খেজুর রক্তে খারাপ কোলেস্টোরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়। ছবি: শাটারস্টক
ব্যস্ত জীবনযাত্রা, খাদ্যাভাসে অনিয়ম, রাত জাগার অভ্যাসের জেরে শরীরে বাসা বাঁধে নানা রোগ। আর তার হাত ধরেই ব্রাত্য হয় নানা খাওয়াদাওয়া। ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল, থাইরয়েড, স্থূলতা, পলিসিস্টিক ওভারি— জীবনশৈলীর দোষে তৈরি হওয়া এ সব রোগের হানায় খাদ্যতালিকা থেকে বাদ হয়ে যায় অনেক প্রিয় খাবারদাবার। বিশেষ করে মিষ্টি। সুস্থ থাকতে চিকিৎসকরা সবার আগে ডায়েট থেকে মিষ্টি বাদ দিতে বলেন। তবে মিষ্টি খেতে মন চাইলে দু’টি খেজুর খেয়ে দেখতে পারেন। মন ভরবে আর স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে।
কেবল অতুলনীয় স্বাদ আর গন্ধের জন্য নয়, রোগ নিরাময়ের জন্যও খেজুরের জবাব নেই। প্রতি একশো গ্রাম খেজুরে মেলে ২৮২ কিলো ক্যালোরি শক্তি, ৭৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২.৫ গ্রাম প্রোটিন এবং ০.৪ গ্রাম ফ্যাট। গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ছাড়াও মেলে কিছু অত্যাবশ্যক ভিটামিন। কোলেস্টেরলকে জব্দ করতে খেজুর দারুণ উপকারী।
কী ভাবে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে খেজুর?
খেজুর রক্তে খারাপ কোলেস্টোরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়। খেজুরে সোডিয়ামের মাত্রা কম এবং পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি থাকায় হৃদ্যন্ত্রের পেশির সক্রিয়তা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে এই ফল। রোজের ডায়েটে খেজুর রাখলে রক্তনালিকাগুলিতে ফ্যাট জমতে বাধা দেয়। এর ফলে সারা দেহে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। রক্ত জমাট বাঁধতে পারে না। তাই হার্টের অসুখ, কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে পুষ্টিবিদেরা ডায়েটে খেজুর রাখার পরামর্শ দেন।
প্রাতরাশে দুধ-কর্নফ্লেক্সের সঙ্গে চিনির পরিবর্তে খেজুর মিশিয়ে খেতে পারেন। ছবি: শাটারস্টক
এ ছাড়া পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, তামা, ভিটামিন কে, প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকায় নিয়মিত খেজুর খেলে ‘বোন মেটাবলিজ়ম’ ঠিক থাকে। অস্টিওপোরোসিসের আশঙ্কা কমে। জৈব সালফার থাকার কারণে বিভিন্ন ভাইরাল, ফাঙ্গাল, ব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমণ দূর করে খেজুর। ফুসফুসে বিভিন্ন সংক্রমণও মোকাবিলা করতে সাহায্য করে খেজুর। অনিদ্রার সমস্যা দূর করে খেজুর। মাইগ্রেন এবং ঋতুস্রাবকালীন ব্যথা কমাতেও খেজুর খেতে পারেন।
সারা দিনে ক’টা খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত?
প্রাতরাশে দুধ-কর্নফ্লেক্সের সঙ্গে চিনির পরিবর্তে খেজুর মিশিয়ে খেতে পারেন। শরীরচর্চা শুরু করার আগেও এটি খেলে উপকার পাবেন। সন্ধ্যাবেলা খিদে পেলে ভাজাভুজির পরিবর্তে কয়েকটা খেজুর খেয়ে নিলেও পেট ভরে। তবে খেজুরে সামান্য মাত্রায় শর্করা থাকে। তাই প্রতি দিন ছ’-সাতটির বেশি খেজুর না খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা।