দুই রোগের দাওয়াই যখন একটি কসরত। ছবি: সংগৃহীত।
অনেকেরই ধারণা, জিমে গিয়ে ভারী ওজন তোলা অথবা ট্রেডমিলে দৌড়ে ঘাম ঝরানোই আদতে শরীরচর্চা। কিন্তু শরীরের গড়ন ধরে রাখা, বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলার একমাত্র উপায় শুধু জিম নয়। জিমে না গিয়েও নানা ধরনের কসরত করে শরীর চাঙ্গা রাখা যায়। হাঁটা, জগিং, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা তার মধ্যে অন্যতম। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার অভ্যাস শরীরের শক্তি বৃদ্ধি, মাংসপেশির গঠন এবং ভারসাম্য দৃঢ় করতে খুবই কার্যকর। বেশি ক্যালোরি ঝরানো এবং পেশির টোনিংয়ে সাহায্য করে এই কসরত। অনেকেই কাজের চাপে জিমে যাওয়ার সময় পান না। তাঁদের জন্য সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা ভাল শরীরচর্চা হতে পারে। লিফ্টের বদলে দিনে কয়েক বার সিঁড়ি ব্যবহার করলে হ্যামস্ট্রিংয়ের জোর বাড়ে। হাঁটুর মাংসপেশি মজবুত হয়। জানুন আর কী কী উপকার মেলে এই কসরত করলে?
১) সমতল ভূমিতে দৌড়নো কিংবা হাঁটার চেয়ে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার সময় শরীরের মাংসপেশিগুলি বেশি সক্রিয় থাকে। সমতলে হাঁটার সময় শুধু মাত্র পায়ের পেশিই সক্রিয় থাকে। তবে সিঁড়িতে চড়ার সময় আপনার গ্লুটস, কোয়াডস এবং হ্যামস্ট্রিং-এর পেশি একসঙ্গে কাজ করে। মেদমুক্ত পেশির জন্য এটি খুব কার্যকর একটি কসরত।
২) দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবিটিসে ভুগলে এই ব্যায়াম নিয়মিত করে উপকার পেতে পারেন। ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধের পাশাপাশি কসরতেও নজর দিতে হবে।
৩) যাঁরা মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন, তাঁরাও রোজ খানিকটা সময় বার করে সিড়ি দিয়ে ওঠানামা করুন। রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হলে মস্তিষ্কেও রক্ত ঠিকঠাক পৌঁছয়। ফলে মাইগ্রেনের মতো সমস্যা থেকে রেহাই মেলে।
৪) সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলে হৃদ্যন্ত্র ভাল থাকে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও এই ব্যায়াম উপকারী। এই কসরতের ফলে ধমনীতে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয় এবং হৃদ্স্পন্দন স্বাভাবিক থাকে।
সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: সংগৃহীত।
৫) সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয়। রক্ত সঞ্চালন ভাল হলে হরমোন গ্রন্থি থেকে ভাল হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে। যার ফলে মানসিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। মনমেজাজও ভাল থাকে।
মানতে হবে সঠিক নিয়ম
সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার সময় আপনার ভঙ্গিমা যেন ঠিক থাকে। মেরুদণ্ড সোজা রাখুন, সামনের দিকে ঝুঁকে পড়বেন না। শুরুতেই তাড়াহুড়ো নয়। ধীরে ধারে শুরু করুন এবং পরে সময়সীমা বৃদ্ধি করুন। এই কসরতের জন্য সঠিক স্পোর্টস শু-এর প্রয়োজন। যে কোনও জুতো পরে এই কসরত করলে পায়ে টান ধরা বা চোট লাগার আশঙ্কা থেকে যায়। যদি হাঁটাচলায় সমস্যা বা বাতের সমস্যা থাকে তবে এই কসরত করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।