Weight Loss Tips

স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েও ওজন কমছে না? ৩টি প্রশ্ন করুন নিজেকে! হজমের সমস্যাও কারণ হতে পারে

মাসের পর মাস স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েও ওজন কমছে না! যে পোশাকটি সাধ করে কিনে রেখেছেন রোগা হলে পরবেন বলে, সেটি এখনও ততটাই আঁটেসাঁটে। ধৈর্য ধরে অস্থির হয়ে আপনি হয়তো ভাবছেন কেন অঙ্ক মিলছে না? উত্তর নিজেকেই খুঁজতে হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:২১
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

নিয়ম মেনে প্রতি দিন স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া করছেন। বাইরের তেল-মশলা খাচ্ছেন না। রাশ টেনেছেন ভাজাভুজি খাবারেও। শরীর ভাল রাখার জন্য যে সমস্ত খাবারদাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন পুষ্টিবিদেরা, যেমন বাদাম, দানাশস্য, বীজশস্য, ফাইবার— সেই সবও খাচ্ছেন রোজ। অথচ কোনও লাভ হচ্ছে না। ওজন যেমন ছিল তেমনই আছে। যে পোশাকটি সাধ করে কিনে রেখেছেন রোগা হলে পরবেন বলে, সেটি এখনও ততটাই আঁটেসাঁটে। মাসের পর মাস ধৈর্য ধরে অস্থির আপনি ভাবছেন কেন অঙ্ক মিলছে না? পুষ্টিবিদ অঞ্জলি মুখোপাধ্যায় বলছেন, সেই প্রশ্নের উত্তর না হাতরে বরং নিজেকে তিনটি প্রশ্ন করুন। কারণ, সব ঠিক থাকলেও অঙ্কের সিঁড়ি ভুল হলে কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফল মিলবে না।

Advertisement

কী কী প্রশ্ন করবেন?

ওজন ঝরানোর জন্য খাওয়াদাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ আনা সবার আগে জরুরি বলে পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা। বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ার পাশাপাশি ক্যালোরি মেপে খাওয়ার কথাও বলেন। পাশাপাশি, খাবারে নিয়ন্ত্রণ আনতে গিয়ে যাতে শরীরে পুষ্টির কোনও অভাব না হয়, সে জন্য খাদ্যতালিকায় স্বাস্থ্যকর খাবারও রাখতে বলেন তাঁরা। তবে শুধু ওটুকুই মাথায় রাখলে হবে না। আরও কয়েকটি বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি।

Advertisement

ছবি: সংগৃহীত।

১। কতটা পরিমাণে খাচ্ছেন?

স্বাস্থ্যকর খাবার মানেই যত খুশি, তত খাওয়া নয়। পুষ্টিবিদ অঞ্জলি বলছেন, ‘‘ওজন কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর ক্যালোরি খাওয়ার পরামর্শ দিই আমরা। ময়দার বদলে কাঠবাদামের আটা, সাদা তেলের বদলে ঘি, বিভিন্ন ধরনের বাদাম, বীজ শস্য, অ্যাভোকাডো, কিশমিশ, এমনকি খেজুরও খেতে বলা হয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে স্বাস্থ্যকর হলেও এগুলির প্রত্যেকটিরই ক্যালোরি কম নয়।’’ অর্থাৎ, স্বাস্থ্যকর খাবার খেলেও তা ক্যালোরি মেপেই খেতে হবে। বেশি ঘি, বেশি অ্যাভোকাডো, বাদাম, খেজুর খেলে তাতে শরীরে অনেক বেশি ক্যালোরি যাবে। সেই ক্যালোরি দৈনিক প্রয়োজনের বেশি হলে বা না ঝরালে ওজন কমার বদলে বাড়বে। তাই পুষ্টিবিদের স্বাস্থ্যকর খাবারও অল্প পরিমাণে খান।

২। মানসিক চাপে থাকছেন কি?

মানসিক অবসাদ অনেক সময়েই ওজন বৃদ্ধির একটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, এক-আধ দিনের মানসিক চাপ প্রত্যেকের জীবনেই থাকে। কিন্তু মানসিক চাপের সমস্যা যদি নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়ায়, তবে তার প্রভাব পড়বে শরীরেও। অঞ্জলির কথায়, ‘‘মানসিক চাপ শরীরে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যা পেটে চর্বি জমার একটি অন্যতম কারণ। তাই ওজন কমাতে চাইলে আগে নিজের মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখার দিকে নজর দিন। তাতে কাজ বেশি হবে।’’

ছবি: সংগৃহীত।

৩। হাইপোথাইরয়েডিজ়ম নেই তো?

থাইরয়েড হরমোন সঠিক পরিমাণে নির্গত না হলে, অর্থাৎ শরীরে যতটা প্রয়োজন তা না মিটলে, তা থেকেও শরীরে মেদ জমতে না পারে। অঞ্জলি বলছেন, ‘‘ওই সমস্যাকে বলা হয় হাইপোথাইরয়েডিজ়ম। যা অনেক সময়ে রক্ত পরীক্ষাতেও ধরা পড়ে না।’’ তা হলে ওই সমস্যা আছে কি না বুঝবেন কী করে? পুষ্টিবিদের পরামর্শ, ‘‘সব নিয়ম মেনেও ওজন না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।’’ রোগীর পুরনো মেডিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্ট এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার রেকর্ড দেখে তিনিই বিষয়টি বলতে পারবেন। প্রয়োজন মতো পরীক্ষাও করাতে পারেন। সাধারণত, হাইপোথাইরয়েডিজ়মের কিছু উপসর্গ দেখে বোঝা যেতে পারে। যেমন, ক্লান্তিবোধ, কোষ্ঠকাঠিন্য, ওজন বৃদ্ধি, চুল পড়া, ত্বকে শুষ্ক ভাব, পেশিতে ব্যথা, গলার স্বর বদলে যাওয়া, মহিলাদের ক্ষেত্রে অনিয়মিত ঋতুচক্র ইত্যাদি। তবে ওই সব উপসর্গ প্রকট না হয়েও হাইপোথাইরয়েডিজ়মের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই উচিত।

আরও একটি বিষয়ে নজর দেওয়া জরুরি!

তিনটি প্রশ্নের পাশাপাশি আরও একটি বিষয়ে নজর দিতে বলছেন পুষ্টিবিদ। অঞ্জলি বলছেন, ‘‘সবার আগে দেখতে হবে বিপাকের স্বাস্থ্য ভাল আছে কি না। কারণ তার উপর নির্ভর করবে হজম কেমন হচ্ছে।’’ খাবার হজমের শক্তি ঠিক না হলে কিন্তু কোনও খাবারই কাঙ্ক্ষিত ফল দেবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement