ছবি: সংগৃহীত।
ঠান্ডা ঠান্ডা মিন্টের মিষ্টি স্বাদ দাঁতের মাজনে। দাঁত মাজার সময়ে ছোটরা অনেক সময় চেটে খেয়েও নেয়। একটু পুরনো স্মৃতি হাতড়ালে দেখা যাবে, এখন যাঁরা প্রাপ্তবয়স্ক, তাঁদের অনেকেই এমন করেছেন! কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে মুখে দেওয়ার যে মাজনকে নিরাপদ ভাবা হত, তাতে লুকিয়ে বিপদ! সম্প্রতি দাঁতের মাজন থেকে ক্যানসারেরর আশঙ্কার কথাও বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনায় উঠে আসছে। মাজনের ব্যবহার কতটা নিরাপদ, প্রশ্ন উঠেছে তাই নিয়েও।
দাঁতের মাজন থেকে ক্যানসার হওয়ার সম্ভবনা কতটা, তা ইরানের তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণারও অংশ ছিল। তাতে বলা হচ্ছে, “স্তন ক্যানসারে প্যারাবেনের একটা ভূমিকা রয়েছে। প্যারাবেন পাওয়া গিয়েছে স্তন ক্যানসারের তন্তুতে। আবার দেখা গিয়েছে যে, বহু দাঁতের মাজনেও প্যারাবেন থাকে। কিন্তু মাজনে যে ধরনের প্যারাবেন ব্যবহার করা হয় তার সঙ্গে সরাসরি ক্যানসারের যোগ থাকার প্রমাণ এখনও মেলেনি।” অর্থাৎ দাঁতের মাজন থেকে ক্যানসার হওয়ার প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। তার পরেও এক দন্ত্যচিকিৎসক জানাচ্ছেন, দাঁতের মাজন অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার না করাই মঙ্গল।
টিভিতে দেখানো মাজনের বিজ্ঞাপনে দেখা যায় ব্রাশের এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত টেনে লাগানো হচ্ছে মাজন। দন্ত্যচিকিৎসক প্রফুল্ল সাবাদ্র বলছেন, “দাঁতের মাজনে থাকে ফ্লুওরাইড। যার অতিরিক্ত ব্যবহারে প্রাপ্তবয়স্ক এবং ছোটদের নানা রকমের সমস্যা হতে পারে।”
মাজন থেকে কী কী সমস্যা?
বিষক্রিয়া: প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বিরল হলেও ফ্লুওরাইডের অতিরিক্ত ব্যবহারে বিষক্রিয়া হতে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসক প্রফুল্ল। সে ক্ষেত্রে মাথাঘোরা, গা বমি ভাব, বমি করা এবং আরও বেশি সমস্যা হতে পারে।
এনামেলের ক্ষয়: দাঁতের উপরের যে এনামেলের পরত দাঁতকে উজ্জ্বল দেখায়, তার ক্ষতি হতে পারে অতিরিক্ত মাজনের ব্যবহারে। বিশেষ করে ব্রাশের রোঁয়া যদি শক্ত হয়, তবে সেই ক্ষয় হবে দ্রুত।
ছবি: সংগৃহীত।
ডেন্টাল ফ্লুরোসিস: দাঁতের স্বাভাবিক রং নষ্ট হওয়া বা দাঁতে সাদা ছোপ পড়ার মতো উপসর্গ দেখা যায় ডেন্টাল ফ্লুরোসিস হলে। অতিরিক্ত মাজনের ব্যবহার থেকেও ওই সমস্যা হতে পারে।
গিলে নেওয়া: ছোটরা অনেক সময়েই মাজন খেয়ে নেয়। চিকিৎসক বলছেন, সে ক্ষেত্রে শরীরে ফ্লুওরাইডের নিরাপদ মাত্রা অতিক্রান্ত হবে। অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে শিশু।
কতটা ব্যবহার নিরাপদ?
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য একটি মটরের দানার মত মাজন নিতে বলছেন চিকিৎসক। আর ছোটদের জন্য দন্ত্যচিকিৎসক প্রফুল্লের পরামর্শ, “৩ বছর থেকে ৬ বছরের শিশুদের ব্রাশের উপর একটি চালের দানার মাপের মাজন দিন। ৬ বছরের ঊর্ধ্বে মটরের দানার মাপের মাজন দিতে পারেন।”