Sleeping Disorder

ঘুমের জ্বালায় ভোগেন এখন অনেকেই, ৫ রকম রোগের কথা জেনে রাখা জরুরি

শরীর তার নিজস্ব ঘড়ি ধরে সব রকম শারীরবৃত্তীয় কাজকর্ম পরিচালনা করে। ঘুমের ক্ষেত্রেও অন্যথা হয় না। কিন্তু ঘুমের স্বাভাবিক চক্র যদি জোর করে উল্টে দেওয়া হয়, তা হলে বিপদ আসতে বাধ্য।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৪ ১৮:৩৭
Share:
Five types of sleep disorders

ঘুমের রকমফের। ছবি: সংগৃহীত।

সারা দিন একঠায় ল্যাপটপের দিকে চেয়ে থাকা। তার পর বাড়ি ফিরে মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধুদের সঙ্গে ‘ডিজিটাল’ আড্ডা। গভীর রাতেও দু’চোখের পাতা এক করতে না পারলে অর্ধেক দেখে ‘পজ়’ করে রাখা কোনও সিরিজ় আবার দেখতে শুরু করা। ভোরের দিকে ঘণ্টা দুয়েক চোখ বন্ধ করার চেষ্টা করতে করতেই আবার অফিসের জন্য দৌড়নো। গোটা তরুণ প্রজন্মই এই অভ্যাস রপ্ত করে ফেলেছে। যার ফলে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে ঘুমের।

Advertisement

ঘুমপাড়ানি মাসি-পিসি তো সেই কবেই বাড়ি চলে গিয়েছে। ঘুমের ওষুধও কিছু ক্ষেত্রে কাজ করছে না। অথচ, পরিশ্রমের পর শরীরে, মনে ক্লান্তি তো রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা এই অভ্যাসের ফলে শরীরের নিজস্ব ছন্দে ব্যাহত হয়। শরীর তার নিজস্ব ঘড়ি ধরে সব রকম শারীরবৃত্তীয় কাজকর্ম পরিচালনা করে। ঘুমের ক্ষেত্রেও অন্যথা হয় না। কিন্তু সেই ঘড়ি অগ্রাহ্য করে যদি কেউ রাতের পর রাত জেগে থাকেন কিংবা দিনের বেলা কুম্ভকর্ণের মতো ঘুমোন, তা হলে কিন্তু সমূহ বিপদ।

ঘুমের স্বাভাবিক চক্র ব্যাহত হলে ঠিক কী কী সমস্যা হতে পারে?

Advertisement

১) নাক ডাকা, স্লিপ অ্যাপনিয়া:

ঘুমোলেই নাক ডাকেন। নাক ডাকতে শুনলে অনেকেই মনে করেন ওই ব্যক্তি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। নাক ডাকাও যে এক ধরনের রোগ সে সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা ছিল না। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই সব সমস্যা কিন্তু ঘুমের ধরন, সময় এবং মান সংক্রান্ত। গোড়ায় এই ধরনের সমস্যা নির্মূল করতে না পারলে পরবর্তী কালে সেখান থেকে স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

২) প্যারাসমনিয়া:

ঘুমের মধ্যে হাঁটা, ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কথা বলা, হ্যালুসিনেট করা কিংবা স্লিপ প্যারালিসিসের মতো সমস্যা আগে খুব প্রচলত ছিল না। ইদানীং তরুণদের মধ্যে এই প্রবণতা ভীষণ দেখা যায়। চিকিৎসকেরা বলছেন, ঘুমের চরিত্র, সময় এবং ধরন বদলে যাওয়াতেই এই ধরনের সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ঘুমোলেই নাক ডাকেন? ছবি: সংগৃহীত।

৩) মুভমেন্ট ডিজ়অর্ডার:

এক জায়গায় চুপ করে বসে থাকতে পারেন না। আর যদি বসে থাকতেই হয় তা হলে সমানে দুই পা নাচিয়ে চলেন। না হলে কেমন যেন অস্বস্তি হয়। চিকিৎসকেরা বলছেন এই ‘রেস্টলেস লেগ সিন্ড্রোম’ কিন্তু পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে হতে পারে।

৪) সার্কাডিয়ান রিদ্‌ম ডিজ়অর্ডার:

দিনের বেলা বাদুড়ের মতো ঘুমোনো আর রাতে পেঁচার মতো জেগে থাকা। আগেও যে এমনটা হত না তা নয়। পরীক্ষার আগে রাত জেগে পড়াশোনা করতেন অনেকেই। কিংবা অসুস্থ কারও জন্য রাতে জেগে থাকতেই হত। কিন্তু সে তো হাতেগোনা কয়েক দিন। কিন্তু তরুণ প্রজন্ম বিশেষ কোনও কারণ ছাড়াই রাতে জেগে থাকার অভ্যাস রপ্ত করে ফেলেছে। এ যেন রীতিমতো ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই অভ্যাসের ফলে শরীরে নিজস্ব যে ঘড়ি তার ছন্দপতন হচ্ছে। আবার, এক দেশ থেকে অন্য দেশে গেলেও কিন্তু সার্কাডিয়ান রিদ্‌ম নষ্ট হয়। ফলে সারা দিন ক্লান্ত লাগে। কোনও কাজেই মন বসে না।

যত তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যান না কেন, সকালে কিছুতেই চোখ খোলে না? ছবি: সংগৃহীত।

৫) অতিরিক্ত ঘুম:

ডাকনামের পাশাপাশি বাড়িতে ‘কুম্ভকর্ণ’ বলেও বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। এক বার ঘুমিয়ে পড়লে আর কোনও দিকে জ্ঞান থাকে। যত তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যান না কেন, সকালে কিছুতেই চোখ খোলে না। আপাত ভাবে মনে হতেই পারে এমনটা হওয়ার কারণ ক্লান্তি। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, কিছু ক্ষেত্রে তা স্নায়ুর জটিল রোগের উপসর্গও বটে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে ‘নারকোলেপ্সি’ বলা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement