— প্রতীকী চিত্র।
বয়স পঞ্চাশের আশেপাশে পৌঁছলেই সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটা মহিলাদের ভাবায়, তা ঋতুবন্ধ। কেউ একটু বেশিই খিটখিটে হয়ে পড়েন, কারও আবার আচমকাই ওজন বেড়ে যায়। তার উপর নিষ্প্রাণ, জেল্লাহীন ত্বক এবং চুল দেখলে বাড়তে থাকে অবসাদও। এই সব কিছুই কিন্তু ঋতুবন্ধের উপসর্গ। আচমকা শরীরে এই বদলগুলি ঘটলে অসুবিধা হওয়ারই কথা! কিন্তু একটা বয়সের পর এই ধরনের পরিবর্তন আসা স্বাভাবিক। পুষ্টিবিদদের মতে, এই প্রক্রিয়া সুন্দর ও স্বাভাবিক রাখতে প্রস্তুতি নিতে হবে ৩০-এর পর থেকেই।
বয়স ৩০ পেরোলেই মহিলারা কোন কোন বিষয়ে সচেতন হবেন?
১) চুল এবং ত্বকের যত্ন নেওয়া
বয়স ৩০-এর কোঠায় পৌঁছনোর পর থেকেই চুল এবং ত্বকের বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। ঋতুবন্ধের পর থেকেই ত্বক এবং চুল অস্বাভাবিক হারে শুষ্ক হতে শুরু করে। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি চুলে রাসায়নিক প্রসাধনীর ব্যবহার বন্ধ করার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা।
কোলাজেনের মাত্রা হঠাৎ করে কমতে থাকায় ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হয়। নিয়মিত ত্বকচর্চার পাশাপাশি, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খাওয়া অভ্যাস করতে হবে। পাকা পেঁপে, ভিটামিন সি জাতীয় ফল, সামুদ্রিক মাছ, বিভিন্ন ধরনের বাদাম খেতে পারলে ভাল।
২) ঘুম যেন পর্যাপ্ত হয়
স্বাস্থ্য ভাল রাখতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম। রাত জেগে কাজ করা, বই পড়া, সিনেমা বা সিরিজ় দেখার অভ্যাস যত কমানো যায়, তত ভাল। প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমোনোর পাশাপাশি, ঘুম থেকে ওঠা এবং ঘুমোতে যাওয়ার সময়কে একটি রুটিনে বেঁধে ফেলতে চেষ্টা করুন।
৩) যৌনাঙ্গের স্বাস্থ্য রক্ষা করা
ঋতুবন্ধের পর যৌনাঙ্গ এবং সেই সংলগ্ন অঞ্চল অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায়। যার ফলে বাড়তে পারে সংক্রমণ। সঙ্গমেও অনীহা জন্মানোও অস্বাভাবিক নয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অনেকেই বাইরে থেকে ইস্ট্রোজেন দেওয়া ক্রিম ব্যবহার করেন। পুষ্টিবিদরা বলছেন, চিকিৎসার পাশাপাশি মিষ্টি বা প্রক্রিয়াজাত খাবারেও কিন্তু রাশ টানতে হবে। বদলে প্রতিদিন পাতে রাখতে হবে প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার।
— প্রতীকী চিত্র।
৪) মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা
ঋতুবন্ধের আগে এবং পরে হঠাৎ হঠাৎ মেজাজ বিগড়ে যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন বেশির ভাগ মহিলা। এই সমস্যার প্রধান কারণ রক্তে শর্করার ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়া। ঋতুবন্ধের সময় কে কোন সমস্যার সম্মুখীন হবেন, তা অনেকটাই নির্ভর করে এই শর্করার মাত্রার উপর। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি হালকা ব্যায়াম, শরীরচর্চা, ধ্যান করতে পারলে এই সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৫) ওজন নিয়ন্ত্রণ করা
ঋতুবন্ধের সময়ে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে বেশির ভাগ মহিলারই ওজন বেড়ে যায়। রক্তে শর্করার মাত্রা এর জন্য দায়ী হলেও আরও বহুবিধ কারণ এ ক্ষেত্রে রয়েছে। তাই এই সময় থেকেই শরীরচর্চার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত।