দেদার বিয়ার পান করলে পেটের মেদ জমা আটকাবে কার সাধ্যি! ছবি: সংগৃহীত।
টুকটাক অনিয়মের মাঝেও অনেকেই চেষ্টা করেন বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলার। অন্তত নামমাত্র শরীরচর্চাটুকু অনেকেই বজায় রাখার চেষ্টা করেন। তবু পেটের মেদ সহজে কমে না। পেটের মেদ জমতে যতটা সময় নেয়, গলতে সময় নেয় তার চেয়েও অনেক বেশি। শুধু ডায়েট কিংবা শরীরচর্চা দিয়ে সেই মেদ সহজে ঝরানো যায় না।
আসলে দীর্ঘ দিন ডায়েট মেনে চললেও কিছু ভুল হয়েই যায়। বাড়িতে কড়া ডায়েট করছেন, আর বন্ধুদের আড্ডায় গিয়ে দেদার বিয়ার পান করছেন, তা হলে পেটের মেদ জমা আটকাবে কার সাধ্যি! এমনই কিছু ভুলের মাশুল গোনে পেট। যে কারণগুলি পেটের মেদ জমার নেপথ্যে রয়েছে অনেক কারণ। মদ্যপান ছাড়াও তার মধ্যে অন্যতম হল কম ঘুম। ‘স্লিপ মেডিসিন জার্নাল’-এ প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণা সে তথ্যই দিচ্ছে। ঘুমের অভাব এবং পেটের মেদ— এই দু’টির মধ্যে একটি সম্পর্ক রয়েছে।
বিয়ার খেয়েও কিন্তু বশে রাখা যায় ভুঁড়ি। ছবি: সংগৃহীত।
সঠিক ভাবে হজম না হলে মূলত পেটে মেদ জমা হয়। হজমজনিত সমস্যা হয় পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে। ঘুম কম হলে শরীরে ইনসুলিনের মাত্রাও বেড়ে যায়। এই কারণগুলির জন্যেই মূলত মেদ জমা হয় পেটে।
গবেষণা জানাচ্ছে, রাতে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। অনেকেই তা ঘুমোন না। দৈনিক ১ ঘণ্টা ঘুম কম হলেও পেটের মেদ বাড়তে থাকে। তবে আট ঘণ্টা ঘুমোনোর পরেও যে মেদ কমবে, তা নিয়ে অবশ্য বিস্তর গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।
পেট মেদের পরিমাণ বেশি, এমন ১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সি প্রায় ৫১ হাজার জনের মধ্যে একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল। তাঁদের সারা দিনের রুটিন পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, অধিকাংশই অনিদ্রার শিকার। কাজের চাপ, ব্যস্ততা, এমন কিছু কারণে ঘুম কম হতো। তাই চিকিৎসক থেকে গবেষক দু’পক্ষেরই মত, পেটের মেদ বাড়ুক, তা না চাইলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমনো ছাড়া উপায় নেই।
অনিদ্রা যে শুধু পেটের মেদ বাড়ায়, তা কিন্তু নয়। কম ঘুম মস্তিষ্কের বয়সও বাড়িয়ে দেয়। ‘ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি অ্যাটলাস’-এর ২০২৩ সালের রিপোর্ট বলছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ স্থূলতার সমস্যায় ভুগছেন। এ ছাড়াও টাইপ ২ ডায়াবিটিস, হৃদ্রোগ, স্ট্রোক, স্তন ক্যানসার, অ্যালঝাইমার্সের মতো শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। তবে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শুধু বেশি ক্ষণ ঘুমলেই হবে না। ঘুম হতে হবে গাঢ়। তবেই মিলবে সুফল। তবে মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান করলেও বাড়বে বিপদ। তাই নিয়মিত নয়, মাঝেমধ্যে মন ভরে বিয়ার খেতেই পারেন। সেই সঙ্গে রাতে ঠিকমতো ঘুম হচ্ছে কি না, সে দিকে খেয়াল রাখুন।