কেগল এক্সারসাইজ়।
পেলভিক ফ্লোর মাসলের বিভিন্ন ব্যায়াম একত্রে কেগল এক্সারসাইজ় নামে পরিচিত। হাত-পা ও শরীরের অন্যান্য অংশের পেশির মতোই পেলভিক মাসলের শক্তিও যাতে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অটুট থাকে, ব্লাডারের কর্মক্ষমতা বজায় থাকে, তার জন্য এই ধরনের এক্সারসাইজ় খুবই জরুরি। বিশেষ করে সি-সেকশনের মাধ্যমে যাঁরা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন, সেই সব মহিলাদের জন্য এই ব্যায়াম আবশ্যিক। পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রস্টেটের সমস্যায় কেগল এক্সারসাইজ়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
নিয়মিত করুন কেগল
ফিটনেস বিশেষজ্ঞ সৌমেন দাস জানালেন, প্রাত্যহিক এক্সারসাইজ় রুটিনের শেষে অন্তত ৭-৮ সেট করে কেগল এক্সারসাইজ় আবশ্যিক ভাবে করার পরামর্শ দেন তিনি। ‘‘পোস্টপার্টাম পিরিয়ড, অর্থাৎ সন্তানধারণের পরে মহিলাদের অ্যাবডমিনাল অরগ্যানগুলি দুর্বল হয়ে নীচের দিকে ঝুলে পড়ার প্রবণতা তৈরি হয়। সার্জারির পরে নির্দিষ্ট সময় বিশ্রাম নিয়ে শারীরচর্চার রুটিনে ফেরার পরে তাঁদের পেলভিক টিল্ট বা ব্রিজ এক্সারসাইজ় করতে হবে নিয়মিত। পুরুষদের নানা অ্যাবডমিনাল সমস্যা প্রতিরোধেও নিয়ম করে এই ব্যায়াম করা দরকার।’’
কেগলের প্রাথমিক ও সবচেয়ে সহজ এক্সারসাইজ়টি কোনও জায়গায় বসে বা শুয়ে দম ধরে রাখা ও ছাড়ার মাধ্যমেই করা যায়। প্রস্রাবের বেগ নিয়ন্ত্রণ করার মতো করে পেলভিক মাসলগুলি শক্ত করে ধরে রাখতে হবে ও ছেড়ে দিতে হবে। ব্লাডার খালি রয়েছে, অবশ্যই এমন সময়ে এটি করতে হবে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রস্রাবের বেগ নিয়ন্ত্রণ করতে যাঁদের অসুবিধে হয়, তা প্রতিরোধ করার জন্য এই বেসিক কেগল এক্সারসাইজ়টি বেশ ফলদায়ী।
সৌমেন দাস পেলভিক টিল্টের ঠিক পশ্চার সম্পর্কে বিশদে জানালেন— মাটিতে চিত হয়ে সোজা ভাবে শুয়ে পড়ুন। দুটো পা ফাঁক করে রাখুন, হাত দু’টি শরীরের দু’পাশে সোজা করে রাখুন। এ বার শরীরের নিম্নভাগ (বুকের নীচ থেকে নিতম্ব পর্যন্ত) উপরের দিকে উঠিয়ে দিন। এ ভাবে ১৬ গুনতে হবে। শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। হয়ে গেলে ধীরে ধীরে শরীর নীচের দিকে নামিয়ে দিন। প্রত্যেক দিন ৭-৮ সেট করলেই যথেষ্ট। কোমর, নিতম্বের জোর বাড়ানো ও সেখানকার পেশি টাইট করা এবং টোন-আপ করার ক্ষেত্রে খুবই কাজে দেয় এই ধরনের ব্যায়াম। মাঝবয়সি মহিলাদের তলপেট ঝুলে যাওয়ার সমস্যা রোধ, থাই মাসল টোনিংও হয়। এমনকি পুরুষদের যৌনক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে এই এক্সারসাইজ়।
সাবধানতা
কেগল এক্সারসাইজ় করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে তার পরে শুরু করুন। যাঁদের ওজন অত্যধিক বেশি, তাঁরা ওজন না কমিয়ে এই এক্সারসাইজ় করবেন না। এতে কোমরে অতিরিক্ত চাপ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কোমরে কোনও চোট বা ব্যথা থাকলেও এই এক্সারসাইজ় করা উচিত নয়।
কেগল এক্সারসাইজ় একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যেস। তা রোজরুটিনের অঙ্গ হয়ে উঠলে ফলও পাবেন দ্রুত।
সায়নী ঘটক