চা খাওয়ার নিয়মকানুন। ছবি: সংগৃহীত।
একঘেয়েমি আর ব্যস্ততাময় জীবনে চনমনে থাকার অন্যতম উপায় হল ঘন ঘন চা, কফির কাপে চুমুক দেওয়া। ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউ অফ নিউট্রিশন’-এর নতুন নির্দেশিকা জানাচ্ছে চা, কফির স্বাদ বেশি না নেওয়াই শ্রেয়। তাতে মন ফুরফুরে হলেও এই অভ্যাস স্বাস্থ্যকর নয়। ভারতে একটি বড় অংশের জনসংখ্যা চায়ের প্রতি আসক্ত। সারা দিনে কত বার যে চায়ে গলা ভেজান, তার হিসাব থাকে না। চা খেয়ে সকাল শুরু হয়। তার পর দিনভর কাজের ফাঁকে, মিটিংয়ে, বন্ধুর সঙ্গে গল্পগাছায়, সিনেমা দেখার সময় সঙ্গে থাকে চা। এমনি বাড়িতে অতিথি এলেও প্রথমেই চায়ের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এই চা প্রেম স্বাস্থ্যহানির কারণ হয়ে উঠতে পারে বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা।
‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ’ খাবার খাওয়ার ঠিক আগে এবং পরে চা খেতে বারণ করছে। কারণ চা, কফিতে ক্যাফিন থাকে, যা স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে। শারীরবৃত্তীয় নানা প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। এক কাপ কফিতে ৫০-৬৫ মিলিগ্রাম ক্যাফিন আছে। আবার এক কাপ চায়ে ক্যাফিন আছে ৩০-৬৫ মিলিগ্রাম। ফলে যত বার চা-কফি খাওয়া হচ্ছে, এই পরিমাণ ক্যাফিন শরীরে প্রবেশ করছে। অত্যধিক ক্যাফিন শরীরের ক্ষতি করে। তবে খাওয়ার আগে এবং পরে চা, কফি থেকে বারণ করার আরও একটি কারণ রয়েছে। চা, কফিতে ক্যাফিন ছাড়াও রয়েছে ট্যানিন। যা শরীরে স্বাস্থ্যকর উপাদান শোষণ করে নেয়। বিশেষ করে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়।
চা, কফির স্বাদ বেশি না নেওয়াই শ্রেয়। ছবি: সংগৃহীত।
খাবার থেকে যে পরিমাণ আয়রন শরীর পায়, চায়ে থাকা ট্যানিন তা পুরোটাই শোষণ করে নেয়। এর ফলে আয়রনের ঘাটতি তৈরি হয়। অথচ আয়রন শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক উপাদান। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিকঠাক রাখতে আয়রন প্রয়োজন।
আয়রন শরীরের অন্যতম শক্তি। প্রতিটি কোষে অক্সিজেন পৌঁছতেও সাহায্য করে আয়রন। তাই শরীরের আয়রনের ঘাটতি তৈরি হোক, তা না চাইলে খাবার খাওয়ার আগে কিংবা পরে চা না খাওয়াই শ্রেয়।