কী ভাবে সুস্থ থাকবেন? ছবি: সংগৃহীত।
দীপাবলির রাত মানেই শব্দবাজি আর মাইকের দাপট। পাড়ার মোড়ে, রাস্তার ধারে সর্বত্র একই ছবি। তাতে উৎসবের রাত আরও রঙিন আর জমকালো হয়ে ওঠে ঠিকই। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত এই শব্দ অনেকেরই শারীরিক অসুস্থতার কারণ হয়ে ওঠে। শহর থেকে শহরতলি, শব্দের তাণ্ডব কোথাও কম নেই। শব্দের মাত্রা নির্দিষ্ট ডেসিবেলের মাত্রা না ছাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি থাকলেও, সব ক্ষেত্রে এই নিয়ম মেনে চলার ছবি দেখা যায় না। বরং শব্দের মাত্রা ক্রমশ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। হৃদ্রোগ কিংবা সিওপিডি-র রোগীদের ক্ষেত্রে এই শব্দ কতটা মারাত্মক হতে পারে, তা কল্পনার বাইরে। এ ছাড়া মাইগ্রেন থাকলেও এই ধরনের শব্দে পরিস্থিতি খারাপ দিকে যেতে পারে। অনেকের অল্প আওয়াজেই মাথা ধরে যায়। সেখানে জোরে গান কিংবা বাজির তীব্র শব্দে অসুস্থতা কোন পর্যায়ে পৌঁছতে পারে, সেটা খানিকটা আন্দাজ করা যায়। এই পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকার উপায় কী? কী ভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা যায়? উপায় বলে দিলেন চিকিৎসক সৃজন দাস।
চিকিৎসক বলেন, ‘‘বাজি, মাইকের শব্দ যেকোনও মানুষের পক্ষেই কষ্টদায়ক। হার্টের সমস্যা কিংবা অ্যাংজাইটি থাকলে শব্দ বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। তাই যাঁদের এই ধরনের অসুস্থতা রয়েছে, তাঁদের এই শব্দ থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকা জরুরি। অনেক সময় দরজা-জানলা বন্ধ করেও শব্দ আটকানো যায় না। সেক্ষেত্রে খুব সমস্যা হলে এমন কোনও জায়গায় এই সময়টিতে থাকা উচিত, যেখানে শব্দের দাপট নেই। অনেকের তো আবার মাথাও ধরে যায়। আর এক বার মাথা যন্ত্রণা শুরু হলে, তা সহজে কমতে চায় না। তবে যন্ত্রণা কমানোর কিছু উপায়ও রয়েছে।’’ জোরে আওয়াজে যদি মাথা ধরে যায়, কী ভাবে খানিকটা স্বস্তি পাওয়া যাবেন, বাতলে দিলেন চিকিৎসক।
১) অত্যধিক আওয়াজ, শব্দে ঘুম সবচেয়ে কম হয়। আর ঘুমের ঘাটতির কারণেই মাথা যন্ত্রণা, মানসিক উদ্বেগের মতো নানা সমস্যা দেখা দেয় বেশি করে। এ ধরনের শারীরিক সমস্যা এড়াতে ঘুমোতে হবে।
২) পাড়ার পুজোয় মাইকে তীব্র স্বরে বলিউডি হিন্দি গান বাজছে। সেই শব্দে মাথার ভিতর দপদপ শুরু হয়েছে। মাথার দুই রগে ঢিপঢিপ করেই চলেছে একটানা। অনেকেই এই সমস্যাগুলির সঙ্গে পরিচিত। সেক্ষেত্রে একেবারে মৃদু স্বরের গান শুনতে পারেন। কানে হেডফোন গুঁজে শোনা যেতে পারে। তাতে বাইরের আওয়াজ কানে প্রবেশ করবে না।
৩) এই পরিস্থিতিতে ‘নম্বর কাউন্টিং মেথড্স’ খুব কার্যকরী। তেমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসক। ১ থেকে ১০০ যদি পিছন দিক থেকে মনে মনে গোনা যায়, তা হলে এই ধরনের সমস্যা খানিকটা এড়ানো যাবে। গোনার পরে বড় শ্বাস নিতে হবে। তার পর ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে হবে। তা হলেও খানিকটা মাথা হালকা হবে। স্বস্তি পাওয়া যাবে।
৪) ‘অ্যারোমা থেরাপি’ও এক্ষেত্রে কাজে আসতে পারে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসক। ঘরে খুব হালকা গন্ধের ধূপ জ্বালানো যেতে পারে। হালকা গন্ধে মাথাধরা কমে যেতে পারে। তা ছাড়া কোনও কারণে উদ্বেগ তৈরি হলেও, সুগন্ধ মন ভাল করে দিতে পারে।