হেঁশেলেই লুকিয়ে বাতের যন্ত্রণার দাওয়াই। ছবি: সংগৃহীত।
এ বছর রাজ্যে শীত যেন বেশ জাঁকিয়ে বসেছে। সকালে মেঘলা আকাশ আর রাত বাড়তেই কনকনে ঠান্ডা হাওয়ার ঠেলায় যেন জুবুথুবু অবস্থা অনেকের। এমন আবহাওয়ায় সর্দি-কাশির প্রবণতা বাড়ে। চিকিৎসকদের মতামত অনুযায়ী ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়াতেও আনতে হবে কিছু বাড়তি সতর্কতা। শীতকাল পড়তেই রান্নায় কিছু কিছু বিশেষ মশলা ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এমন মশলা, যা শরীর গরম রাখে আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
রান্নায় হামেশাই ব্যবহৃত হয় রসুন। কিন্তু কেবল স্বাদের জন্য নয়, শরীর চাঙ্গা রাখতেও রসুনের জুড়ি মেলা ভার। এতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের মাত্রা অনেক বেশি। এর সঙ্গে থাকে ভিটামিন বি এবং সি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, আয়রন। শীতকালে রান্নায় তো বটেই সকালে এক কোয়া কাঁচা রসুন খেলে কী কী উপকার হয় শরীরের, রইল তার হদিস।
সর্দি-কাশি ঠেকাতে: শীতকাল মানেই গলাব্যথা, সর্দি-কাশির মরসুম। এই সব সমস্যা থেকে রেহাই দিতে রসুন দারুণ উপকারী। এ ছাড়া সাইনাসের সমস্যা, জ্বর, ফ্লু সারানোর জন্য চিকিৎসকেরা অনেক সময়েই রসুন খাওয়ার পরামর্শ দেন।
ওজন কমাতেও কাজে আসে: শীতকাল আলসেমির কারণে অনেকেই জিমে যেতে চান না। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে রসুন বেশ উপকারী। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের মাত্রা অনেক বেশি থাকায় বিপাকের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে রসুন। ওজন কমানোর জন্য রোজ সকালে কাঁচা রসুন আর মধু খেতেই পারেন। শীতকালে হজমের সমস্যা হয় অনেকের। হজম ভাল করতেও রসুন জরুরি।
ফুসফুস চাঙ্গা রাখতে: শীত পড়তেই অনেকে শ্বাসকষ্টে ভোগেন। অনেক সময়েই শীতকালে সর্দির জন্য বা অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগার ফলে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা কমে যায়, শ্বাসকষ্ট বাড়ে। শীতের মরসুমে রসুন খেলে ফুসফুসের জন্য তা খুবই উপকারী হতে পারে। ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াতে রসুন ভাল কাজ করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে রসুন বেশ উপকারী। ছবি: সংগৃহীত।
ত্বকের যত্নে: শীতে ত্বক ও চুল রুক্ষ দেখায়। খাবার পাতে নিয়মিত রসুন রাখলে কিন্তু ত্বক ও চুল, দুই-ই ভাল থাকে। শীতকালে ত্বকে সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ে। রসুনের অ্যান্টিবায়োটিক গুণাগুণ সংক্রমণ ঠেকিয়ে রাখে।
হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য: শীত পড়তেই বাতের ব্যথা বাড়ে। গাঁটে গাঁটে শুরু হয় যন্ত্রণা। মহিলাদের ক্ষেত্রে ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার প্রবণতা কমাতে পারে রসুন। তাই শীতে যেমন রসুন তেল দিয়ে মালিশ করলে ব্যথা কমে, তেমনই রোজ কাঁচা রসুন খেলেও যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে পারেন।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে, কোনও ক্রনিক অসুখ থাকলে যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে অবশ্যই পরামর্শ করুন।