কোন ডায়েটে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে? ছবি: সংগৃহীত।
খাদ্যাভাসে অনিয়মের কারণেই হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ে। অতিরিক্ত তেল-মশলাদার খাবার, তেলেভাজা, রোজ রোজ রেস্তরাঁর খাবার খাওয়া, প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেটজাত খাবারের উপর প্রয়োজনের বেশি নির্ভর হয়ে পড়া— এই সব ভুল হার্টের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। কম বয়সেই হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হচ্ছেন এমন রোগীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। হৃদ্যন্ত্র সুস্থ রাখতে হলে ডায়েটে বদল আনা ভীষণ জরুরি। অ্যামেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, হৃদ্যন্ত্র ভাল রাখতে সবচেয়ে ভাল ডায়েট হল ড্যাশ ডায়েট।
ড্যাশ ডায়েটটা ঠিক কী?
এই ডায়েটে মূলত খাদ্যাভ্যাসে বদল এনে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। ডায়েটে পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে রাখা হয়— এই সব খনিজ পদার্থ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এই ডায়েটে পুষ্টিবিদেরা সোডিয়াম, স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং চিনি খাওয়ার পরিমাণ একেবারে সীমিত করে দেন।
ড্যাশ ডায়েটে মূলত খাদ্যাভ্যাসে বদল এনে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। ছবি: সংগৃহীত।
নুনের প্রধান উপাদান সোডিয়াম। এমনিতে আমরা গড়ে ৩৪০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম খাই, তবে ড্যাশ ডায়েটে ২৩০০ মিলিগ্রামের বেশি খাওয়া চলবে না। শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে কিছু ক্ষেত্রে পুষ্টিবিদেরা ডায়েটে সোডিয়ামের মাত্রা ১৫০০ মিলিগ্রামের কম করে দেন। সোডিয়ামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়াতে হয় পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের মাত্রা। এই ডায়েটে বেশি করে শাকসব্জি, ফল ও লো–ফ্যাট দুধ রাখতে বলেন পুষ্টিবিদেরা। সঙ্গে মাপ মতো ভাত, রুটি, ডাল, বিন্স, মাছ, মুরগি, ডিম ও সপ্তাহে ৫–৬ দিন অল্প বাদাম ও বীজ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়৷ খাবারে মোট ফ্যাট, স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও কোলেস্টেরল কম রাখতে হয় বলে রেড মিট, ভাজাভুজি, মিষ্টি, এই ডায়েটে নৈব নৈব চ বললেই চলে। চার বদলে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরপুর সামুদ্রিক ও তৈলাক্ত মাছ খাওয়া যায় এই ডায়েটে।
তবে রক্তচাপ কমাতে ও হৃদ্রোগের আশঙ্কা দূর করতে কেবল ডায়েট করলেই চলবে না। নিয়ম করে শরীরচর্চাও করতে হবে বইকি! প্রতি দিন ৩০–৪০ মিনিট ব্যায়াম করা জরুরি। যে কোনও ডায়েট শুরু করার আগে পুষ্টিবিদদের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না। নিজের বুদ্ধি মতো কিংবা ইন্টারনেটের উপর ভরসা করে ডায়েট করলে কিন্তু হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই সে ঝুঁকি না নেওয়াই ভাল।