পাট শাকের হরেক গুণ ছবি: সংগৃহীত
পাট শাক বাংলার অন্যতম প্রধান একটি শাক। গ্রামাঞ্চলে পাট শাক নাইল্যা শাক নামেও পরিচিত। শোনা যায় মিশরের রানী ক্লিওপেট্রা নাকি ত্বক ভাল রাখার জন্য পাট পাতা খেতেন। তবে সেই পাট পাতা মূলত তোষা বা বগী পাট থেকে পাওয়া যেত। বাংলাতে এই পাটের প্রচলন থাকলেও খাদ্যগুণে অল্প হলেও এগিয়ে থাকবে বাংলার দেশি পাট শাকই।
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
১। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে: পাট পাতায় প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকে। পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ফাইবার অত্যন্ত কার্যকর। বিশেষত, ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে পরিপাকের সমস্যা দূর হয় এবং মল সুগঠিত হয়। সুবিধা হয় মলত্যাগ করতেও। ফলে দূর হতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য।
২। প্রদাহ কমাতে: পাট পাতায় থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাট। এই ধরনের স্নেহ পদার্থ দেহে প্রদাহ হ্রাস করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি পাট শাকে ‘লাইকোপিন’ নামক এক প্রকারের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে যা জারণ প্রক্রিয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ কোষকে পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করে।
৩। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে: পাট শাকে থাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। পাশাপাশি ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টও বটে, যা মানসিক চাপ, দূষণ ও কোষের জারণ প্রক্রিয়ার ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাস করে।
৪। চোখ ও ত্বকের যত্নে: পাট শাকে থাকে ভিটামিন এ। চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এই ভিটামিনের জুড়ি মেলা ভার। পাশাপাশি ত্বকের ‘এপিথেলিয়াল’ কোষ সতেজ রাখতেও ভিটামিন এ খুবই জরুরি।
৫। ‘রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম’ নিরাময়ে: এই রোগে আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি অনবরত পা নাড়াতে থাকেন। দেহে আয়রনের অভাব এই রোগেটির অন্যতম কারণ। এই রোগ নিরাময়ে অনেকেই ঘরোয়া টোটকা হিসাবে পাট পাতা খাওয়ার পরামর্শ দেন। পাট পাতায় প্রায় ২.৭৩ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। যা মানবদেহের দৈনিক আয়রনের চাহিদার প্রায় এক তৃতীয়াংশ।
তবে যে কোনও শাক পাতা খাওয়ার সময় অ্যালার্জি সম্পর্কে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। পাট পাতা বা পাট শাকও তার ব্যতিক্রম নয়। যদি পাট পাতা খেলে শরীরে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় তবে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।