ছবি: প্রতীকী
হিমসাগরের মরসুম প্রায় শেষ হতে চলল। তবে ল্যাংড়া, চৌসা, আম্রপালি, গোলাপখাস, ফজলি, ক্ষীরমন, লক্ষ্মণভোগ, মল্লিকার সময় এখনও আছে। আম খেয়ে তার আঁটি ফেলে দেওয়াই দস্তুর। আঁটির গুরুত্ব এতটাই কম যে, অবাঞ্ছিত বা অপ্রয়োজনীয় কোনও ব্যক্তির উদ্দেশ্যেও এই বিশেষণ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ফল হিসাবে আম যেমন উপকারী, তেমন আঁটিরও কিন্তু অনেক গুণ রয়েছে। তাই ফেলে দেওয়ার আগে জেনে নিন আঁটি শরীরে কোন কোন উপকারে লাগে।
১) প্রোটিন
প্রোটিনের পরিমাণ বেশি না থাকলেও বিভিন্ন প্রকার অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে আমের আঁটিতে। ‘লিউসিন’, ‘ভ্যালিন’ এবং ‘লাইসিন’-এর উপস্থিতি আমের আঁটিতে প্রোটিনের গুরুত্বকে স্বয়ং সম্পূর্ণ করে তুলেছে। যাঁরা মাছ, মাংস, ডিম খেতে পছন্দ করেন না, তাঁদের শরীরে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের জোগান দিতে পারে আমের আঁটি।
২) অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট
‘পলিফেনল’, ‘ফাইটোস্টেরল’-এর মতো অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে আঁটিতে। এই বীজে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং প্রোটিন বিভিন্ন প্রসাধনী তৈরিতে কাজে লাগে।
৩) স্বাস্থ্যকর ফ্যাট
আমের আঁটিতে ‘আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড’-এর পরিমাণ বেশি এবং ‘ট্রান্স ফ্যাট’ প্রায় নেই বললেই চলে। এই স্বাস্থ্যকর ফ্যাট হার্ট ভাল রাখতে সাহায্য করে।
ছবি: প্রতীকী
৪) প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক
খাবার থেকে বিষক্রিয়া বা কোনও সংক্রমণ হলে আমের আঁটির গুঁড়ো খাওয়া যেতে পারে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, আমের আঁটিতে অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল যৌগ থাকায় এই ধরনের সমস্যা দূর করতে পারে। আয়ুর্বেদেও আমের আঁটির গুঁড়োর ব্যবহার রয়েছে।
৫) হজমে সহায়ক
আমের আঁটিতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকায় তা খাবার হজম করতেও সাহায্য করে। পরিমিত পরিমাণে আমের আঁটি দীর্ঘ দিন ধরে খেতে থাকলে, তা বিপাকহার উন্নত করতে সাহায্য করে। ফলে ওজন ঝরানোর পিছনেও আঁটির হাত রয়েছে, এ কথা বলাই যায়।
কী ভাবে খাবেন আমের আঁটি?
আমের আঁটি রান্নার কোনও উপকরণ হিসাবে নয়, বরং মুখশুদ্ধি হিসেবে তা ব্যবহার করা যায়।
আমের আঁটি দিয়ে মুখশুদ্ধি তৈরি করবেন কী ভাবে?
আম খাওয়ার পর পড়ে থাকা আঁটিগুলিকে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। শুকনো আঁটিগুলিকে এ বার প্রেশার কুকারে ভাল করে সেদ্ধ করে নিন। তার পর আঁটির গায়ের শক্ত খোলা ছাড়িয়ে, ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। ক়ড়াইতে বিটনুন এবং ঘি দিয়ে নাড়াচাড়া করে নিন। কাচের শিশিতে ভরে ফ্রিজে রেখে দিন।