শিশুর মাত্রাতিরিক্ত ওজন প্রতিরোধ করতে বাবা-মায়েরা কী করবেন? ছবি: সংগৃহীত।
আধুনিক জীবনে ব্যস্ততার ছায়া কেবল আমাদের উপরেই পড়েনি, শিশুরাও এখন সমান তালে ব্যস্ত। ঘুম থেকে উঠেই স্কুল, স্কুল থেকে ফিরে টিউশন, বিকেলে প্রজেক্ট তৈরি, রাতে হোমওয়ার্ক শেষ করার তাড়া। ছোটোবেলা থেকে ইঁদুরদৌড়ে নেমে পড়েছে বাড়ির খুদে সদস্যটিও। কেবল পড়াশোনা করলেই তো হবে না, পাশাপাশি নানা গুণে পারদর্শী হয়ে উঠতে গিয়ে খেলার সময় পাচ্ছে না তারা। সিলেবাসের চাপে রাতের ঘুম ঠিকঠাক হচ্ছে না শিশুর। কখনও আবার মা-বাবার প্রত্যাশার বহর চেপে বসছে শিশুর কাঁধে। এ সবের জেরে স্থূলত্ব তাড়া করে বেড়াচ্ছে অকালেই।
ওজন বেড়ে গেলে শিশুদের ডায়াবিটিস, হাঁপানি, হৃদ্রোগ, লিভারের অসুখের ঝুঁকি বাড়ে। এ ছাড়া স্কুলে কিংবা টিউশনে অনেক শিশুকেই মোটা হওয়ার জন্য হেনস্থার শিকার হতে হয়। শিশুর মাত্রাতিরিক্ত ওজন প্রতিরোধ করতে বাবা-মায়েরা কী করবেন?
বাইরের খাবারই ওজন বৃদ্ধির মূল কারণ। ছবি: সংগৃহীত।
১) শাকসব্জি দেখলেই শিশুরা দূরে পালায়। পরিবর্তে ভাজাভুজি, মিষ্টি জাতীয় খাবার, বাইরের খাবারের দিকেই তাদের ঝোঁক বেশি। এই সব খাবারই আদতে ওজনবৃদ্ধির মূল কারণ। বাচ্চাদের বেশি করে শাকসব্জি, ফলমূল খাওয়ান। পুষ্টিবিদের কাছে যান শিশুকে নিয়ে। ওর নির্দিষ্ট বয়সে ডায়েট চার্ট ঠিক কেমন হবে, তা মেনে চলুন তাঁদের পরামর্শ মতো। ডায়েট মানেই শিশুর সব প্রিয় খাদ্য বাদ, এমন নয়। চাইল্ড ডায়েটে চকোলেটও থাকে। তাই ভয় নেই। শুধু পরিমাণের উপর নজর দিলেই হবে।
২) খুদের টিফিনে নুডল্স বা হিমায়িত খাবার বানিয়ে দিচ্ছেন? এতেও কিন্তু ওজন বাড়ছে ওদের। এ ছাড়া প্যাকেটবন্দি স্যুপ এবং নরম পানীয় থেকেও দূরে রাখুন খুদেকে। এ সবে থাকা অতিরিক্ত চিনি, রাসায়নিক, সোডিয়াম শরীরে ফ্যাটের মাত্রা বৃদ্ধি করে। বাড়িতে বানানো খাবারের উপর জোর দিন।
৩) সারা ক্ষণ খুদেকে বই নিয়ে বসিয়ে রাখলে চলবে না, ওকে বাইরে খেলতেও পাঠাতে হবে। ওর ছুটোছুটি করার সময়টা কেড়ে নেবেন না। কাছেপিঠে খেলার মাঠ না থাকলে বা খেলার সঙ্গী না পেলে ক্রিকেট, যোগাসন কিংবা সাঁতারের ক্লাসে ভর্তি করিয়ে দিতে পারেন। তবে এগুলিকেও প্রতিযোগিতার ছলে নিলে চলবে না।
৪) খুদের ঘুমের সঙ্গে কোনও রকম আপস করলে চলবে না। যতই পরীক্ষার পড়াশোনার চাপ থাকুক না কেন, ঘুমের সময় যেন কোনও ভাবেই সাত-আট ঘণ্টার কম না হয়, সে দিকে নজর দিতে হবে।
৫) বেশি করে জল খাওয়ার অভ্যাস করাতে হবে। জল খেলে বিপাকহার নিয়ন্ত্রণে থাকে। বিপাকহার নিয়ন্ত্রণে থাকলে ওজনও বাগে রাখা সম্ভব। শরীরে জলের ঘাটতি হলে শরীর জল জমিয়ে রাখতে শুরু করে, এতেও চেহারা ফুলে যায়।