মুঠোবন্দি যন্ত্রটিই কি হয়ে দাঁড়াচ্ছে উদ্বেগের কারণ? ছবি: সংগৃহীত।
স্মার্টফোন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। যোগাযোগ, তথ্য সংগ্রহ, বিনোদন, নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা কাজের জন্য কে আজ স্মার্টফোনের উপর নির্ভরশীল নন! কিন্তু এই সব সুবিধার পাশাপাশি, স্মার্টফোন নির্ভরতা ব্যবহারকারীর মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে, উদ্বেগের মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
উদ্বেগের সঙ্গে স্মার্টফোনের সম্পর্ক ঠিক কোথায়?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম: সমাজমাধ্যমে বিভিন্ন মানুষের যাপনচিত্র দেখে মানুষ ক্রমাগত অন্যদের সঙ্গে নিজের তুলনা করতে থাকেন। সমাজমাধ্যমে নানা নেতিবাচক মন্তব্য বা সমালোচনার শিকার হওয়ার আশঙ্কা উদ্বেগের মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
নিরবচ্ছিন্ন তথ্যের প্রবাহ: সমাজমাধ্যমের পাতায় ক্রমাগত আসতে থাকা ছবি, ভিডিয়ো বা ব্যক্তিগত বার্তালাপের ধারাবাহিক প্রবাহ মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন করে তুলতে পারে, যার ফলে উদ্বেগের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
ঘুমের ব্যাঘাত: ঘুমের আগে স্মার্টফোন ব্যবহার করলে ফোনের নীল আলো মস্তিষ্কে ‘মেলাটোনিন’ নামক হরমোনের নিঃসরণে বাধা দেয়, যা ঘুম নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলে ঘুমের অসুবিধা দেখা দেয় এবং উদ্বেগ বৃদ্ধি পায়।
বাস্তব জগতের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্নতা: স্মার্টফোনের প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ ব্যবহারকারীর বাস্তব জগতের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এবং তাঁকে সামাজিক বিচ্ছিন্নতার দিকে নিয়ে যায়। এর ফলে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ বৃদ্ধি পেতে পারে।
ফোনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাখাও জরুরি। ছবি: সংগৃহীত
উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে স্মার্টফোন ব্যবহার কী ভাবে কমানো যায়:
স্মার্টফোন ব্যবহারের সময়সীমা নির্ধারণ: প্রতিদিন কত ক্ষণ স্মার্টফোন ব্যবহার করা হবে, তা আগে থেকে নির্ধারণ করে রাখা যেতে পারে। সেই সময়সীমা মেনে চলার চেষ্টা করলে স্মার্টফোনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
নির্দিষ্ট কিছু কাজের সময়ে স্মার্টফোন ব্যবহার না করা: ঘুমানোর আগে এক ঘন্টা, খাওয়ার সময়ে, গাড়ি চালানোর সময়ে ফোন ব্যবহার না করাই ভাল।
বিকল্প খুঁজে বের করা: বই পড়া, ব্যায়াম করা, বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর মতো বিকল্প উপায় খুঁজে বার করা যেতে পারে। সেই সময়ে ফোন দূরে রাখলে উপকার পাওয়া সম্ভব।