ছবি: সংগৃহীত।
হাঁটলে শরীর ভাল থাকে, এ ব্যাপারে কোনও দ্বিধা নেই। কিন্তু কতটা হাঁটলে শরীরে কী কী প্রভাব পড়তে পারে, তা জানেন কি? সবার রুটিন সমান নয়। সবার শারীরিক ক্ষমতাও সমান নয়। হাঁটার জন্য কেউ ১৫ মিনিট সময় বার করতে পারেন। কেউ বা রোজ ২ কিলোমিটার হাঁটতে পারেন জোরকদমে। কেউ বা সেটুকুও পারেন না। কিন্তু সুস্থ থাকতে হলে দৈনন্দিন রুটিনে হাঁটাহাঁটি রাখাটা জরুরি বলছে, কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। তারা বলছে, যে ডায়াবিটিস ভারতে একটা বড় সমস্যা তাকে অনেকটাই দূরে রাখা যাবে রোজ প্রতি দিন নিয়ম মেনে হাঁটলে।
আর প্রতি দিন যদি দু’ কিলোমিটার হাঁটা যায়? দিল্লির সিকে বিড়লা হাসপাতালের ফিজ়িওথেরাপি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক সুরেন্দ্র পাল সিংহ বলছেন, ‘‘প্রতি দিন নিয়ম করে হাঁটা ভাল থাকার একটা অন্যতম চাবিকাঠি হতে পারে। যদি প্রত্যেক দিন যে কোনও সময় দু’ কিলোমিটার ব্রিস্ক ওয়াক বা জোরে হাঁটা যায় তবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। অস্থিসন্ধি পিচ্ছিল থাকবে। ভাল থাকবে হার্ট এবং ফুসফুসের স্বাস্থ্যও।’’
ল্যানসেট পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণা আবার বলছে, রোজ যদি ১৫ মিনিট করেও হাঁটা যায়, তাহলেও আয়ু ৩ বছর পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে ব্রিটেনের লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা আবার বলছে দ্রুত গতিতে রোজ কয়েক কিলোমিটার করে হাঁটলে সর্বোচ্চ ১৬ বছর পর্যন্ত বাড়তে পারে আয়ু! বিষয়টি নিয়ে যদিও আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন লেস্টারের গবেষকদের একাংশ। তবে বাকিদের যুক্তি বা প্রমাণ অগ্রাহ্য করার মতো নয়।
লেস্টরের গবেষকেরা বলছেন, তাঁরা ৪,০৫,০০০ জনের উপর গবেষণা করে দেখেছেন ব্রিস্ক ওয়াকিং আয়ু বৃদ্ধি করে। কী ভাবে বোঝা গিয়েছে সেটা? গবেষকেরা জানাচ্ছেন, বার্ধক্যের সঙ্গে কোষে অবস্থিত ক্রোমোজ়োমের একটা সম্পর্ক রয়েছে। দেখা গিয়েছে ওই ক্রোমোজ়োমের বাহু, যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘টেলোমেয়ার’, সেগুলি যত দিন আকারে দীর্ঘকায় থাকে তত দিন দূরে থাকে বার্ধক্য। আবার টেলোমেয়ার যত ক্ষয় হতে থাকে ততই কমতে থাকে কোষ বিভাজন। দুর্বল হয় পেশির গঠন, দেখা দিতে থাকে বার্ধক্য। লেস্টারের গবেষকেরা জানিয়েছেন, গবেষণার সময় তাঁরা দেখেছেন, যাঁরা নিয়মিত দ্রুত গতিতে হেঁটেছেন, তাঁদের টেলোমেয়ারের দৈর্ঘ্য বাকিদের তুলনায় বেশি।
তবে আয়ু বাড়ুক বা না বাড়ুক, হাঁটলে যে ভাল থাকা যাবে সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই কোনও।