গবেষকদের মতে, মাউন্ট এভারেস্টে অভিযানে গিয়ে অনেকেই ঠান্ডায় কাবু হয়ে যান। যে কারণে তাঁদের হাঁচি-কাশিও শুরু হয়। ফাইল চিত্র ।
বিশ্বের উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট। প্রতি বছর সারা বিশ্বের বহু মানুষ সাহসিকতায় ভর করে এভারেস্ট অভিযানে যান। তবে সেখান থেকে ফেরার সময় পর্বতারোহীরা সেখানে এমন কিছু রেখে আসেন যা পরবর্তী কালে মানবজীবনে বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
গবেষকদের মতে, মাউন্ট এভারেস্টে অভিযানে গিয়ে অনেকেই ঠান্ডায় কাবু হয়ে যান। যে কারণে তাঁদের হাঁচি-কাশিও শুরু হয়। এভারেস্টে গিয়ে যখন কোনও অভিযাত্রী ঠান্ডার কবলে পড়ে হাঁচেন বা কাশেন, তখন তাঁদের মুখনিঃসৃত জীবাণুও ওই বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়ে। আশ্রয় নেয় এভারেস্টের বরফের বুকে। আর ওই জীবাণু শতাব্দী পর শতাব্দী ধরে ঠান্ডা বরফে বেঁচে থাকতে পারে। ঠিক এই কারণেই চিন্তায় পড়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীদের মতে, কঠিন পরিস্থিতি সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে কিছু জীবাণুর। কয়েক শতাব্দী ধরে সুপ্ত অবস্থায় থাকার পরে তা হঠাৎ জেগে উঠতেও পারে। কিছু জীবাণুর অভিযোজিত হয়ে আরও শক্তি বৃদ্ধির ক্ষমতা রয়েছে বলেও গবেষণায় উঠে এসেছে। আর সেই কারণেই বিজ্ঞানীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
এই জীবাণুগুলি বিভিন্ন কারণে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছড়িয়ে যেতে পারে। বরফগলা জলের মাধ্যমেও ভেসেও যেতে পারে অন্যত্র। আর সেই শক্তি বৃদ্ধি করা জীবাণু মানুষের সংস্পর্শে এলে মানবশরীরে দানা বাঁধতে পারে অজানা অসুখ। যা করোনার মতো ভয়াবহ রূপও নিতে পারে। আর্কটিক, আন্টার্কটিক এবং আলপাইন রিসার্চে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, পৃথিবীর উচ্চতম পর্বতগুলিতে সুপ্ত থাকা অণুজীব সম্পর্কে মানুষের ধারণা খুব কম। কী ভাবে তারা এত ঠান্ডার মধ্যে এত উচ্চতায় বেঁচে থাকে, তা নিয়েও একাধিক প্রশ্ন রয়েছে।
বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই এভারেস্টপৃষ্ঠে খুঁজে পাওয়া কিছু জীবাণুর জিনের কাঠামো পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখতে শুরু করেছেন। এমন কিছু অনুজীব বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন, যা মানুষের শরীরে হামেশাই পাওয়া যায়। কিন্তু বেশ কয়েকটি জীবাণুর দেখা সহজে মেলে না।
এক দিকে যেমন বিজ্ঞানীরা এই সব জীবাণু নিয়ে লাল সঙ্কেত দিচ্ছেন, অন্য দিকে তাঁরা বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে অন্য সম্ভাবনার আলোও দেখেছেন। গবেষকদের দাবি, জীবাণুদের এত ঠান্ডার মধ্যে বেঁচে থাকার ক্ষমতা থাকলে অন্যান্য গ্রহ এবং চাঁদেও জীবাণু খুঁজে পাওয়া যেতে পারে।