অতিমারি কি আবারও ছড়াবে? ছবি: সংগৃহীত।
করোনা পুরোপুরি নির্মূল হবে না, এমনই আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন অনেক বিজ্ঞানী। তা মনে হয় সত্যি হতে চলল। অতিমারির দাপট কি তবে ম্লান হয়েও হয়নি? করোনার ভয়াবহ দিনগুলি কি আবারও ফিরে আসবে? ইউরোপ জুড়ে করোনার নতুন উপরূপ এক্সইসি-র খোঁজ মেলার পর থেকে ফের আতঙ্ক দানা বেঁধেছে। অনুমান করা হচ্ছে, করোনার এই নয়া প্রজাতি যদি বহু মানুষের শরীরে বাসা বাঁধে, তা হলে বর্ষশেষের আগেই ইউরোপ ও আমেরিকায় সংক্রমণের রেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী হবে।
করোনার নয়া প্রজাতি কতটা ভয়ের?
এ বিষয়ে নিশ্চিত রূপে কিছু জানা না গেলেও, লন্ডনের ‘জেনেটিক্স ইনস্টিটিউট অ্যাট ইউনিভার্সিটি কলেজ’-এর ডিরেক্টর ফ্র্যাঙ্কোসিস ব্যালাউক্সের কথায়, ডেনমার্ক, জার্মানি, ব্রিটেন, আমেরিকা, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, নরওয়ে, ইউক্রেন, পর্তুগাল, চিন-সহ বিশ্বের ২৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার এই উপরূপ। অধ্যাপকের দাবি, ওমিক্রনের দু’টি প্রজাতির উপরূপ এই এক্সইসি। ওমিক্রনের কেএস.১.১ এবং কেপি.৩.৩ এই দুই প্রজাতির মিলমিশেই নতুন উপরূপ তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ, ওমিক্রনের দুই প্রজাতির বৈশিষ্ট্যই রয়েছে এই নয়া রূপে।
ওমিক্রন এমনিতেও করোনার সবচেয়ে ভয়াবহ প্রজাতিগুলির মধ্যে একটি। খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে এক শরীর থেকে অন্য শরীরে। ওমিক্রনের কারণেই অতিমারীর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউ হানা দিয়েছিল বিশ্বে। করোনার প্রতিষেধকে এই প্রজাতিকে অনেকটাই কাবু করা গিয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা। তবে আবারও সে ফিরে এসেছে বলেই আশঙ্কা অধ্যাপক ফ্র্যাঙ্কোসিসের। তিনি জানিয়েছেন, ২৭টি দেশে ৫০০ জনের রক্ত ও থুতু-লালার নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে নয়া উপরূপের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। যাঁরা আক্রান্ত তাঁদের জ্বর, গলা ব্যথা, শুকনো কাশি, গন্ধ ও স্বাদ চলে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে।
চিনে কোভিড সংক্রমণের রেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী হয়েছিল কোভিডের বিএফ.৭ প্রতিরূপের জন্য। ভারতেও এই প্রতিরূপটির সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু জনগোষ্ঠীর মধ্যে মিশ্র প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে যাওয়ায় এবং অধিকাংশ ভারতবাসী কোভিডের দু’টি প্রতিষেধক নিয়ে নেওয়ায় নতুন আশঙ্কার কারণ নেই বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকদের একাংশ। যদি করোনার নয়া উপরূপ ভারতে ছড়িয়েছে বলে কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি, তবে বিশ্বের এতগুলি দেশে নতুন করে সংক্রমণ ছড়ানোয় চিন্তা বাড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে।