Viral Hepatitis Precautions

ব্যবহার করা ইঞ্জেকশন, সেলুনের ক্ষুর-কাঁচি থেকেও ছড়াতে পারে হেপাটাইটিস, কী ভাবে সাবধান থাকবেন?

হেপাটাইটিস বি-এর সংক্রমণই আমাদের দেশে বেশি। জন্ডিসের মতো উপসর্গ দেখা দেয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে তা লিভারের বড় ক্ষতি করতে পারে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৪ ১২:৫২
Share:

ভাইরাল হেপাটাইটিস থেকে কী ভাবে সাবধান থাকবেন। ছবি: ফ্রিপিক।

লিভারের মারাত্মক অসুখই হল হেপাটাইটিস। মূলত লিভারের প্রদাহজনিত অসুখ যা ভাইরাসের সংক্রমণে হয়। বিশ্বজুড়েই থাবা বসিয়েছে হেপাটাইটিস। আমাদের দেশেও আক্রান্তের সংখ্যা কম নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র সমীক্ষা বলছে, ভারতে হেপাটাইটিস বি ও সি-এ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এই রোগের বিভিন্ন ধরন আছে। হেপাটাইটিস-এ এবং ই সংক্রমিত হয় দূষিত খাদ্য ও পানীয়ের মাধ্যমে। আর হেপাটাইটিস-বি, সি এবং ডি সংক্রমিত হয় রক্তের মাধ্যমে।

Advertisement

এই বিষয়ে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলছেন, শহর হোক বা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতে, হেপাটাইটিস বি ও সি-এর সংক্রমণই বেশি। বিশেষ করে হেপাটাইটিস বি যা লিভার ক্যানসারের কারণ হতে পারে। মনে রাখতে হবে, হেপাটাইটিস বি ছড়ায় রক্ত ও দেহরসের মাধ্যমে। তাই যে কারও ব্যবহারের ছুঁচ, ক্ষুর, টুথব্রাশ সংক্রমণের কারণ হয়ে উঠতে পারে। ভাইরাসটি হাওয়ায় না ছড়ালেও শরীরের বাইরে বেঁচে থাকে সাত দিন পর্যন্ত। ধরা যাক কেউ কোথাও থুতু ফেলেছে এবং তাঁর শরীরে হেপাটাইটিস বি-এর জীবাণু আছে, তা হলে তা অন্য কারও শরীরেও ছড়াতে পারে। অথবা কোনওভাবে শরীরে কোথাও কেটে গিয়ে রক্ত লেগে গিয়েছে, তার থেকেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে। সেলুনে ব্যবহার করা ক্ষুর, চিরুনি বা রেজ়ার থেকেও সংক্রমণ ছড়ায় খুব বেশি। তাই এ সব ক্ষেত্রে সাবধান থাকতেই হবে। দেখা যায়, অনেক সময়ে রোগী তাঁর নিজের অজান্তেও রোগ ছড়াতে পারেন। হেপাটাইটিস বি ভাইরাস একবার শরীরে ঢুকলে, সবচেয়ে আগে লিভারে সংক্রমণ ছড়ায়। জন্ডিসের উপসর্গ দেখা দেয়। যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হয়, তা হলে লিভারের জটিল অসুখ দেখা দিতে পারে।

এই হেপাটাইটিস দু’রকম হয়— ‘অ্যাকিউট’ হেপাটাইটিস ও ‘ক্রনিক’ হেপাটাইটিস। ‘অ্যাকিউট’ সাধারণত হয় প্রাপ্তবয়স্কদের। জ্বর, খিদে কমে যাওয়া, ত্বকের রং হলদেটে হয়ে যাওয়া, হলুদ প্রস্রাব, এইসব লক্ষণ দেখা দেয়। শরীরে ভাইরাস ঢোকার ৬ সপ্তাহ থেকে ৬ মাস পরেও আসতে পারে উপসর্গ। সংক্রমণের প্রথম ১ মাস থেকে ৩ মাস উপসর্গের তীব্রতা থাকবে বেশি। ‘ক্রনিক’ হেপাটাইটিস মায়ের থেকে সন্তানের হতে পারে।

Advertisement

চিকিৎসক জানাচ্ছেন, নিজে আক্রান্ত না হয়েও হেপাটাইটিসের জীবাণু বহন করেন অনেকে। সে ক্ষেত্রে সারাজীবন ভাইরাসটি শরীরের কোষের ভিতর থেকে যেতে পারে। সেই ব্যক্তির থেকে রোগও ছড়াতে পারে। একে বলা হয় ‘সাইলেন্ট ক্যারিয়ার’।

পরীক্ষায় হেপাটাইটিস ধরা পড়লে প্রতিষেধক নিতে হবে এবং নিয়মিত পরীক্ষা করাতে হবে। হেপাটাইটিস বি ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন। অ্যাকিউট হেপাটাইটিসের ক্ষেত্রে কিছু ওষুধ এবং ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠা যায় । তবে নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করে দেখতে হবে হেপাটাইটিস বি নেগেটিভ হয়েছে কি না। হেপাটাইটিস ভাইরাসের সংক্রমণে জন্ডিস হলে বেশিরভাগ মানুষই খাওয়া দাওয়া নিয়ে অযথা আশঙ্কা ভোগ করেন। অনেকের ধারণা এই সময় হলুদ ছাড়া রান্না আর পেঁপে সেদ্ধ আর শিঙি মাছ না খেলে রোগ সারে না। শিঙি মাছের বদলে যে কোনও টাটকা মাছ, চিকেন, সবই খাওয়া যায়। হেপাটাইটিস হলে বাড়ির স্বাভাবিক সব রান্নাই রোগী খেতে পারেন, তবে বেশি তেল মশলা খাওয়া চলবে না। এ সময়ে শরীরকে যতটা সম্ভব ঠান্ডা রাখতে হয়। তাই আখের রস, কচি ডাবের জল, মৌরি-মিছরি ভেজানো জল খাওয়ানো উচিত। তবে ঠান্ডা লাগার ধাত থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement