বাবা-মায়ের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক না থাকলে অনেকেই কোনও সমস্যা হলে তা চেপে রাখে। ছবি: শাটারস্টক।
জীবনের অন্যতম রঙিন সময় হল স্কুলপর্ব। পড়াশোনা, মজা, দুষ্টুমিতে ভরে থাকে এই সময়টা। স্কুলের নানা অভিজ্ঞতা সারা জীবন স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করে। নিজেদের ফেলে আসা দিনের স্মৃতি হাতড়ে বাবা-মায়েরাও এটাই আশা করেন যে, তাঁদের সন্তানরাও স্কুলে পড়ার এই সময়টা উপভোগ করবে। কিন্তু সব সময় তা হয় না। হাসতে হাসতে স্কুলে যাওয়ার বদলে, স্কুলে যাওয়ার নাম শুনলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে অনেকে। প্রাথমিক ভাবে বাবা-মায়েরা সন্তানের পড়াশোনা ভীতিকেই এর কারণ হিসাবে ধরে নেন। তবে সব ক্ষেত্রে কিন্তু সেটা ঠিক না-ও হতে পারে। স্কুলে গিয়ে সহপাঠীদের কোনও অপ্রত্যাশিত আচরণে সন্তান মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে কি না, তা এক বার যাচাই করে নেওয়া জরুরি। বাকিদের নেতিবাচক আচরণকে বলা হয় ‘বুলিং’। বাবা-মায়ের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক না থাকলে অনেকেই কোনও সমস্যা হলে তা চেপে রাখে। বেশি দিন এমন চলতে থাকলে সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্য বিঘ্নিত হতে পারে। আপনার সন্তান এমন পরিস্থিতির শিকার কি না, তা বোঝার উপায় কী?
হাসতে হাসতে স্কুলে যাওয়ার বদলে, স্কুলে যাওয়ার নাম শুনলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে অনেক শিশু। ছবি: শাটারস্টক।
শিশুর আচরণে পরিবর্তন
স্কুলে গিয়ে মানসিক নিপীড়নের শিকার হলে খেলাধুলো এবং পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারাতে পারে শিশু। তার সঙ্গেই স্কুলে না যাওয়ার বায়না তো রয়েছেই। পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলোতেও অনীহা চলে আসতে পারে। মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে যায় অনেক সময়। কেউ আবার অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে। চুপচাপ হয়ে হয়ে যায়। শিশুর মধ্যে এই পরিবর্তনগুলির বিষয়ে অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। এমন কিছু চোখে পড়লে খোলাখুলি কথা বলুন সন্তানের সঙ্গে।
স্কুলের কথা এড়িয়ে যাওয়া
সন্তান সারা দিনে স্কুলে কী কী করল, তা নিয়ে বাবা-মায়েরা কৌতূহলী। স্কুলের প্রসঙ্গ উঠলেই কি শিশু এড়িয়ে যাচ্ছে? স্কুলের কথা কিছুতেই বলতে চাইছে না? তা হলে এক বার ভাল করে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখুন। দরকার হলে স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গেও কথা বলুন।
বিছানায় ছটফট করা
শিশুদের মধ্যে অনিদ্রার সমস্যা কম দেখা যায়। সারা দিন স্কুল, পড়াশোনা, খেলাধুলোর পর ক্লান্ত থাকে শিশুরা। ফলে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে। ইদানীং সন্তানের ঘুমোতে কি অসুবিধা হচ্ছে? শিশুর চোখে একেবারেই ঘুম নেই? বড় কোনও কারণ না হলে সাধারণত এমন হয় না। স্কুলে গিয়ে এমন কোনও পরিস্থিতিতে হয়তো তাকে পড়তে হচ্ছে যে, সে মানসিক ভাবে শান্ত হতে পারছে না। সে ক্ষেত্রে শিশুর কাছে তার সমস্যার কথা সরাসরি জানতে চান। দরকারে এক বার মনোবিদের সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন।