ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের এই এইচ৩এন২ উপরূপের কারণেই রোগীরা সবচেয়ে বেশি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। ছবি: শাটারস্টক।
ফেব্রুয়ারি থেকেই দেশ জুড়ে বেড়েছে ভাইরাল ফ্লুয়ে আক্রান্তের সংখ্যা। জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত রোগী এখন ঘরে ঘরে। জ্বর সারলেও কাশি, গলা খুসখুস থেকে যাচ্ছে মাস খানেকেরও বেশি। উত্তরপ্রদেশ ও কর্নাটকে ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ভাইরাসের উপরূপ এইচ৩এন২-এ আক্রান্ত হয়ে দু’জনের মৃত্যুও হয়েছে। হাসপাতালেও বাড়ছে রোগীর ভিড়। এই ভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষমতা অন্যান্য ভাইরাসের তুলনায় অনেক বেশি। হাঁচি-কাশির মাধ্যমে রোগীর শরীর থেকে সহজেই অন্য লোকের শরীরে বাসা বাঁধতে ওস্তাদ এই ভাইরাস। এর প্রভাবে যে ফ্লু হয়, তাকে বলা হয় ‘হংকং ফ্লু’। তবে কি আবার ভারতে মহামারির পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে? কোভিডের দু’বছর কাটতে না কাটতেই কি আবার ঘরবন্দি হতে পারি আমরা? কী বলছেন চিকিৎসকরা?
ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের এই এইচ৩এন২ উপরূপের কারণেই রোগীরা সবচেয়ে বেশি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। অন্য উপরূপগুলির তুলনায় এটি অনেক বেশি ক্ষতিকর, দাবি আইসিএমআর-এর। চিকিৎসক ধীরেন গুপ্ত বলেন, ‘‘কোভিডের সময়ে দু’বছর শিশুরা ঘরবন্দি ছিল, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে গিয়েছিল। দু’বছর পর যখন তারা আবার বাইরে বেরোতে শুরু করল তখন ইনফ্লুয়েঞ্জার অতি সাধারণ উপরূপ এইচ৩এন২-এর আক্রমণেও তাদের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে পড়ছে। হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের এই উপরূপ প্রাণঘাতী নয়। কোমর্বিডিটি থাকলে যে কোনও ভাইরাসই প্রাণঘাতী হতে পারে। এইচ৩এন-এর বিরুদ্ধে টিকাকরণের কার্যকারিতা কম এবং এই বছরে টিকাকরণেও সংখ্যাও কমেছে।’’
কোভিডের মতোই কি এইচ৩এন২-র দাপটে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়বে? এখনই তেমন আশঙ্কা দেখছেন না চিকিৎসকরা। চিকিৎসক তরুণ সাহানি বলেন, ‘‘যে ভাবে এইচ৩এন২-এর আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা প্রচার করা হচ্ছে, বিষয়টা কিন্তু ততটাও শঙ্কার নয়। মোট রোগীর মাত্র ৫ শতাংশ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এখনই এইচ৩এন২ নিয়ে ভয় পাওয়ার দরকার নেই। কোভিডের সময়ে আমরা যে যে সাবধানতা মেনে চলতাম, সে ভাবেই এ বারও আমাদের সতর্কতা নিতে হবে।’’
এইচ৩এন২ ভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষমতা অন্যান্য ভাইরাসের তুলনায় অনেক বেশি। ছবি: শাটারস্টক।
জ্বরের পাশাপাশি, এই ভাইরাসের আক্রমণে কাশি, নাক থেকে জল পড়া, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, গলাব্যথা ও মাথাব্যথার মতো উপসর্গ লক্ষ করা যায়। অনেকের ক্ষেত্রে ডায়েরিয়া, বমি, সারা শরীরে যন্ত্রণা। অন্যান্য উপসর্গ ৩ দিনের মাথায় কমতে শুরু করলেও কাশির সমস্যা কমতে ১৫ দিনের বেশি লেগে যাচ্ছে।