেশির ভাগ সময়ে বসে থাকার কারণে কী ভাবে বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি?
রক্তচলাচল বাধা পায়
হাঁটাচলা করলে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে। শিরা, উপশিরায় রক্তের প্রবাহও ঠিক থাকে। কিন্তু বিপত্তি বাধে যখন কোনও শারীরিক পরিশ্রম বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ ক্ষণ হাঁটাহাঁটি না করার ফলে শরীরের অন্দরের অনেক ক্রিয়াকলাপও বন্ধ হয়ে যায়। রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। রক্ত চলাচলের স্বাভাবিক গতিও কমে আসে। দীর্ঘ দিন এমন চলতে থাকলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।
রক্তচাপের মাত্রা বেড়ে যায়
উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের সুস্থ থাকার অন্যতম পথ হল শরীরচর্চা। শারীরিক ভাবে সক্রিয় থাকলে রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। আর সে কারণেই বসে থাকার ফলে রক্তচাপের মাত্রা বাড়তে থাকে। প্রতি দিন যদি এই অনিয়মের মধ্যে দিয়ে যান, তা হলে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়া অস্বাভাবিক কোনও বিষয় নয়। উচ্চ রক্তচাপের হাত ধরেই ঝুঁকি বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের।
স্থূলতার সমস্যা
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে চিকিৎসকেরা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বলেন। ওজন বশে না রাখলে হৃদ্রোগের আশঙ্কা থাকে। এ দিকে, বহু ক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকার ফলে ওজন বাড়তে থাকে। এই বাড়তি ওজন শুধু হৃদ্রোগ নয়, কোলেস্টেরল, ডায়াবিটিসের ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে। সমীক্ষা বলছে, গত এক বছরে হার্ট অ্যাটাকের শিকার হওয়া অধিকাংশের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি।
খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ছে
কোলেস্টেরলের ক্ষেত্রে শরীরচর্চা হল অন্যতম ওষুধ। ব্যায়াম, হাঁটাচলা করলে তবেই এর মাত্রা বশে রাখা সম্ভব। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে শুধু বসে থাকলে খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএল-এর মাত্রা বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে ভাল কোলেস্টেরল এইচডিএল-এর মাত্রা কমতে থাকে। এর হাত ধরেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।